রাজধানীর তুরাগে বেপরোয়াগামী একটি প্রাইভেট কারের চাপায় আব্দুল মান্নান (৬৪) নামের এক পথচারী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় উত্তেজিত জনতা গাড়িটি ভাঙচুর করে এবং কিশোর চালককে (১৭) পিটিয়ে আহত করে। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং চালককে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।
তুরাগের ফুলবাড়িয়া সিরাজ মার্কেট এলাকায় আজ শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) বেলা ২টার দিকে আব্দুল মান্নানকে গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনা ঘটে।
দুর্ঘটনার পর আহত মান্নানকে উদ্ধার করে উত্তরার কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায় স্থানীয়রা। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এলাকাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালিয়ে যাওয়ার সময় ওই প্রাইভেট কারটি প্রথমে এক ব্যক্তিকে চাপা দেয়। আশপাশের লোকজন ওই গাড়িটির চালককে থামতে বললে চালক পালানোর চেষ্টা করে।
ওই সময় উত্তেজিত জনতা গাড়িটি ধাওয়া করলে চালক গাড়ির গতি আরও বাড়িয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় গাড়ির ধাক্কায় আরও কয়েকজন আহত হয়। পরবর্তী সময় উত্তরা ১০ নম্বর সেক্টরের ১২ নম্বর সড়কে জনতার ধাওয়ায় গাড়িটি আটক করে ভাঙচুর চালানো হয় এবং চালককে মারধর করা হয়। একপর্যায়ে চালক পাশের একটি বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেয়। তখন খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে চালককে উদ্ধার করে আটক করে।
নিহত আব্দুল মান্নান ভোলা সদর উপজেলার ভেদুরিয়া গ্রামের মৃত সেকান্দর সরদারের ছেলে। বর্তমানে তিনি তুরাগের রানাভোলা এলাকার রাশেদুল আলমের বাড়িতে নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন।
আটক চালকের বাড়ি ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলায়। বর্তমানে সে তুরাগে থাকে।
ডিএমপির উত্তরা জোনের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) মো. সাদ্দাম হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জুমার নামাজের পরপরই প্রোবক্স গাড়ির চালক একজন পথচারীকে চাপা দিলে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান। পরে স্থানীয় মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে গাড়ি ভাঙচুর ও হালকা মারধর করে। আমরা পুলিশ ও আর্মি ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে চালককে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসার জন্য পাঠাই।’
পালিয়ে যাওয়ার সময় কয়েকজনকে চাপা দেওয়ার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘চালক প্রথমে একজনকে চাপা দেয়। পরে তাকে জনগণ ধাওয়া করলে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টার সময় আরও দু-তিনজনকে চাপা দিয়ে আহত করে। তবে তাদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।’ এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
তুরাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সাদিকুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে গণধোলাই খাওয়া চালককে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। চিকিৎসা শেষে তাকে থানায় নিয়ে যাওয়া হবে।’