ঢাকা: করোনাভাইরাস শনাক্তে র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট কার্যক্রম শুরু করেছে বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক। শনিবার (২৪ এপ্রিল) সকালে ঢাকায় ১৫টি এবং চট্টগ্রামে একটি বুথের মাধ্যমে এই কার্যক্রম শুরু হয়। সংস্থাটি জানিয়েছে, করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি বিবেচনায় উদ্বোধনের আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই তারা কার্যক্রম শুরু করেছেন।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, শনি থেকে বৃহস্পতিবার প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট কার্যক্রম চলবে। প্রতিটি বুথে প্রতিদিন প্রায় ১৫০টি করে নমুনা পরীক্ষা সম্ভব হবে। করোনা পরীক্ষার জন্য অবশ্যই প্রত্যেক সেবাগ্রহীতাকে ব্র্যাকের ওয়েবসাইটে গিয়ে নিবন্ধন করতে হবে এবং ডাক বিভাগের ডিজিটাল ফিন্যানসিয়াল সার্ভিস ‘নগদ’-এর ‘বিল পে’ অপশনের মাধ্যমে সরকার নির্ধারিত ১০০ টাকা ফি পরিশোধ করতে হবে ।
ব্র্যাকের করোনা টেস্টের বুথ সমন্বয়ক ডা. মিরানা জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, করোনাভাইরাস শনাক্তে তিন সপ্তাহ আগে র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট চালুর অনুমোদন পেয়েছে ব্র্যাক। করোনা শনাক্তে অ্যান্টিজেন টেস্ট খুবই কার্যকরী, রেজাল্টও পাওয়া যায় আধা ঘণ্টার মধ্যে। যাদের করোনা পজিটিভ আসবে তারা আধা ঘণ্টা পরেই রেজাল্ট জানতে পারবে। আর যাদের নেগেটিভ আসবে তাদের নমুনা আরটি-পিসিআর টেস্ট করা হবে।
ব্র্যাক সূত্র বলছে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সার্বিক তত্ত্বাবধানে শুরু হয়েছে এ কার্যক্রম। পর্যায়ক্রমে ঢাকায় সর্বমোট ৩২টি এবং চট্টগ্রামে চারটি বুথের মাধ্যমে অধিক সংক্রমণ এলাকায় কার্যক্রমটি বিস্তৃত করার পরিকল্পনা রয়েছে।
ঢাকায় ১৫টি বুথের মধ্যে একটি হচ্ছে মগবাজার মধুবাগের আসাদুজ্জামান খান কামাল কমিউনিটি সেন্টার। আজ সকালে সেখানে র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট করার জন্য অনেক মানুষকে অপেক্ষমাণ থাকতে দেখা যায়। মধুবাগের বাসিন্দা রোজলিন রঞ্জিতা (৬৫) জানান, সর্দি-কাশিসহ তার করোনার কিছু উপসর্গ রয়েছে। র্যাপিড অ্যান্টিজেনে টেস্ট করলে ৩০ মিনিটের মধ্যে রেজাল্ট পাওয়া যায় জেনে তিনি এখানে এসেছেন।
ব্র্যাকের স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও জনসংখ্যা কর্মসূচির পরিচালক মোর্শেদা চৌধুরী বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার কমিয়ে রাখার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পাশাপাশি লক্ষণযুক্ত ব্যক্তিদের করোনাভাইরাস পরীক্ষার মাধ্যমে তাদের আলাদা করে আইসোলেশনে নেওয়ার কোনো বিকল্প নেই। আশা করছি, র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট জনগণের দোরগোড়ায় নিয়ে আসা এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য একটি ভূমিকা পালন করবে, যাতে খুব দ্রুত রোগ শনাক্ত করা যাবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাপত্র দেওয়া যাবে।
২০২০ সালের মার্চ মাস থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে বুথের (কিওস্ক) মাধ্যমে আরটি-পিসিআর টেস্টের জন্য নমুনা সংগ্রহ করে আসছে ব্র্যাক। বাংলাদেশে বর্তমানে আরটি-পিসিআর পদ্ধতিতে করোনাভাইরাসের বেশিরভাগ নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে ফল পেতে অন্তত ২৪ ঘণ্টা কিংবা তার বেশি সময় লাগে। অ্যান্টিজেন টেস্টের মাধ্যমে নমুনা পরীক্ষায় সময় লাগবে সর্বোচ্চ ৩০ মিনিট।
ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে নমুনা পরীক্ষার জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে সহায়তা করতে সারাদেশে বর্তমানে ৪১টি বুথে নমুনা সংগ্রহ করছে ব্র্যাক। আরটি-পিসিআর পদ্ধতিতে সরকার নির্ধারিত ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষার পর ফলাফল দেওয়া হয়।