হোম > সারা দেশ > ঢাকা

‘ইসলাম কখনো অন্য ধর্মের ওপর আঘাত সমর্থন করে না’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

মাইজভান্ডার দরবার শরীফের বর্তমান ইমাম হজরত শাহ্সূফী সাইয়্যিদ সাইফুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী (মা. জি. আ.) এর নেতৃত্বে লাখো নবী প্রেমী জনতার উচ্ছ্বাসমুখর অংশগ্রহণে রাজধানীতে জশনে জুলুস অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বুধবার সকালে ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন থেকে জশনে জুলুসে ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.) শুরু হয়ে প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে এসে শান্তি মহাসমাবেশে মিলিত হয়।

আঞ্জুমানে রহমানিয়া মইনীয়া মাইজভান্ডারির ব্যবস্থাপনায় আজিমুশ্শান জশনে জুলুসে অংশগ্রহণকারীরা কলেমা খচিত পতাকা, জাতীয় পতাকা ও নানা প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন বহন করে নারায়ে তকবির, নারায়ে রেসালত স্লোগানে স্লোগানে রাজধানীর রাজপথ মুখরিত করে তোলে। ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের শান্তি মহাসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন পার্লামেন্ট অব ওয়ার্ল্ড সূফীজ প্রেসিডেন্ট হজরত শাহ্সূফী সাইয়্যিদ সাইফুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী (মা. জি. আ.)।

হজরত শাহ্সূফী সাইয়্যিদ সাইফুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী বলেন, 'মন্দিরে পবিত্র আল কোরআনের অবমাননা নিঃসন্দেহে নিন্দনীয় কাজ। কিন্তু এটাকে কেন্দ্র করে হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির, বাড়ি-ঘরে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ ইসলামের আদর্শ হতে পারে না। ইসলাম শান্তির ধর্ম। ইসলাম কখনো অন্য ধর্মের ওপর আঘাত সমর্থন করে না। আমাদের মনে রাখতে হবে অমুসলিমরা মুসলমানদের নিকট আমানত স্বরূপ। আর এটাই হলো প্রিয় নবীর শিক্ষা। মানুষে মানুষে সৌহার্দ্য আর সম্প্রীতির শিক্ষাই ইসলামের আসল সৌন্দর্য। ইসলামের নামে যারা সহিংসতায় জড়ায় তারা প্রকৃত পক্ষে ইসলামের মর্মার্থ ও মূল কথা বুঝতে ব্যর্থ।'

এ সময় মন্দিরে কোরআন অবমাননা করে দেশকে অস্থিতিশীল করার কুচক্রী মহলের ষড়যন্ত্র কিনা তা খতিয়ে দেখারও অনুরোধ জানান তিনি। সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দেওয়া সরকারের দায়িত্ব বলে তিনি উল্লেখ করেন। অনেকেই ওত পেতে আছে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার জন্য; তিনি কাউকে এই সুযোগ না দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। ঈদে মিলাদুন্নবীকে (দ.) রাষ্ট্রীয়ভাবে উদ্‌যাপনের নির্দেশ দেওয়ায় তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানান।

ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান এমপি। তিনি বলেন, 'দেশে যারা ধর্মের নাম করে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা সৃষ্টি করছে, তাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে। ধর্মীয় উন্মাদনা না ছড়িয়ে মানুষকে শান্তিতে থাকতে দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।'

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, 'ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.) উপলক্ষে জশনে জুলুস ইসলামি সংস্কৃতির আজ অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। একজন সত্যিকার মুসলমান কখনো অন্যের ক্ষতি করতে ও সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদে জড়াতে পারে না। আউলিয়া সাধক ও দরবেশদের এই দেশে জঙ্গিবাদীদের ঠাঁই হবে না। সাম্প্রদায়িক উন্মাদনা ছড়িয়ে কোনো লাভ হবে না। এ দেশের মানুষ অসাম্প্রদায়িক ও উদার। সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে সর্বশক্তি দিয়ে আমাদের রুখে দিতে হবে।' 

ড. হাছান মাহমুদ আরও বলেন, 'সরকার ১২ রবিউল আওয়ালকে সরকারি ছুটি হিসেবে ঘোষণা করেছে। ইসলামের মূল মর্মবাণী হলো মানুষের মধ্যে সৌহার্দ্য বৃদ্ধি করা। যারা এই মূল মর্মবাণী ধারণ করে, তাঁরা কখনো ইসলামের নামে অন্য কারও ওপর আক্রমণ করে না। আজ ইসলামের মূল থেকে সরে গিয়ে ইসলামের ভুল ব্যাখ্যা দেয়। যুবক তরুণদের বিপথে নিয়ে যায়। অলি আউলিয়াদের মাধ্যমে ভালোবাসায় এই জনপদে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। যারা এদের বিরুদ্ধে কথা বলে, সহিংসতা সৃষ্টি করে, অন্য ধর্মের প্রতি হামলা করে; তারা ফিতনা সৃষ্টিকারী। আমাদের এই দেশের স্বাধীনতার জন্য মুসলমান-হিন্দু একসঙ্গে যুদ্ধ করেছে। এই দেশ সবার। আজ যারা বিভ্রান্ত ছড়িয়ে যাচ্ছে, পবিত্র ধর্ম ইসলামের বিরুদ্ধে ফিতনা ছড়িয়ে যাচ্ছে, তাদের আমাদের কঠোর হাতে দমন করতে হবে। নিজেদের মধ্যে ভেদাভেদ না রেখে, নিজেদের মধ্যে ফিতনা না রটিয়ে আমাদের একসঙ্গে থাকতে হবে।'

আয়োজনে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, 'এক শ্রেণির মানুষ বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটিয়ে সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টি করতে চায়। আমাদের নবী এত উদার, এত সহনশীল, যদি তার জীবন বিশ্লেষণ করি, তবে এমন আর কাউকে পাওয়া যাবে না। আর সেই ধর্মের মানুষকে মিথ্যাচার করে এভাবে হেয় করা কেউ মেনে নেবে না। আমাদের সবাইকে সজাগ থাকতে হবে যেন কেউ আমাদের মাঝে সহিংসতা সৃষ্টি করে বিদ্বেষ বাড়াতে না পারে। আমাদের কাজ-কর্ম, আচার আচরণের মধ্যমে যেন সবাই আমাদের আলাদা করে চিনতে পারে, সেই অনুযায়ী আমাদের সকল মুসলিমের কাজ করা উচিত।'

শান্তি মহাসমাবেশে মাওলানা মুফতি বাকি বিল্লাহ আল্-আযহারীর পরিচালনায় অতিথি ও আলোচক ছিলেন নুরুল আমীন রুহুর এমপি, আঞ্জুমান কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আলমগীর খান, হজরত সৈয়দ মইনুদ্দীন আহমদ মাইজভান্ডারি ট্রাস্টের মহাসচিব কাজী মুহাম্মদ মহসীন চৌধুরী, বাংলাদেশে নিযুক্ত ইন্দোনেশিয়া অ্যাম্বাসির মিনিস্টার কাউন্সেলর হিদায়াত আৎজেহ, মইনীয়া যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি শাহজাদা সাইয়্যিদ মেহবুব-এ-মইনুদ্দীন আল্-হাসানী, সিনিয়র সহসভাপতি শাহ্জাদা সাইয়্যিদ হাসনাইন-এ-মইনুদ্দীন আল্-হাসানী, হজরত মাওলানা রুহুল আমিন ভূঁইয়া চাঁদপুরী প্রমুখ।

অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে বিশ্বের নির্যাতিত-নিপীড়িত মানুষের মুক্তি এবং বিশ্ববাসীর ওপর আল্লাহর রহমত কামনায় মোনাজাত পরিচালনা করেন শাহ্সূফী মাওলানা সাইয়্যিদ সাইফুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী (মা. জি. আ.)।

শহীদ জিয়ার কবরের পূর্ব পাশে খোঁড়া হচ্ছে নতুন কবর

খালেদা জিয়ার জানাজা: যেসব পথে নিয়ন্ত্রিত থাকবে যান চলাচল

রাষ্ট্রীয় শোক: ঢাকায় ৩ দিন আতশবাজি, পটকা ফোটানো নিষিদ্ধ

খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে বাড়ানো হলো মেট্রোরেলের ট্রিপ

হাদি হত্যা মামলা: সিবিউন-সঞ্জয়ের তৃতীয় দফায় রিমান্ড, ফয়সাল নামে আরও একজন রিমান্ডে

খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে জাবিতে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী ফোরামের কালো ব্যাজ ধারণ

রাজধানীর রামপুরায় অটোরিকশার ধাক্কায় বৃদ্ধের মৃত্যু

গয়েশ্বর চন্দ্রের আসনে বিএনপির বিদ্রোহী তিন বড় নেতাসহ ১৬ প্রার্থী, শক্ত লড়াইয়ের আভাস

খালেদা জিয়ার মৃত্যুর খবর শুনে এভারকেয়ারের সামনে ভিড়, পুলিশের ব্যারিকেড

হারিয়ে যাওয়া কনাই নদ উদ্ধার উদ্‌যাপন