বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) সুলতান শাহরিয়ার রশিদের মেয়ের জামাই ফুয়াদ জামানকে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের এক মামলায় সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আস-শামস জগলুল হোসেন এই রায় ঘোষণা করেন।
ট্রাইব্যুনাল কারাদণ্ডের পাশাপাশি ফুয়াদ জামানকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন। জরিমানা পরিশোধে ব্যর্থ হলে তাঁকে আরও এক মাস কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে বলেও রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে।
রায়ের আগে ফুয়াদ জামানকে কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। তাঁর উপস্থিতিতে রায় ঘোষণা করা হয়। রায় শেষে আবার তাঁকে কারাগারে ফেরত পাঠানো হয়।
রায়ে ট্রাইব্যুনাল বলেন, আসামির বিরুদ্ধে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে কটূক্তি করা ও তাঁর খুনিদের প্রশংসা করার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাঁকে কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হলো। তবে তাঁর গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে যত দিন কারাগারে আছেন, তত দিন সাজার মেয়াদ থেকে বাদ যাবে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের সাইবার নিরাপত্তা ও অপরাধ দমন বিভাগ ফুয়াদ জামানকে ২০১৮ সালের ১২ সেপ্টেম্বর রাত ১০টায় রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। তাঁকে ধানমন্ডি থানার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর কাছ থেকে মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপ জব্দ করা হয়।
ফেসবুকে উসকানিমূলক পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে ফুয়াদের বিরুদ্ধে ধানমন্ডি থানায় মামলাটি করেন বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের আহছানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্য মোহাম্মদ নাজমুল হাসান পিয়াস। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ (২) ধারায় মামলাটি করা হয় ২০১৮ সালের ২৩ আগস্ট।
মামলার এজাহারে বলা হয়, বঙ্গবন্ধুর নৃশংস হত্যাকাণ্ড নিয়ে কটূক্তি করে এবং আদালতের রায়ে প্রমাণিত হত্যাকারীদের প্রকাশ্যে সমর্থন জানিয়ে ওই বছরের ১৫ আগস্ট ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন ফুয়াদ। তাতে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের অপরাধের পক্ষে প্রশংসা এবং খুনিদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন তিনি। ফুয়াদ তাঁর পোস্টে বঙ্গবন্ধু হত্যাকে ভালো কাজ বলেও আখ্যায়িত করেন। বিষয়টি জাতির পিতার প্রতি চরম অসম্মান ও মানহানিকর এবং উসকানিমূলক।
প্রসঙ্গত, ফুয়াদ জামানের স্ত্রী শেহনাজ রশিদ খান লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খানের মেয়ে। ২০১০ সালের জানুয়ারিতে পুরান ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খানের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়।