রাজধানীর দক্ষিণখানে চাঁদা না দেওয়ায় যুবলীগের নেতা শাহজাহান ডিলারকে (৪৫) এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। তাঁকে খুন করা হতে পারে—এমন আশঙ্কার কথা স্ত্রীকে জানিয়েছিলেন তিনি। হুমকি পেয়ে থানায় অভিযোগও দিয়েছিলেন শাহজাহান। নিহত শাহজাহানের পরিবার ও পুলিশ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
রাজধানীর দক্ষিণখানের নদ্দাপাড়ার তালতলা মোড়ে গত সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে যুবলীগ নেতা শাহজাহানকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। ঘটনাস্থল থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি চাপাতি ও হত্যাকারীদের একটি মাথার ক্যাপ জব্দ করে পুলিশ। শাহজাহান আশকোনা কমিউনিটি পুলিশের সভাপতি এবং ইন্টারনেট ও ডিশ ব্যবসায়ী ছিলেন।
এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পর গতকাল মঙ্গলবার মধ্যরাতে নিহত শাহজাহানের স্ত্রী ঝর্ণা আক্তার বাদী হয়ে ডিএমপির দক্ষিণখান থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। ওই মামলায় অজ্ঞাতনামা পাঁচ থেকে ছয়জনকে আসামি করা হয়েছে।
শাহজাহানের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে তাঁর কাছ থেকে চাঁদা দাবি করে আসছিল চাঁদাবাজেরা। একপর্যায়ে চাঁদা না পেয়ে তাঁর ডিশ ও ইন্টারনেটের ব্যবসা দখল করতে তাঁকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
এদিকে নিহত শাহজাহানের চাচাতো ভাই সোহেল রানা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের দুই দিন আগেও শাহজাহান ভাই ভাবিকে বলেছিলেন, আমি হয়তো বেশি দিন থাকব না। তুমি আমার ছেলেমেয়েদের দেখে রেখো।’ তিনি বলেন, ‘শাহজাহান ভাই যুবলীগের বিমানবন্দর থানার সভাপতি প্রার্থী ছিলেন। ২০২৪ সালের পর থেকে তাঁর কাছ সন্ত্রাসীরা চাঁদা দাবি করে আসছিল। তাঁর কিছু ব্যবসা-বাণিজ্যও তারা দখল করে নিয়েছিল।’
সোহেল জানান, নদ্দাপাড়া এলাকায় শাহজাহানের একটি ফ্ল্যাট কেনা ছিল। রাতে তিনি ওই ফ্ল্যাটে গিয়ে থাকতেন।
আরেক চাচাতো ভাই নাহিদ পারভেজ আজকের পত্রিকাকে জানান, ৫ আগস্টের পর চাঁদার জন্য একাধিকবার শাহজাহানকে হুমকি দেওয়া হয়েছিল। পরে তিনি থানায় লিখিত অভিযোগও করেছিলেন। এ ছাড়া বহুবার তৎকালীন ওসিকে জানানো হয়েছিল।
এদিকে হত্যাকাণ্ডের দুই দিন পেরিয়ে গেলেও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। তবে গ্রেপ্তার করতে অভিযান চলছে বলে জানিয়েছেন দক্ষিণখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শরিফুল ইসলাম।
হত্যাকাণ্ডের কারণ ও কারা হত্যা করেছে—এমন প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, ‘নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা মামলা করেছেন। আমরা আসামিদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান চালাচ্ছি। গ্রেপ্তারের পর বিস্তারিত বলা যাবে। তদন্তাধীন বিষয়ে কিছু বলতে চাচ্ছি না।’
চাঁদা দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি বলেন, ‘আমরা পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। তারাও এমনটা জানিয়েছে।’