হোম > সারা দেশ > ফরিদপুর

৭২ বছর ধরে হেঁটে বই-ক্যালেন্ডার বিক্রি করছেন রহিম শেখ

ফরিদপুর প্রতিনিধি

ক্যালেন্ডার হাতে রহিম শেখ। ছবি: আজকের পত্রিকা

আজ থেকে ৭২ বছর আগের কথা। সময়টা তখন ১৯৫২ সাল। তখন থেকেই অভাবের তাড়নায় ৯ বছর বয়সে ঢাকার রাস্তায় ঘুরে ঘুরে বই ও ক্যালেন্ডার বিক্রি শুরু করেন রহিম শেখ। বর্তমানে তাঁর বয়স ৮১ বছর। কিন্তু সেই পথচলা আজও থামেনি তাঁর। একসময় অজানা বসতে চলে আসেন ফরিদপুরে। সেই থেকে দীর্ঘ ৪০ বছর ফরিদপুরের আনাচে-কানাচে হেঁটেই বই, ক্যালেন্ডার, বর্ষপঞ্জি, সরকারি ছুটির তালিকা, নামাজ শিক্ষার বই, আদর্শ লিপিসহ নানা ধরনের বই বিক্রি করে আসছেন। সংসারও পেতেছেন এখানে।

আজ বুধবার দুপুরে ফরিদপুর সদর উপজেলা পরিষদ চত্বরে কথা হয় তাঁর সঙ্গে। এ সময় তিনি জানান, তাঁর জীবনের উত্থান-পতন, সুখ-দুঃখ ও পথে পথে ঘুরে বই বিক্রির গল্প।

জেলা সদরের কানাইপুরে এক নারীকে বিয়ে করে সরকারি জায়গায় অস্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন তিনি। বর্তমানে স্ত্রী, চার ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে তাঁর। মেয়েদের বিয়ে দিয়েছেন। ছেলেরাও কর্মমুখী। গত দুই বছর যাবৎ স্থায়ী বসবাসের জায়গাও হয়েছে। সরকার থেকে জায়গা ও ঘর পেয়ে বাস করছেন কানাইপুর ইউনিয়নের কোষাগোপালপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পে। জন্মস্থান সম্পর্কেও জানা নেই তাঁর।

প্রতিদিন সকালে কানাইপুর থেকে বই-ক্যালেন্ডার বিক্রি শুরু করে হেঁটেই চলে আসেন শহরে। এরপর দিনভর ঘুরে ঘুরে বই বিক্রি করেন। এতে প্রতিদিন ৮০০ টাকা থেকে ১ হাজার টাকা বিক্রি করেন বলে জানান। এতে প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা আয় করেন।

তবে আগের তুলনায় কম বিক্রি হচ্ছে বলে জানান তিনি। রহিম শেখ বলেন, ‘শুরু থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত ভালোই বিক্রি হতো এসব বই ও ক্যালেন্ডার। কিন্তু ২০০০ সালের পর থেকে ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে বেচাকেনা। আগের থেকে এহন বেচাকেনা অনেক কমে গ্যাছে।’

কারণ হিসেবে তিনি মোবাইল ও ইন্টারনেটকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, ‘বর্তমানে মোবাইল আসায় এগুলোর চাহিদা কইম্যা (কমে) গ্যাছে। অনেকে আমাকে বলে যে ক্যালেন্ডার, নামাজ শিক্ষার বই মোবাইলেই পাইত্যাছি আমরা। এ কারণেই আমার বেচাকেনা একটু কমই হয়। তবে বর্তমানে অনেকে ঘরে এবং অফিসে টানানোর জন্য শখ করেই কিনে থাকেন।’

পুরোনো দিনের কথা উল্লেখ করে এই বৃদ্ধ বলেন, ‘আগেকার দিনে মানুষ লাইনে দাঁড়ায় থাইক্যা এগুলো কিনত। ওই সময় এগুলোর পাশাপাশি নায়ক-নায়িকাদের ছবি বিক্রি হতো, বিভিন্ন ছবির (সিনেমার) পোস্টার ও গল্পের বইও কেনার জন্য মানুষ পাগল হয়ে যেত। সেই দিন এহন আর নাই, মানুষ বই পড়াও কমাইয়্যা দিছে।’

এই পেশা দিন দিন বিলুপ্তির পথে বলে মনে করেন ফরিদপুরের স্থানীয় পত্রিকা দৈনিক বাঙ্গালী সময়ের প্রকাশক ও সম্পাদক মো. সেলিম মোল্যা। তিনি বলেন, ‘আমার সাংবাদিকতার শুরুটা ঢাকা থেকে। তখন ঢাকার শহরে হকারদের বই বিক্রি ছিল জমজমাট। মানুষ তখন আগ্রহ হয়ে বই ও বিভিন্ন গল্পের বই, বর্ষপঞ্জি খুঁজে নিত। আজ ইন্টারনেটের যুগে মানুষের বই পড়ার অভ্যাসটা কমে গিয়েছে। তবে, এই পেশা আমাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির একটি অংশ। এই পেশাকে টিকিয়ে রাখার দায়িত্ব আমাদেরই।’

সখীপুরে নিখোঁজের ৭ ঘণ্টা পর বন থেকে উদ্ধার শিশুটি মারা গেছে

ধানমন্ডিতে ককটেল বিস্ফোরণ

ঋণমুক্তির স্বপ্ন নিয়ে ঢাকায় এসেছিলেন সিয়াম, নিভে গেলেন হাতবোমায়

হাদি হত্যা: আদালতে ঘটনার যে বর্ণনা দিলেন প্রত্যক্ষদর্শী সেই রিকশাচালক

নারায়ণগঞ্জে কোটি টাকা মূল্যের নকল স্ট্যাম্প জব্দ, আটক ২

ফরিদপুর জিলা স্কুলের ১৮৫ বছর পূর্তি, জমকালো আয়োজনে নবীন-প্রবীণের মিলনমেলা

ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে তীব্র যানজট

গজারিয়ায় পুলিশের টহল গাড়িতে কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কা, সার্জেন্টসহ আহত দুই

রাজবাড়ীতে চাঁদাবাজির সময় গণপিটুনিতে সম্রাট বাহিনীর প্রধান নিহত

সুজনের গোলটেবিলে পর্যবেক্ষণ: ভোটের খরচ না কমলে দুর্নীতিও কমবে না