বিভিন্ন অজুহাতে বেতন কাটার প্রতিবাদ, প্রতিবাদ করলে চাকরিচ্যুতি এবং ন্যায্য বেতনের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন পোশাকশ্রমিকেরা। রাজধানীর উত্তরার কামারপাড়া এলাকায় আবদুল্লাহপুর-আশুলিয়া মহাসড়কে আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এই বিক্ষোভ শুরু হয়। তা চলে বেলা ২টা পর্যন্ত। এতে তীব্র যানজটের কারণে দুর্ভোগে পড়ে পথচারীরা।
তুরাগের নিশাতনগর এলাকার গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারিং অ্যান্ড অ্যাসেম্বলি লিমিটেড নামের পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা এ বিক্ষোভ করেন।
কারখানাটির কয়েক শ শ্রমিক এই বিক্ষোভে অংশ নেন। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন ছিল। শ্রমিকেরা জানান, গার্মেন্টসটি কাপালি গার্মেন্টস নামে পরিচিত। সেখানে প্রায় ১ হাজার ২০০ শ্রমিক কাজ করেন। তাঁদের দাবি, তাঁরা যে বেতনে কাজ করেন, সেই বেতন ঠিকমতো পান না। নানা অজুহাতে মালিকপক্ষ তা কেটে নেয়। কেউ প্রতিবাদ করলেই বিনা নোটিশে চাকরিচ্যুত করা হয়। তাই সহজে কেউ প্রতিবাদ করারও সাহস পান না।
পোশাক কারখানার মেশিন অপারেটর কল্পনা বেগম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা টাকার জন্য রাতদিন কষ্ট করে গার্মেন্টসে পরিশ্রম করি; অথচ ন্যায্য বেতন পাই না। যেটা পাই, তার থেকেও নানান বাহানায় টাকা কেটে নেওয়া হয়। কেউ কিছু বললেই চাকরিচ্যুত করা হয়।’ তিনি বলেন, ‘আমরা বাধ্য হয়ে রাস্তায় আন্দোলনে নেমেছি। শান্তিপ্রিয় আন্দোলনে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা নেই। আমাদের দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব।’
এদিকে বিক্ষোভের কারণে গতকাল এই সড়কে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। শ্রমিকদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে আবদুল্লাহপুর-আশুলিয়া মহাসড়কের হাউস বিল্ডিং থেকে কামারপাড়া এবং আশুলিয়া থেকে কামারপাড়া পর্যন্ত সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া কামারপাড়া থেকে টঙ্গী সংযোগ সড়কেও বিক্ষোভকালে যান চলাচল বন্ধ থাকে।
এরপর পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সেখানে গিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেন। পুলিশের পক্ষ থেকে শ্রমিকদের জানানো হয়, এই সংকটের সমাধান হবে। তাঁরা মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছেন। শ্রমিকদের দাবিদাওয়া মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলে বেলা ২টার দিকে মহাসড়ক ছেড়ে দেন শ্রমিকেরা।
এ বিষয়ে ডিএমপির তুরাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তুরাগের গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারিং অ্যান্ড অ্যাসেম্বলি লিমিটেড নামের পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা কিছুসংখ্যক গার্মেন্টস শ্রমিক ছাঁটাই করার প্রতিবাদে কামারপাড়া পুলিশ বক্সের সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছিলেন। পরে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ শ্রমিক প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে গার্মেন্টস মালিকের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করে।’ তিনি বলেন, শ্রমিকদের দাবিদাওয়া মেনে নেওয়ার পর বেলা ২টার দিকে তাঁরা মহাসড়ক ছেড়ে চলে যান। শ্রমিকদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। শ্রমিকেরা রাস্তা ছেড়ে দেওয়ার পর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।