আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হলো চরমোনাই দরবারের তিন দিনব্যাপী বার্ষিক ওয়াজ মাহফিল। শনিবার (২৯ নভেম্বর) সকাল ৯টায় শুরু হওয়া আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম। প্রায় ২০ মিনিট স্থায়ী মোনাজাতে লক্ষাধিক মুসল্লি অংশগ্রহণ করেন।
মোনাজাতে বিশ্বের সকল মুসলিম, বিশেষ করে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নিহত ও আহত ব্যক্তিদের জন্য দোয়া করা হয়। সেই সঙ্গে দেশকে চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী ও মামলাবাজদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করার জন্য আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করা হয়। বাংলাদেশসহ বিশ্বের নিপীড়িত মানুষের জন্যও দোয়া করা হয়েছে।
মোনাজাতের আগে সমাপনী বয়ানে চরমোনাই পীর বলেন, ‘দুনিয়ার মোহই সকল পাপের উৎস। ব্যক্তিজীবনে আর্থিক অনিয়ম থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের যত দুর্নীতি, ফ্যাসিবাদ, যা কিছু ঘটে, তার কারণ এই দুনিয়ার মোহ। অথচ দুনিয়া খুবই তুচ্ছ একটা জিনিস। হায়াত শেষ হলে পৃথিবীর কোনো সম্পদ কারও কাজে লাগে না। তাই দুনিয়ার মোহ ত্যাগ করতে হবে।’
চরমোনাই পীর বলেন, ‘মানুষ আজ আল্লাহকে ভুলে নাফরমানি করছে অহরহ। অথচ একজন মানুষ কবরের পথযাত্রী। সুতরাং তাকওয়া বা আল্লাহর ভয় অর্জনের মাধ্যমে মহান রবের সন্তুষ্টি নিয়ে কবরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিতে হবে। আল্লাহর ভয় যার অন্তরে নেই, ওই মানুষ এমনকি আলেম, মুফতি ও পীরের কোনো মূল্য নেই।’
চরমোনাই পীর আরও বলেন, ‘নিজেকে নিজে ছোট মনে করতে হবে। আমিত্ব ভাব ও তাকাব্বুরি পরিত্যাগ করতে হবে। হিংসাবিদ্বেষ পরিত্যাগ করতে হবে। ঘোড়ার মুখে যেভাবে লাগাম থাকে, সেভাবে রাগের মুখে লাগাম লাগাতে হবে। সকাল-সন্ধ্যা জিকিরের মাধ্যমে কলব পরিশুদ্ধ করতে হবে। গিবতের মতো গুনাহ থেকে বেঁচে থাকতে হবে। পরিবারের সবাইকে দ্বীন শিক্ষা দিয়ে দ্বীনের পাবন্দি করতে হবে। পরিবারে খাস পর্দা জারি করতে হবে। সকল প্রকার নেশাজাত দ্রব্য থেকে বেঁচে থাকতে হবে। আল্লহওয়ালাদের কিতাব পড়তে হবে। সাপ্তাহিক হালকায়ে জিকির ও তালিমে নিয়মিত অংশ নিতে হবে। সহিহ-শুদ্ধভাবে কোরআন তিলাওয়াত করতে হবে।’