বরগুনার আমতলী উপজেলার উত্তর কালামপুর (কালিবাড়ী) নূরানী বালিকা দাখিল মাদ্রাসার জমিতে রোপণ করা বিভিন্ন প্রজাতির গাছ ব্যবস্থাপনা কমিটির অনুমোদন ছাড়া মাদ্রাসার সুপার মাওলানা মো. আলাউদ্দিন সিকদার বিক্রি করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আজ মঙ্গলবার মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা এ বি এম রফিকুল্লাহ এই অভিযোগ করেন এবং এ বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
জানা গেছে, আমতলী উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের কালিবাড়ী গ্রামে ১৯৮৫ সালে উত্তর কালামপুর (কালিবাড়ী) নূরানী বালিকা দাখিল মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে ওই মাদ্রাসার জমিতে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রোপণ করা হয়। রোপণ করা গাছ ইতিমধ্যে অনেক বড় গাছে পরিণত হয়েছে। ওই গাছ থেকে গত ১০ দিন আগে মাদ্রাসা সুপার আমতলী উপজেলা ওলামা লীগ সভাপতি মাওলানা আলাউদ্দিন সিকদার ব্যবস্থাপনা কমিটির অনুমোদন না নিয়ে ১২টি গাছ বিক্রি করে দিয়েছেন। গত তিন দিন আগে গাছগুলো ব্যবসায়ী রুবেল মিয়া কাটা শুরু করেন। ওই সময় স্থানীয় লোকজন বাধা দিলে তাঁদের বাধা উপেক্ষা করে গাছ কেটে নেন।
স্থানীয় বাসিন্দা সুকুমার চন্দ্র শীল ও আব্দুল হাই সরদার জানান, সুপার কাউকে না জানিয়ে মাদ্রাসার গাছ বিক্রি করে দিয়েছেন। তাঁরা গাছ ব্যবসায়ী রুবেল মিয়াকে গাছ কাটতে বাধা দিলেও তিনি তা শোনেননি।
গাছ ব্যবসায়ী রুবেল মিয়া বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘সুপার মাওলানা আলাউদ্দিন সিকদার গাছ বিক্রি করেছেন। তাই ওই গাছ আমি কেটেছি।’
মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা এ বি এম রফিকুল্লাহ অভিযোগ করেন, সুপার আলাউদ্দিন সিকদার মাদ্রাসাটিকে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেছেন। কমিটির কাউকে অবহিত না করেই টাকা আত্মসাৎ করতে সুপার গাছ বিক্রি করে দিয়েছেন। তিনি তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
মাদ্রাসার সুপার মাওলানা আলাউদ্দিন সিকদার গাছ বিক্রির কথা স্বীকার করে বলেন, ‘মাদ্রাসার প্রয়োজনে গাছ বিক্রি করেছি।’ তবে সভাপতির অনুমোদন ছাড়া গাছ বিক্রির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ফোনের সংযোগ কেটে দেন।
এ প্রসঙ্গে আমতলী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জিহাদ হাসান বলেন, কমিটির অনুমোদন ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনো কিছুই শিক্ষক-কর্মচারী বিক্রি করতে পারেন না। যদি এমন ঘটনা ঘটে থাকে, তবে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও মাদ্রাসার ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মো. রোকনুজ্জামান খাঁন বলেন, মাদ্রাসার গাছ বিক্রির কোনো অনুমোদন দেওয়া হয়নি। সুপার কীভাবে গাছ বিক্রি করেছেন, তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।