রাজধানীর তুরাগের দিয়াবাড়ি থেকে এক দিনের ব্যবধানে আরও এক কিশোরের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) বেলা দেড়টার দিকে উত্তরা ১৫ নম্বর সেক্টরের দিয়াবাড়ির ৩ নম্বর ব্রিজসংলগ্ন লেক থেকে অর্ধগলিত মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ।
এর আগে, গতকাল সোমবার (১৭ নভেম্বর) সন্ধ্যার দিকে দিয়াবাড়ির ঝোপ থেকে শান্ত (১৬) নামের এক কিশোরের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয়। লাশ উদ্ধারের সময় তার পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ। পরে জানিয়েছে, সে কাফরুলে পরিবারের সঙ্গে থাকত। এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় হত্যা মামলা করা হয়েছে।
এদিকে, আজ উদ্ধার হওয়া মৃত কিশোরের নাম আতিক হাসান (১৩)। সে চাঁদপুর সদরের ইব্রাহিমপুর গ্রামের বাবুল হোসেনের ছেলে। বর্তমানে সে শাহবাগের হাতিরপুলের মোতালেব প্লাজা এলাকায় থাকত।
র্যাব ও পুলিশ জানিয়েছে, ১৪ নভেম্বর শাহবাগ এলাকা থেকে আতিক নিখোঁজ হয়। সেদিনই পরিবার শাহবাগ থানায় নিখোঁজ জিডি করে। জিডির সূত্র ধরে র্যাব-৩ ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং এ ঘটনায় চারজনকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে র্যাবের সহযোগিতায় পুলিশ লেক থেকে আজ মরদেহটি উদ্ধার করে। আটক ব্যক্তিরা জানিয়েছে, তারা ওই কিশোরকে অপহরণের পর পরিবারের থেকে মুক্তিপণ দাবি করেছিল।
এ বিষয়ে ডিএমপির উত্তরা জোনের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) সাদ্দাম হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শাহবাগ থানা এলাকা থেকে ১৪ নভেম্বর আতিককে অপহরণ করা হয়েছিল। পরে মুক্তিপণের দাবিতে তাকে হত্যা করা হয়েছে।’
নিহতের শরীরের আঘাতের চিহ্ন আছে কি না, এ বিষয়ে জানতে চাইলে এসি সাদ্দাম বলেন, ‘আতিকের শরীর অনেকটা গলে গেছে। চার দিন থেকে লাশটি পানিতে পড়ে ছিল। তাই তেমন একটা বোঝা যাচ্ছে না।’
এ ঘটনায় আটক প্রসঙ্গে এসি সাদ্দাম বলেন, ‘আমরা জানতে পারছি, র্যাব-৩ চারজনকে আটক করেছে। যখন জিডি হয়েছিল, তখন থেকেই র্যাব কাজ করতে ছিল। তারপর যখন আসামিদের আটক করা হয়, তখন তারা র্যাবকে জানিয়েছে, দিয়াবাড়ির লেকে তার লাশ ফেলে দেওয়া হয়েছে।’
এ ঘটনায় মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানিয়েছেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।
আইনানুগ ব্যবস্থা কোন থানায় নেওয়া হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘কোনো একটি ঘটনা যে স্থানে শুরু হয়, সেই থানায় গ্রহণ করা যায়। আবার যেখানে শেষ হয়, সেখানেও করা হয়। এ বিষয়ে দুই থানা-পুলিশ আলোচনা করে যেখানে ভালো হবে, সেখানেই মামলা হবে।’
মুক্তিপণ দাবি ও আটককৃতদের পরিচয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে র্যাব-৩-এর ভারপ্রাপ্ত মিডিয়া কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এ ঘটনায় আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। মিডিয়ায় বলার মতো এখনো সময় হয়নি।’