লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় রবি মৌসুমে চাহিদামতো সার না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ শত শত কৃষক আবারও বুড়িমারী স্থলবন্দর–লালমনিরহাট মহাসড়ক অবরোধ করেছেন। এ সময় তাঁরা সারের দাবিতে বিক্ষোভ করেন এবং কৃষি কর্মকর্তা ও সার ডিলারের অপসারণ চান।
আজ রোববার বেলা ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত উপজেলার মেডিকেল মোড় এলাকায় বিসিআইসির পরিবেশক (ডিলার) মেসার্স ওয়াছেক খানের প্রতিষ্ঠানের সামনে এই অবরোধ হয়। প্রায় দু ঘণ্টা সড়ক অবরোধের পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ঘটনাস্থলে গিয়ে আশ্বাস দিলে কৃষকেরা অবরোধ তুলে নেন।
জানা গেছে, রবি মৌসুমে এখন এলাকার প্রধান ফসল ভুট্টা চাষাবাদ চলছে। পাশাপাশি অন্যান্য ফসলেরও আবাদ শুরু হয়েছে। কিন্তু চাষাবাদের শুরু থেকেই কৃষকেরা চাহিদা অনুযায়ী সার পাচ্ছেন না। আজ সকালে সিন্দুর্না এলাকার কৃষকদের জন্য নির্ধারিত ডিলার মেসার্স ওয়াছেক খানের দোকানে সার বিক্রির খবর ছড়িয়ে পড়লে কয়েক শ কৃষক সেখানে জড়ো হন।
কিছুক্ষণ পরই কৃষকেরা সার পাওয়ার জন্য দীর্ঘ সারি ধরেন। একপর্যায়ে ভিড় ঠেলে একযোগে সবাই সার নিতে চাইলে ডিলারের প্রতিনিধি হিমশিম খান এবং সার বিক্রি বন্ধ করে দেন। এতে ক্ষুব্ধ কৃষকেরা ডিলার ও উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকেন। তাঁরা ডিলার ও উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার অপসারণ দাবি করেন।
প্রায় দুই ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধে উভয় পাশে শত শত যানবাহন আটকে পড়ে দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে ইউএনও শামীম মিঞা ও সিন্দুর্না ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফুল ইসলাম ঘটনাস্থলে গিয়ে কৃষকদের আশ্বাস দিলে তাঁরা অবরোধ তুলে নেন।
এর আগে গত ৩০ নভেম্বর একই উপজেলার অডিটরিয়াম চত্বর এলাকায় মেসার্স মোর্শেদ সার ঘরের সামনে সার না পাওয়ায় মহাসড়ক অবরোধ করেছিলেন কৃষকেরা। সিন্দুর্না গ্রামের কৃষক এরশাদুল হক বলেন, ‘সারের জন্য চাষাবাদে সমস্যা হচ্ছে। অনেক হয়রানির পরও সার পাওয়া যায় না। তাই সবাই মিলে সড়ক অবরোধ করেছি।’
একই গ্রামের মাহফুজ ইসলাম বলেন, ‘ডিলারের কাছে গেলে বলে সার নাই। অনেক দিন ধরে ঘুরছি। আজ লাইন ধরেছিলাম, পরে শুনি সার নাকি নেই। কৃষি কর্মকর্তারা বলে সারের সংকট নেই, তাহলে আমরা সার পাই না কেন? ডিলাররা কৃষকদের না দিয়ে বেশি দামে বাইরে বিক্রি করে। ডিলার ও কৃষি কর্মকর্তাদের অপসারণ চাই।’
মেসার্স ওয়াছেক সার ঘরের মালিককে পাওয়া না গেলেও তাঁর প্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি মন্তব্য করতে রাজি হননি। হাতীবান্ধা উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নুর ইসলাম বলেন, সারের কোনো সংকট নেই। সরকারি বরাদ্দ আছে—সব কৃষকই সার পাবেন। অনেক কৃষক একসঙ্গে সার নিতে গিয়ে এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
এ বিষয়ে ইউএনও শামীম মিঞা বলেন, বিক্ষুব্ধ কৃষকেরা কিছু সময় সড়ক অবরোধ করেছিলেন। একসঙ্গে অনেকে সার নিতে গিয়ে না পাওয়ায় এ সমস্যা হয়। সবাইকে বুঝিয়ে বলা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সবাই সার পাবেন।