লক্ষ্মীপুরে বিএনপি নেতা আবুল কালাম জহির (৫০) হত্যাকাণ্ডের ২২ ঘণ্টা পার হলেও কোনো মামলা হয়নি। তবে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে। নিহত ব্যক্তির লাশ ময়নাতদন্তের পর আজ রোববার জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
গতকাল শনিবার রাতে চন্দ্রগঞ্জের লতিফপুর (মোস্তফার দোকান) এলাকায় আবুল কালাম জহিরকে কুপিয়ে ও গুলি চালিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।
পরিবারের অভিযোগ, আবুল কালামের সঙ্গে ছাত্রদলের কর্মী কাউছার হোসেন ওরফে ছোট কাউছারের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ ছিল। এর জেরে কাউছারের লোকজন কালামকে খুন করেছে।
রাতে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, জেলা পুলিশ সুপার আকতার হোসেনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এ সময় এ্যানি বলেন, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান তিনি।
হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে চন্দ্রগঞ্জ থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. ইউসুফ ভূঁইয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আবুল কালাম জহির চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। কিছুদিন আগে ভোটে তিনি নির্বাচিত হন। তাঁকে পরিকল্পিতভাবে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয়। জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান তিনি।
এদিকে হত্যাকাণ্ডের পর অভিযুক্ত ছাত্রদল কাউছার হোসেন ‘বি কে বাদল’ নামের ফেসবুক আইডি থেকে ‘আউট’ লিখে একটি ভিডিও পোস্ট করেন। তিনি আজকের পত্রিকাকে জানান, ভিডিওটি তাঁর নিজস্ব ফেসবুক আইডি থেকে পোস্ট করা হয়েছে এবং এর সঙ্গে হত্যাকাণ্ডের কোনো সম্পর্ক নেই।
কাউছার আরও দাবি করেন, ঘটনার সময় তিনি লতিফপুর বাজারের মোস্তফার দোকানে ছিলেন এবং কালাম ভাই বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে বাজারে ঘোরাফেরা করেছেন।
অন্যদিকে নিহত আবুল কালামের স্ত্রী ফেরদৌসী আক্তার বলেন, ‘আমার স্বামী খুন হওয়ার পর কাউছারের পোস্ট করা ভিডিওটি কাকতালীয় নয়। এটি হত্যার ঘটনাকে ইঙ্গিত করেই করা হয়েছে।’
এ বিষয়ে চন্দ্রগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফয়েজুল আজীম বলেন, প্রাথমিক তদন্তে কাউছার ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাঁর ফেসবুক পোস্টও পুলিশের নজরে এসেছে।
পুলিশ ধারণা করছে, চার-পাঁচজন মিলে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করেছে। এদিকে লতিফপুর ও বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়।
আটক ব্যক্তিরা হলেন লতিফপুর এলাকার শাহ আলমের ছেলে ইমন হোসেন, মমিন উল্যাহর ছেলে আলমগীর হোসেন ও নুরুল আমিনের ছেলে হুসাইন কবির সেলিম।