হোম > সারা দেশ > কক্সবাজার

উখিয়া ও টেকনাফের ৭০ গ্রামের মানুষ পানিবন্দী, জলাবদ্ধতা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে

টেকনাফ (কক্সবাজার) সংবাদদাতা

টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধ কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার হ্নিলা ইউনিয়নের রঙ্গিখালী লামারপাড়া। ছবি: আজকের পত্রিকা

টানা বৃষ্টিতে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলার অন্তত ৭০ গ্রামের প্রায় ৬০ হাজার পরিবারের মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে উখিয়া উপজেলার ২০ গ্রাম এবং টেকনাফ উপজেলার ৫০ গ্রাম প্লাবিত হওয়ার তথ্য জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। এ ছাড়া উখিয়ার তিনটি রোহিঙ্গা ক্যাম্পেও জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।

কক্সবাজারে গত চার দিন ধরে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এর মধ্যে আজ সোমবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৩০ ঘণ্টায় ২২৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করার তথ্য জানিয়েছেন কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ মো. আব্দুল হান্নান।

আব্দুল হান্নান জানান, গতকাল রোববার সকাল ৬টা থেকে আজ সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ১৪৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২ পর্যন্ত আরও ৮০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। ভারী বৃষ্টি আরও কয়েক দিন অব্যাহত থাকবে।

টেকনাফের বিভিন্ন ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, টেকনাফে ভারী বৃষ্টিপাতে অন্তত ৫০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে কম হলেও ৫০ হাজার পরিবার বন্দী হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে হোয়াইক্যং ইউনিয়নে আটটি গ্রাম, হ্নীলা ইউনিয়নে ১২টি গ্রাম, টেকনাফ পৌরসভার সাতটি, টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ছয়টি, সাবরাং ইউনিয়নে সাতটি ও বাহারছড়া ইউনিয়নের ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

হ্নীলা ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী জানিয়েছেন, হ্নীলা ইউনিয়নের ১২টি গ্রামের ৪ হাজারের বেশি পরিবার পানিবন্দী রয়েছে। এসব গ্রাম হলো জালিয়াপাড়া, সাইটপাড়া, ফুলের ডেইল, আলী আকবরপাড়া, রঙ্গিখালী লামারপাড়া, আলীখালী, চৌধুরীপাড়া, পূর্ব পানখালী, মৌলভীবাজার, লামারপাড়া, ওয়াব্রাং, সুলিশপাড়া ও পূর্ব সিকদারপাড়া। গ্রামগুলোর চলাচলের রাস্তা পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

বৃষ্টিতে ডুবে রয়েছে সড়ক। আজ সোমবার টেকনাফ সদরের নতুন পল্লানপাড়ায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

টেকনাফ পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর আবদুল্লাহ মনির জানান, টেকনাফ পৌরসভার কলেজপাড়া, শীলবুনিয়াপাড়া, ডেইলপাড়া, জালিয়াপাড়া, খানকারডেইল, চৌধুরীপাড়া, কেকেপাড়ার মানুষ পানিবন্দী। পানিতে ডুবে রয়েছে টেকনাফ কলেজসহ অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও। পৌরসভার ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কিছু ঘরবাড়িসহ রাস্তা পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় যোগাযোগবিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে।

টেকনাফ সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেন, টেকনাফ সদরের ছয়টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এগুলো হলো মহেশখালীয়াপাড়া, নতুন পাল্লানপাড়া, তুলাতুলি, লেঙ্গুরবিল, খোনকারপাড়া, মাঠপাড়া ও রাজারছড়া, জাহাঁলিয়াপাড়া।

সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপের সাতটি গ্রামসহ ১০ গ্রাম এবং হোয়াইক্যং ইউনিয়নের লম্বা বিল, উলুবনিয়া, আমতলি, মিনাবাজার, উনচিপ্রাং, কাঞ্চনপাড়া, কুতুবদিয়াপাড়া, রইক্ষ্যং গ্রাম প্লাবিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন জনপ্রতিনিধিরা।

টেকনাফের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহেসান উদ্দিন বলেন, ‘ভারী বৃষ্টির কারণে কিছু গ্রামের মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। আমরা তাদের খোঁজখবর নিচ্ছি। পাশাপাশি পাহাড় ধসের শঙ্কাও রয়েছে। তাই ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের অন্যত্র সরে যেতে বলা হচ্ছে। এ জন্য আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে।’

অপরদিকে উখিয়ায় টানা চার দিন ধরে বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে সবজিখেত, বীজতলা ও পানের বরজ নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি গ্রামীণ রাস্তা চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।

বৃষ্টির পানিতে খেলাধুলায় মেতেছে কিশোরেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

উখিয়ার ইউএনও মোহাম্মদ কামরুল হোসেন চৌধুরী ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। এ সময় দ্রুত পানি নিষ্কাশন ও জলাবদ্ধতা নিরসনে ভরাট নালা পরিষ্কার করতে দেখা গেছে।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, টানা বৃষ্টির কারণে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা স্থবির হয়ে পড়েছে। পুকুরে পানি ঢুকে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ভেসে গেছে।

উখিয়ার উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মুস্তাক আহমদ আজকের পত্রিকাকে জানান, টানা বৃষ্টির কারণে এবার আমনের বীজতলা নষ্ট হয়েছে। হলদিয়া পালং ইউনিয়নের রুমখা চৌধুরীপাড়া, কুলালপাড়া, চরপাড়া, রত্না পালংয়ের পশ্চিম রত্না, সাদৃকাটা, জালিয়া পালং ইউনিয়নের নম্বরীপাড়া, পাইন্যাশিয়া, সোনাইছড়ি, সোনারপাড়ার রেজু মোহনা, মনখালী ছেপট খালী রাজা পালং ইউনিয়নের তুতুরবিল, পিনজিরকুল, মাছ কারিয়া, হরিণমারা হিজুলিয়া ও পালং ইউনিয়নে রহমতের বিল আঞ্জুমানপাড়া, ধামন খালীসহ নিচু এলাকার বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

এদিকে গতকাল রোববার রাতে থাইংখালী-মোছারখোলা সড়কে অতি বৃষ্টির কারণে গাছ ভেঙে পড়ে বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট সংযোগ এবং যাতায়াতব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

এ ছাড়া কুতুপালং ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য হেলাল উদ্দিন জানান, ভারী বৃষ্টির কারণে কাতুপালংয়ের তিনটি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।

উখিয়ার উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ কাউসার হোসেন বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ও ব্যক্তির নামের তালিকা তৈরি করার জন্য ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের বলা হয়েছে।

বাগেরহাটে ঘের থেকে মৎস্য ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার

২৪৬৭ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মীকে স্বাস্থ্যবিমার আওতায় আনল ডিএনসিসি

হাদি হত্যার বিচারের দাবিতে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ

রাজশাহীতে র‍্যাবের অভিযানে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার

ট্রাকের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত

হাদির হত্যার বিচারের দাবিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ

সিলেটে পরিত্যক্ত অবস্থায় অবিস্ফোরিত মর্টার শেল উদ্ধার

শাহবাগে ইনকিলাব মঞ্চের অবরোধ, বন্ধ যান চলাচল

বিএনপি থেকে পদত্যাগ করলেন সাবেক এমপি শাহিন, স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা

চাঁপাইনবাবগঞ্জে সীমান্ত দিয়ে ৫ জনকে ঠেলে পাঠাল বিএসএফ