এবারের পয়লা বৈশাখে শোভাযাত্রার আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’–এর মোটিফ বানিয়েছিল। তবে গতকাল শনিবার ভোরের দিকে সেটি আগুনে পুড়ে যায়।
ঘটনার পরপরই তদন্তে নামে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী আজ রোববার রমনা বটমূল পরিদর্শনের সময় সাংবাদিকদের বলেন, ‘ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনে আমরা প্রায় শেষ পর্যায়ে। খুব শিগগিরই, সম্ভবত শোভাযাত্রার আগেই একটি সুখবর দিতে পারব।’
তিনি আরও বলেন, ‘অপরাধী শনাক্তে প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার করা হচ্ছে। সিসিটিভি ফুটেজ, গোয়েন্দা তথ্য এবং অন্যান্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে অভিযুক্তকে চিহ্নিত করা হয়েছে। গ্রেপ্তারের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছি না।’
চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, ‘ফ্যাসিস্টের প্রতিকৃতি’ কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে নির্দেশ করে না। এটি একটি প্রতীকী শিল্পকর্ম, যা বিশ্বব্যাপী চলমান ফ্যাসিবাদ, নিপীড়ন ও দমননীতির বিরুদ্ধে প্রতিরোধের বার্তা দেয়। প্রতিবছরের মতো এবারও শোভাযাত্রার মূল থিম সমাজ ও সময়কে ঘিরেই তৈরি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে একজন শিক্ষক বলেন, ‘শিল্পের মাধ্যমে প্রতিবাদ নতুন কিছু নয়। কিন্তু শিল্পকে ধ্বংস করে প্রতিবাদের কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা একমাত্র বর্বরতা হিসেবেই বিবেচিত হবে।’
উল্লেখ্য, ইউনেসকো ঘোষিত ‘বিমূর্ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য’–এর তালিকাভুক্ত বাংলা নববর্ষের মঙ্গল শোভাযাত্রা কেবল বাংলাদেশের নয়, বরং বৈশ্বিক সংস্কৃতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হয়ে উঠেছে। প্রতি বছর চারুকলার শিক্ষার্থীরা এ আয়োজনের জন্য সমাজ সচেতন মুখোশ, মোটিফ ও নানা শিল্পকর্ম নির্মাণ করেন, যা ঢাকা শহরজুড়ে নববর্ষের উৎসবকে রঙিন করে তোলে।
সাম্প্রতিক এ ঘটনার পর রাজধানীর নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ডিএমপি।