বাংলাদেশের সব প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের স্বীকৃতির ও এমপিওভুক্ত করার দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। আজ সোমবার (১০ মার্চ) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ১৫ তম দিনের মতো তাঁরা এ কর্মসূচি পালন করেছেন।
দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় সমন্বয় পরিষদের সদস্যরা। কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের দুই শতাধিক শিক্ষক।
অবস্থান কর্মসূচিতে প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায়। কর্মসূচিতে ময়মনসিংহ থেকে আসা শিক্ষক হাফিজুল ইসলাম বলেন, ‘৮ বছর ধরে একটা প্রতিষ্ঠানে শ্রম দিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু সেটার বিনিময়ে আমরা কিছু পাইনি। এখন আমরা পরিবার নিয়ে অসহায় হয়ে গেছি। এমন একটা কর্মের সঙ্গে জড়িয়ে গেছি যে, ছাড়তেও পারছি না। এদিকে পরিবারের সদস্যদের জন্য ভালো কিছু করতেও পারছি না। সরকার যদি আমাদের দিকে একটু সদয় হয়, তাহলে সবার পরিবার বাঁচবে।’
নাটোর থেকে এসেছেন মোসলেম উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘আমরা স্কুলে পড়াই। কিন্তু পেটের দায়ে ঢাকার রাস্তায় এসে রাত কাটাতে হচ্ছে। আমরা নিজেদের অধিকার চাই শুধু।’
অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া শিক্ষিক আলেয়া বেগম বলেন, ‘আমরা ১৫ বছর ধরে বঞ্চিত হচ্ছি। সংসার একটু সচ্ছল করার লক্ষ্যে স্কুলে চাকরি শুরু করি। কিন্তু দিনের পর দিন শুধু পরিশ্রমই করে গেলাম; ফল কিছু পেলাম না। আমরা নিজেদের অধিকার আদায় না করে ঘরে ফিরব না।’
আন্দোলনকারী শিক্ষকেরা জানান, ২০১৯ সালের ২০ ডিসেম্বর সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়গুলোর স্বীকৃতি ও এমপিওর জন্য আবেদনের প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। প্রজ্ঞাপনের পরিপ্রেক্ষিতে ২৭৪১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আবেদন করে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় প্রাথমিক যাচাই-বাছাই শেষে ১৭৭২টি আবেদন গ্রহণ করে।
পরে বিশেষ শিক্ষা নীতিমালা ২০১৯-এর আলোকে জাতীয় স্বীকৃতি ও এমপিও কমিটি গঠন করে বিদ্যালয়গুলোকে ক, খ, এবং গ—এই তিন শ্রেণিতে বিভক্ত করে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় কার্যক্রম শুরু করে, যা অত্যন্ত ধীরগতির। ফলে সারা দেশের শিক্ষক-কর্মচারীরা অত্যন্ত মানবেতর জীবনযাপন করছেন এবং প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের শিক্ষাক্ষেত্রে বিরূপ প্রভাব পড়ছে।