হোম > সারা দেশ > পাবনা

প্রাণের ২৫০০ লিটার ভেজাল দুধ জব্দ, তিন কর্মকর্তার কারাদণ্ড

চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি 

পাবনার চাটমোহরে প্রাণের ভিলেজ মিল্ক কালেকশন সেন্টার থেকে বিপুল ভেজাল দুধ জব্দ করা হয়েছে। এ সময় দুধ সংগ্রহ, মজুত ও সরবরাহের দায়ে প্রাণ হাবের তিন কর্মকর্তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

একই সঙ্গে ভেজাল দুধ তৈরির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে থানায় সোপর্দ করা হয়।

আজ সোমবার (২১ জুলাই) সকাল থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত একটি গোয়েন্দা সংস্থার সহায়তায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুসা নাসের চৌধুরী উপজেলার ছাইকোলা ইউনিয়নের লাঙ্গলমোড়া গ্রামে ও ছাইকোলা চৌরাস্তায় প্রাণের ভিলেজ মিল্ক কালেকশন সেন্টারে অভিযান চালান।

এ সময় গোয়েন্দা সংস্থাটির ১৭ সদস্যের একটি টিম, পাবনার অতিরিক্ত নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক মোফাজ্জল হোসেন, উপজেলা নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক আসলাম হোসেন ও থানা-পুলিশ উপস্থিত ছিল।

ইউএনও ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুসা নাসের চৌধুরী সকালে উপজেলার ছাইকোলা ইউনিয়নের লাঙ্গলমোড়া গ্রামে ভেজাল দুধ তৈরিতে জড়িত ব্যক্তিদের বাড়িতে অভিযান চালান। এ সময় কয়েকজন পালিয়ে গেলেও এক নারীসহ ছয়জনকে আটক করা হয়। জব্দ করা হয় দুধ, তেল ও বিভিন্ন প্রকার কেমিক্যাল।

তাঁদের মধ্যে খলিলুর রহমানের ছেলে রুবেল হোসেন ভেজাল দুধ তৈরির সঙ্গে জড়িত থাকায় তাঁকে এক সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণ করানোর শর্তে খলিলুর রহমানকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

প্রাণের ভিলেজ মিল্ক কালেকশন সেন্টার। ছবি: আজকের পত্রিকা

রুবেলের বড় ভাই অ্যাডভোকেট এরশাদ আলী তাঁর দায়িত্ব নেন। অন্যদের নামে নিয়মিত মামলা রুজু করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

এরপর দুপুরে ইউএনও ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুসা নাসের চৌধুরী ছাইকোলা চৌরাস্তায় প্রাণের কালেকশন সেন্টারে অভিযান চালান। সেখানে তেল ও ডিটারজেন্টযুক্ত দুধ পাওয়া যায়। এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত সেন্টারে সংরক্ষিত প্রায় আড়াই হাজার লিটার দুধ জব্দ করে জনসম্মুখে বিনষ্ট করা হয়। ভেজাল দুধ সংগ্রহ, মজুত ও সরবরাহের দায়ে প্রাণ কোম্পানির এই সেন্টারের তিন কর্মকর্তাকে ছয় মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুসা নাসের চৌধুরী।

দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন এরিয়া ম্যানেজার পাবনার ফরিদপুর উপজেলার জন্তিহার গ্রামের শহিদুল সরকারের ছেলে শামসুল আলম (৩৬), সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার চক চিথুলিয়া গ্রামের মোজাম্মেল হকের ছেলে জহির রায়হান (২৭) ও পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার করমচা গ্রামের ফজলুল হকের ছেলে নাজমুল হোসাইন (৩৫)। তাঁদের জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

এ বিষয়ে ইউএনও ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুসা নাসের চৌধুরী আজকের পত্রিকা'কে বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এই অভিযান চালানো হয়। আমরা কয়েকজনকে আটক করেছি। তিনজনকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অন্যদের নামে নিয়মিত মামলা দেওয়া হয়েছে। ভেজাল দুধ তৈরির সঙ্গে জড়িত যারা পালিয়ে গেছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ বিষয়ে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল বলেন, ‘তিন-চার মাস আগে আমরা কিছু ব্যক্তির কাছ থেকে দুধ নেওয়া বন্ধ করে দিই। কারণ আমাদের নিজস্ব পরীক্ষায় তাঁদের সরবরাহ করা দুধে অসামঞ্জস্যতা খুঁজে পাই। এরপর থেকে ওই চক্র আমাদের বিরুদ্ধে লেগে ছিল। চক্রটি আমাদের বিপদে ফেলতে পরিকল্পিতভাবে এমন ঘটনা ঘটিয়েছে বলে আমরা ধারণা করছি। এ বিষয়ে আমাদের অনুসন্ধান চলমান রয়েছে।’

কামরুজ্জামান কামাল আরও বলেন, ‘ভোক্তাদের এ বিষয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই। আমরা চুক্তিভিত্তিক খামারিদের কাছ থেকে দুধ কেনার পর প্রক্রিয়াজাত হওয়ার আগে কয়েক ধাপে পরীক্ষা করে নিই। প্রাথমিক ধাপে আমাদের গ্রামীণ দুধ সংগ্রহ কেন্দ্রে দুধ পরীক্ষা করি। এরপর আমরা আমাদের হাবে সেই দুধ নিয়ে যাই এবং সেখানে আরেক দফা পরীক্ষা করি। যদি হাবে দুধের পরীক্ষায় কোনো গ্রামীণ সংরক্ষণ কেন্দ্র থেকে আসা দুধ উত্তীর্ণ হতে না পারে, তাহলে আমরা সেগুলো নষ্ট করে ফেলি। এ ছাড়া আমাদের নরসিংদীর কারখানায় দুধ নেওয়ার আগে আমরা আরেক দফা চূড়ান্ত পরীক্ষা করি।’

আরও খবর পড়ুন:

৬৭ বছর পর রামেক হাসপাতালে মানসিক রোগীদের জন্য পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্ড

রাজমিস্ত্রির বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার

চাঁদপুরে নতুন ভোটারদের নিয়ে ‘নির্বাচনী অলিম্পিয়াড’

চায়ের দোকানে চলে একটি বাতি-ফ্যান, বিদ্যুৎ বিল এল সাড়ে ৫৫ হাজার টাকা

বাসার বাথরুমে পড়ে ছিল নারী প্রভাষকের লাশ, মাথায় আঘাতের চিহ্ন

অটোরিকশাকে চাপা দিল বাস, প্রাণ গেল শিশুসহ চারজনের

হাতিয়ায় ৫৬০০ কেজি জাটকা ইলিশ জব্দ, এতিমখানায় বিতরণ

মাঠে পড়ে ছিল মাছ ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত লাশ

বাসার দরজা ভেঙে চবি শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

বদলি নিয়ে ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ শিক্ষক নেতার