এক সপ্তাহ ধরে দাম বাড়তে থাকার প্রেক্ষাপটে সরকার চিনি আমদানির ওপর শুল্ক কমিয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) গতকাল বুধবার পরিশোধিত ও অপরিশোধিত চিনি আমদানির ওপর শুল্ক অর্ধেক কমিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। যদিও পাইকারি বাজারে গতকালও চিনির দাম কেজিপ্রতি ১ টাকা বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা। বাজার বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, শুল্ক কমানোর প্রভাব বাজারে পড়তে সময় লাগবে। যদিও চিনির দাম কমবে কি না, সে নিয়ে সন্দিহান ব্যবসায়ীরা।
রাজধানীর বাজারে এক সপ্তাহে চিনির দাম কেজিপ্রতি ৩-৪ টাকা বেড়েছে। আগে প্রতি কেজি খোলা চিনির দাম ছিল ১৩০-১৩২ টাকা। গতকাল তা ১৩৪-১৩৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি চিনি গতকাল বিক্রি হয়েছে ১২৮ টাকায়, আগের দিন তা ছিল ১২৭ টাকা।
এনবিআর গতকাল প্রতি টন অপরিশোধিত চিনির আমদানি শুল্ক কমিয়ে ১ হাজার ৫০০ টাকা করেছে। আগে এটি ছিল ৩ হাজার টাকা। পরিশোধিত চিনি আমদানির শুল্ক ছিল টনপ্রতি ৬ হাজার টাকা। গতকাল তা ৩ হাজার টাকা করা হয়েছে। আগামী বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত এই শুল্ক বহাল থাকবে।
এনবিআরের তথ্যমতে, বর্তমানে চিনি আমদানিকারকদের ১৫ শতাংশ ভ্যাট, ৩০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক ও ২ শতাংশ অগ্রিম আয়কর ছাড়াও প্রতি টন চিনিতে নির্দিষ্ট ৩ হাজার টাকা শুল্ক দিতে হয়। সেটা কমিয়ে এবার ১ হাজার ৫০০ টাকা করা হলো। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, দেশে চিনির চাহিদা বছরে ২০ লাখ টন। অপরিশোধিত চিনি আমদানি হয় ২২-২৪ লাখ টন। দেশে উৎপাদন হয় চাহিদার মাত্র ১ শতাংশ।
শুল্ক কমানোর প্রভাব বাজারে পড়বে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেছেন, ‘চিনির ওপর সরকার যে পরিমাণ আমদানি শুল্ক কমিয়েছে, সে পরিমাণ দাম বাজারে কমবে আশা করছি।’
তবে সিটি গ্রুপের পরিচালক বিশ্বজিত সাহা বলেন, বর্তমানে প্রতি কেজি চিনিতে শুল্ক ধার্য আছে ৪২-৪৩ টাকা। আর সরকার কমিয়েছে মাত্র ১ টাকা ৫০ পয়সা। ডলারের উচ্চমূল্য এবং আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির দাম বাড়ায় শুল্ক কমানোর প্রভাব বাজারে পড়বে না।
পুরান ঢাকার মৌলভীবাজারের পাইকারি চিনি ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, চিনি আমদানির শুল্ক কমানোর গেজেট প্রকাশের পর বাজারে দাম উল্টো কেজিপ্রতি ১ টাকা বেড়েছে।
শুল্ক কমানোর পর চিনির দাম নতুন করে বেঁধে দেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (আমদানি ও অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য অধিশাখা) মো. রুহুল আমিন বলেন, শুল্ক কমানোর পর কী পরিমাণ দাম কমানো যায়, সে বিষয়ে সার্বিক তথ্য নিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।