বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে যৌনকর্মীদের অধিকার রক্ষায় রাষ্ট্রের কার্যকর ভূমিকা নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে যৌনকর্মীদের অধিকার রক্ষায় গঠিত মোর্চা ‘সংহতি’। সংগঠনটি জানিয়েছে, যৌনকর্মীরা এই দেশের নাগরিক হয়েও মৌলিক অধিকারের সুরক্ষা পান না এবং নিয়মিত বৈষম্য, উচ্ছেদ ও সহিংসতার মুখে পড়েন। রাষ্ট্রের দায়িত্ব তাঁদের মানবাধিকার সুনিশ্চিত করা।
আজ মঙ্গলবার সংহতির সভাপ্রধান ও নারীপক্ষ সদস্য মাহবুবা মাহমুদ লীনা স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ১৯৯৯ সালে টানবাজার ও নিমতলীতে শত শত বছরের আবাসস্থল থেকে যৌনকর্মীদের জোরপূর্বক উচ্ছেদের প্রতিবাদে নারীপক্ষের নেতৃত্বে ৮৬টি সংগঠন একত্র হয়ে ‘সংহতি’ গঠন করে। এরপর উচ্চ আদালতে রিট আবেদনের পর ২০০০ সালের ১৪ মার্চ হাইকোর্ট রায়ে উল্লেখ করেন—যৌনকর্মীদের জোরপূর্বক উচ্ছেদ করা যাবে না এবং যৌনকর্ম পেশা অবৈধ নয়।
‘সংহতি’ জানায়, যৌনকর্মীরা দেশের অন্যতম প্রান্তিক জনগোষ্ঠী হিসেবে নাগরিক অধিকার আদায়ে সবচেয়ে পিছিয়ে। তথাকথিত নৈতিকতার নামে তাঁদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ, সহিংসতা, এমনকি সম্পত্তি দখলের ঘটনাও ঘটে। উচ্ছেদ হওয়া যৌনকর্মীদের বেশির ভাগই জীবিকার অভাবে আরও অনিরাপদ পরিস্থিতিতে একই পেশায় ফিরতে বাধ্য হন।
সংগঠনটি রাষ্ট্রীয়ভাবে তিনটি বিষয়কে অগ্রাধিকার দেওয়ার দাবি জানিয়েছে। এগুলো হলো—যৌনকর্মীদের কাজকে অপরাধমুক্ত ঘোষণা করে বৈষম্য কমানো; ন্যায্য অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী শ্রম আইনে যৌনকর্মীদের শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া।
বিবৃতিতে মাহবুবা মাহমুদ লীনা বলেন, ‘যৌনকর্মীরা মানুষ ও নাগরিক। তাঁদের অধিকার নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। মানবাধিকার দিবসে আমরা সেই দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানাচ্ছি।’