হোম > ল–র–ব–য–হ

ঘন সবুজ জলের পুকুরটিতে গোসল করা মানা

ইশতিয়াক হাসান

গল্পটা ছোট্ট একটি হ্রদ কিংবা পুকুরের। সাধারণ কোনো পুকুর কিংবা লেকের সঙ্গে কোনোভাবেই একে মেলানো যাবে না। আর পার্থক্য তৈরি করেছে পুকুরটির জল। ঘন সবুজ তার রং। কিন্তু পুকুরের পানির এমন রং পাওয়ার কারণ কী?

নিউজিল্যান্ডের তাওপো ভলকানিক জোনটি সক্রিয় আগ্নেয় এলাকা কয়েক লাখ বছর আগে থেকেই। এখানকার ১১ বর্গমাইল এলাকা নিয়ে গড়ে উঠেছে ওয়াই-ও-তাপু থার্মাল ওয়ান্ডারল্যান্ড। মাওরি ভাষা থেকে আসা ওয়াই-ও-তাপুর বাংলা করলে দাঁড়ায় পবিত্র পানি। অবশ্য গোটা এলাকাটি এখনো পর্যটকদের ভ্রমণের জন্য উন্মুক্ত নয়।

তো এই জায়গাটিতে ফুটতে থাকা কিংবা বুদ্বুদ উঠতে থাকা নানা ধরনের জলের উৎসের খোঁজই পাবেন। তবে ডেভিলস বাথ নামের পুকুর বা খুদে হ্রদটি মোটেই সে রকম কিছু নয়, বরং বেশ শান্ত। নামটা কেমন বিদঘুটে হলেও এটার পানিকে মোটেই ফুটতে দেখবেন না। বরং তার আশ্চর্য সবুজ জল আপনাকে মন্ত্রমুগ্ধ করে ফেলবে। এখানে বেড়াতে আসা পর্যটকদেরও সবচেয়ে পছন্দের জায়গাগুলোর একটি এটি। কিন্তু মনে রাখবেন, পুকুরের জলে হাত দিতে পারবেন না। তবে এর সবুজ জল দূর থেকেই বরং সুন্দর দেখায়। 

এবার বরং ডেভিলস বাথের জলের এমন ঘন সবুজ রং পাওয়ার কারণ জেনে নেওয়া যাক। মূলত হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাস আর লোহার বিভিন্ন লবণ একে এমন আশ্চর্য বর্ণ দিয়েছে। তবে সব সময় ঘন সবুজ রং দেখবেন এমনটি নয়। এটা নির্ভর করে সূর্যরশ্মি এবং পানিতে অবস্থান করা খনিজের ওপর। সাধারণত লোহার কারণে লেকটিকে সবুজ দেখায়। সালফারের পরিমাণ বেড়ে গেলে পানির রং হলুদে রূপ নেয়। তবে যা-ই হোক না কেন, এর রং কোনোভাবেই স্বাভাবিক অন্য পুকুর কিংবা হ্রদের সঙ্গে মেলাতে পারবেন না।

আজব এই পুকুরটির কাছাকাছি পৌঁছাতেই নাকে এসে বাড়ি দেবে ঝাঁজালো একটা গন্ধ। অবশ্য এমন একটি পুকুর থেকে এমন গন্ধ না পাওয়ার কারণ নেই। সালফাইডের কারণে আধ পচা ডিমের গন্ধের সঙ্গে কিছুটা মিল পাবেন এর। এদিকে এখানে উপস্থিত উচ্চমাত্রার সালফাইড, যেটি একটা আগ্নেয় গ্যাস, কিছুটা বিষাক্ত। কাজেই এখানে কোনো প্রাণীর বাস নেই।

হ্রদ বা পুকুরটি এমন নাম কোথায় পেল সে সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। মানে এ ব্যাপারে ঐতিহাসিক কোনো দলিল বা মাওরি লোককথার খোঁজ মেলেনি। তবে প্রথমবার এর আশ্চর্য রং দেখে ও কড়া গন্ধ পাওয়ার পর আপনার মনে হতেই পারে এর নাম ডেভিলস বাথ হবে না তো কী হবে! 

আশা করি ইতিমধ্যে অনুমান করতে পারছেন, ডেভিলস বাথে গোসল করা, সাঁতার কাটা কিংবা শরীর ডুবানো মোটেই বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। সত্যি এখানকার জলে নামলে আপনার চামড়ার বারোটা বেজে যাবে। ব্যাপার হচ্ছে পানিতে সালফার আর লোহার উপস্থিতির কারণে পানি অতিমাত্রায় অ্যাসিডীয় বা অম্লীয়। এমনিতেও পর্যটকদের এই আগ্নেয় এলাকায় চামড়া বেশি সময় উন্মুক্ত না রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়। 

বিদঘুটে নাম আর গোটা এলাকাটির আগ্নেয় পরিবেশের পরও ডেভিলস বাথ পর্যটকদের কাছে খুব প্রিয় জায়গা। যারা আসেন তাঁরা ডেভিলস বাথের পাশাপাশি এখানকার অন্য দ্রষ্টব্য স্থানগুলো দেখার সুযোগও হাতছাড়া করেন না। অভিভাবকেরা বাচ্চাদেরও জায়গাটি দেখাতে নিয়ে আসেন, প্রকৃতি কখনো কতটা বিচিত্র হতে পারে তা বোঝানোর জন্য! 

পৃথিবীর ভূত্বকে একটি অসমতল খাদের মতো বলতে পারেন একে। বড় ধরনের কোনো অগ্ন্যুৎপাতের ফলে এই জায়গাটি তৈরি হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। বেশ লম্বা জায়গা নিয়ে গড়ে ওঠা কাঠের একটি প্ল্যাটফর্ম থেকে পর্যটকেরা দেখতে পারেন সবুজ জলের হ্রদটিকে।

অনেকটা ডেভিলস বাথের মতো আরেকটি জায়গার দেখা পাবেন ওয়াই-ও-তাকাপো সংরক্ষিত এলাকাতেই। তার নাম লেক নগাকরো বা নগাকরো হ্রদ। দক্ষিণ দিক থেকে একটি খাল এসে পড়েছে হ্রদটিতে। এটি আকারে ডেভিলস বাথের থেকে বড়। এর রংও গাঢ় সবুজ। অর্থাৎ ডেভিলস বাথের মতোই এতে আগ্নেয় পদার্থের উপস্থিতি আছে।

কাজেই পাঠক নিউজিল্যান্ড কিংবা অস্ট্রেলিয়া ভ্রমণে গেলে আশ্চর্য এই সবুজ জলের পুকুর দেখা থেকে নিজেকে বঞ্চিত করবেন না আশা করি।

লিংকডইনে গার্লফ্রেন্ড চেয়ে বিজ্ঞাপন দেওয়ার পর যা ঘটল

অফিসে ঘন ঘন টয়লেটে যাওয়ায় চাকরি হারালেন প্রকৌশলী

ব্যর্থ ব্যবসায়ী ফুড ডেলিভারি করে লাখপতি

বিমানের ডানায় আটকে গেল প্যারাস্যুট, অলৌকিকভাবে বাঁচলেন স্কাইডাইভার

সময়ের আগে অফিসে যাওয়ায় চাকরিচ্যুত নারী

২৩ লাখ টাকার ‘ডিম’ গিলে ফেললেন যুবক, এক সপ্তাহ পর যেভাবে উদ্ধার করল পুলিশ

১৯ হাজার ডলারের ‘ডিম’ গিলে যুবক কারাগারে

জরায়ুহীন হয়ে জন্মেছিলেন, তাঁর হয়ে সন্তান জন্ম দিলেন প্রিয় বন্ধু

বিড়ালের বিরুদ্ধে ‘যুদ্ধ ঘোষণা’ করল নিউজিল্যান্ড সরকার

৮০টি সেলাই ও ২ ঘণ্টার অস্ত্রোপচারে বাঁচল একটি কোবরা