মেটার পরিচালনা পর্ষদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন প্রযুক্তি খাতের প্রভাবশালী নারী ব্যক্তিত্ব শেরিল স্যান্ডবার্গ। তিনি ফেসবুকের মূল কোম্পানিটির চিফ অপারেটিং অফিসার (সিওও) বা প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
ফেসবুকের প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই যুক্ত ছিলেন গুগলের সাবেক কর্মী শেরিল স্যান্ডবার্গ। ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ ও মেসেঞ্জারসহ পুরো কোম্পানির বিজ্ঞাপনী ব্যবসাকে লাভজনক করে তোলেন স্যান্ডবার্গ।
তাঁর লেখা বই ‘উইমেন, ওয়ার্ক অ্যান্ড দা উইল টু লিড’ নারীবাদী ইশতেহার হিসেবে পরিচিত। এই বইয়ের জন্য তিনি বিশ্বব্যাপী পরিচিতি পেয়েছেন।
তিনি দায়িত্বে থাকাকালীন বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে মেটার সমালোচনা হয়। এর মধ্যে রয়েছে ২০১৬ সালের যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনকেন্দ্রিক ভুল তথ্য প্রচার, ২০১৮ সালের ক্যামব্রিজ অ্যানালাইটিকার গোপনীয়তা লঙ্ঘনের ঘটনা ও ২০২১ সালের যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটাল বিল্ডিংয়ে হামলা।
গত বুধবার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে ‘কৃতজ্ঞতা ভরা হৃদয় এবং স্মৃতিতে ভরা মন’ নিয়ে কোম্পানি থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন স্যান্ডবার্গ। তিনি বলেন, ‘মেটার ভবিষ্যৎ নির্ভরযোগ্য পর্যায়ে আছে, তাই কোম্পানি থেকে সরে আসার এটিই সঠিক সময়।’
পরিচালনা পর্ষদ ছাড়লেও তিনি কোম্পানির অনানুষ্ঠানিক উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করবেন বলে বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানায়।
১৪ বছর ধরে ফেসবুক ও মেটার সিওও হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন স্যান্ডবার্গ। তিনি টানা ১২ বছর পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ছিলেন। একে জীবনের ‘বিশেষ সুযোগ’ হিসেবে অভিহিত করেছেন তিনি।
শেরিলের ‘অসাধারণ অবদানের’ জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন মেটার সিইও মার্ক জাকারবার্গ। স্যান্ডবার্গের পোস্টের কমেন্টে তিনি বলেন, ‘বছরের পর বছর ধরে আমাদের কোম্পানি এবং কমিউনিটির প্রতি অসাধারণ অবদানের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ শেরিল। আপনার নির্দেশনা কোম্পানির সাফল্যে অবদান রেখেছে। আমার ও মেটার প্রতি আপনার অবদানের জন্য আমি কৃতজ্ঞ।’
বিভিন্ন দেশে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের জন্য ডিজিটাল আইন কঠোর হওয়ায় নতুন নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে মেটা। আইফোন প্রস্তুতকারক কোম্পানি অ্যাপলও গোপনীয়তার নীতিতে পরিবর্তন করেছে। এজন্য সামাজিক মিডিয়া কোম্পানিগুলোর বিজ্ঞাপনী ব্যবসায় ক্ষতি করছে।
ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা যুক্তরাষ্ট্রের মতো বিভিন্ন দেশে কমে যাচ্ছে। বিশেষ করে কম বয়সীরা টিকটকের মতো প্রতিযোগী অ্যাপের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে।