সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ইউটিউবের বার্ষিক ‘মেড অন ইউটিউব’। এই আয়োজনে কনটেন্ট নির্মাতাদের জন্য একাধিক নতুন ফিচার ও টুলের ঘোষণা করা হয়েছে। এগুলো কনটেন্ট নির্মাণের কাজকে আরও সহজ করবে।
স্টুডিওতে নতুন চমক
কনটেন্ট নির্মাতারা তাঁদের চ্যানেল পরিচালনা করতে ইউটিউব স্টুডিও ব্যবহার করেন। এবার সেখানে বেশ কিছু নতুন ফিচার যুক্ত হয়েছে। এগুলোর মধ্যে আকর্ষণীয় হলো ‘লাইকনেস ডিটাকশন’। এখন থেকে কেউ যদি অনুমতি ছাড়াই আপনার মুখের অবয়ব কিংবা কণ্ঠস্বর ব্যবহার করে ভিডিও বানায়, স্টুডিও এখন থেকে তা শনাক্ত করতে সাহায্য করবে। এরপর ভিডিও সরিয়ে দেওয়ার জন্য এক ক্লিকেই ইউটিউবকে জানিয়ে দেওয়া সম্ভব হবে। এর পাশাপাশি স্টুডিওতে যোগ হয়েছে এআই-চালিত নতুন সহকারী ‘আস্ক স্টুডিও’। নির্মাতারা এখানেই অ্যাকাউন্ট-সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রশ্নের সমাধান পাবেন। এ ছাড়া এখন থেকে একটি ভিডিওতে সর্বোচ্চ পাঁচজন নির্মাতার একসঙ্গে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। আর সেই ভিডিও একসঙ্গে প্রকাশিত হবে সবার নিজস্ব চ্যানেল থেকে। এতে অনেকের এক হয়ে আরও বড় পরিসরে কাজের সুযোগ মিলবে। সবাই তাঁদের চ্যানেল থেকে পাওয়া ভিউ এবং এনগেজমেন্টের ভিত্তিতে আয় করতে পাবেন।
লাইভে নতুন অভিজ্ঞতা
ইউটিউব লাইভ প্ল্যাটফর্মেও এসেছে দারুণ সব পরিবর্তন। এখন লাইভে নির্মাতারা চাইলে ছোট ছোট গেম খেলার আয়োজনও করতে পারবেন। এতে দর্শকদের সঙ্গে আরও বেশি সময় ধরে যুক্ত থাকা যাবে। কাজের ফিচারটি হলো এআই-চালিত হাইলাইটস। এটি লাইভস্ট্রিম চলাকালে স্বয়ংক্রিয়ভাবে উল্লেখযোগ্য মুহূর্তগুলো বাছাই করে শর্টস ভিডিও তৈরি করে দেবে। এ ছাড়া নতুন অ্যাড ফরম্যাট যুক্ত করা হয়েছে। লাইভের মধ্যে আসা বিজ্ঞাপনটি ভিডিওর সঙ্গে পাশাপাশি দেখানো হবে। এতে লাইভ প্রচার মাঝপথে আর থেমে যাবে না।
শর্টস এআই টুলস
শর্টস ভিডিও বানানো এখন আরও সহজ হতে যাচ্ছে। গুগলের টেক্সট-টু-ভিডিও এআই মডেল ‘ভিও থ্রি’-এর বিশেষ সংস্করণ ‘ভিও থ্রি ফাস্ট’ ফিচার এখন শর্টসে পাওয়া যাবে। এর মাধ্যমে শুধু টেক্সট লিখে ভিডিওতে নতুন কিছু যোগ করতে পারবেন। ভিডিও স্টাইল পরিবর্তন করা বা ছবির গতি আয়ত্তে আনতে পারবেন। এ ছাড়া গুগলের এআই মিউজিক মডেল ‘লিরিয়া ২’ ব্যবহার করে যেকোনো ভিডিওর সংলাপ থেকে সাউন্ডট্র্যাক তৈরি করা যাবে।
আয়ের নতুন সুযোগ
কনটেন্ট নির্মাতারা এখন আরও বেশি উপায়ে আয় করতে পারবেন। ‘ইউটিউব শপিং’-এর মাধ্যমে তাঁরা তাঁদের ভিডিওতে পণ্যের ট্যাগ ব্যবহার করে টাকা আয় করতে পারবেন। তবে সুবিধার বিষয় হলো, এখানে নির্মাতাদের আলাদাভাবে পরিশ্রম করতে হবে না। ভিডিও চলাকালে কখন পণ্যের কথা বলা অথবা দেখানো হচ্ছে, সেটি এআই নিজেই শনাক্ত করবে। সেই মুহূর্তে দর্শকের সামনে পণ্যের ট্যাগ দেখা যাবে। এ ছাড়া সরাসরি ব্র্যান্ডের ওয়েবসাইটের লিংক ভিডিওতে যোগ করা যাবে। বলা যায়, ইউটিউব এখন কনটেন্ট নির্মাতাদের জন্য তাঁদের প্ল্যাটফর্মে কাজ করা এবং অর্থ উপার্জনের প্রক্রিয়া আরও সহজ ও সুবিধাজনক করে তুলছে।
ইউটিউবের নতুন এই ফিচারগুলো ধাপে ধাপে উন্মুক্ত করা হবে। তবে এর মধ্যে কিছু ফিচার; যেমন ‘লাইকনেস ডিটাকশন’ সীমিত আকারে চালু হয়েছে। বাকি ফিচারগুলো আগামী বছর থেকে সবার জন্য উন্মুক্ত করা হবে।
সূত্র: টেকক্রাঞ্চ