মাউন্ট এভারেস্টের দুর্গম যাত্রাপথ এখন প্রযুক্তির ছোঁয়ায় আরও নিরাপদ হতে চলেছে। মিলন পান্ডে নামের এক ড্রোনচালক এই বিপজ্জনক পথে পর্বতারোহীদের জন্য আশার আলো হয়ে উঠেছেন। খাবার, জরুরি সরঞ্জাম এবং চিকিৎসাসামগ্রী এখন ড্রোনের মাধ্যমে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে দুর্গম এলাকায়, যা কমিয়ে দিচ্ছে প্রাণহানির ঝুঁকি।
এভারেস্টের ৫ হাজার ৩৬৪ মিটার উচ্চতায় বেস ক্যাম্পে বসে মিলন পান্ডে একদিন দেখেন, ওপর থেকে একটি মই ভেঙে পড়ে যাচ্ছে। পরে তিনি বুঝতে পারেন, এমন ঝুঁকিপূর্ণ পথে অনেক কিছুই এভাবে হারিয়ে যায়। তখন থেকেই তিনি ড্রোন ব্যবহার করে এসব সরঞ্জাম নিরাপদে পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নেন। তাঁর ড্রোন এখন পর্বতারোহীদের জন্য বরফ ভাঙার কুড়াল, অক্সিজেন সিলিন্ডার, রশি ও ভারী জুতা বহন করছে। বিশেষ করে বেস ক্যাম্প থেকে ক্যাম্প ওয়ান পর্যন্ত ১ দশমিক ৮ মাইল দীর্ঘ খুম্বু আইসফলের ভয়ংকর এলাকায় ড্রোনের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। সেখানে হেঁটে যেতে ছয় থেকে সাত ঘণ্টা সময় লাগলেও ড্রোন মাত্র ছয় থেকে সাত মিনিটে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম পৌঁছে দিচ্ছে।
ইমাজিন নেপাল নামের একটি সংস্থার কর্মকর্তা মিংমা জি শেরপা জানান, ২০২৩ সালে তুষারধসে তাঁর তিন বন্ধু প্রাণ হারান। সেই মর্মান্তিক ঘটনার পর থেকে বিকল্প কোনো নিরাপদ উপায় খোঁজার চিন্তা করেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘চীনের পর্বতারোহীরা যদি ড্রোন ব্যবহার করতে পারে, তবে আমরাও পারব।’
এয়ার লিফট নেপালের প্রধান নির্বাহী রাজ বিক্রম জানান, ২০২৪ সালের এপ্রিলে চীনের তৈরি দুটি ড্রোন দিয়ে এভারেস্টে এয়ার লিফট কার্যক্রম শুরু হয়। তবে উচ্চ গতির বাতাস ও খারাপ আবহাওয়া ড্রোন চলাচলের প্রধান চ্যালেঞ্জ।
মিলন পান্ডে ও রাজ বিক্রমের স্বপ্ন, একদিন ড্রোন প্রযুক্তির সহায়তায় এভারেস্টে আরোহণ আরও বেশি নিরাপদ হবে এবং আরও বেশি মানুষ এই স্বপ্নপূরণের পথে এগিয়ে আসবে।
সূত্র: সিএনএন