আমাজন ইনকরপোরেশনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোসের মা জ্যাকি বেজোস মারা গেছেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। গতকাল বৃহস্পতিবার মায়ামিতে নিজ বাড়িতে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। বেজোস ফ্যামিলি ফাউন্ডেশনের ওয়েবসাইটে তাঁর মৃত্যুর খবরটি জানানো হয়েছে।
জেফ বেজোস সামাজিক মাধ্যমে তাঁর মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে লিখেছেন, ‘জ্যাকি বেজোস ‘‘লিউয়ি বডি ডিমেনশিয়া’’ নামের এক দীর্ঘ রোগযুদ্ধে পরাজিত হয়ে মারা গেছেন। তাঁর মৃত্যুর সময় আমরা অনেকেই তাঁকে ঘিরে রেখেছিলাম, যাঁরা তাঁকে ভালোবাসতাম।’
জ্যাকি বেজোস ও তাঁর স্বামী মিগুয়েল বেজোস আমাজনে প্রথম বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অন্যতম। ১৯৯৫ সালে জেফ বেজোস যখন আমাজন প্রতিষ্ঠা করেন, তখন তাঁর মা-বাবা দুটি চেকের মাধ্যমে মোট ২ লাখ ৪৫ হাজার ৫৭৩ ডলার বিনিয়োগ করেন। জেফ তখন তাঁদের সতর্ক করেছিলেন যে, এই উদ্যোগ হয়তো সফল হবে না। কিন্তু আমাজন সফল হয় এবং এই প্রাথমিক বিনিয়োগ ও পরবর্তী সময়ে কেনা শেয়ার থেকে তাঁদের সম্পদের পরিমাণ ২০১৮ সালে প্রায় ৩০ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়ায়।
ছেলে জেফ ও তাঁর কোম্পানির হয়ে সমাজসেবামূলক কাজ শুরু করার কয়েক দশক আগেই, ২০০০ সাল থেকে জ্যাকি ও মিগুয়েল বেজোস ‘বেজোস ফ্যামিলি ফাউন্ডেশন’-এর মাধ্যমে শিক্ষামূলক কর্মসূচিতে অর্থায়ন শুরু করেন।
১৯৪৬ সালের ২৯ ডিসেম্বর ভার্জিনিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন জ্যাকি। তাঁর পারিবারিক নাম জ্যাকলিন মেরি গাইস। নিউ মেক্সিকোতে তাঁর বাবা মার্কিন পারমাণবিক শক্তি কমিশনের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ছিলেন। হাইস্কুলে পড়ার সময় তিনি থিওডোর জর্গেনসেনকে বিয়ে করেন এবং ১৯৬৪ সালের জানুয়ারিতে তাঁদের পুত্র জেফ জন্মগ্রহণ করেন। জেফের বয়স ১৭ মাস, তখন জ্যাকি-জার্গেনসেনের বিচ্ছেদ হয়। একা মা (সিঙ্গেল মাদার) হিসেবে তিনি হাইস্কুল এবং পরে কমিউনিটি কলেজে পড়ালেখা শেষ করেন।
এরপর তিনি ব্যাংকের বুককিপিং বিভাগে কাজ করার সময় কিউবান অভিবাসী মিগুয়েল বেজোসের সঙ্গে পরিচিত হন। ১৯৬৮ সালে তাঁরা বিয়ে করেন। মিগুয়েল জেফকে দত্তক নেন এবং জেফ তখন বেজোস পদবি নেন।
জ্যাকি ছিলেন জেফের সার্বক্ষণিক অভিভাবক এবং সার্বিক বিষয়ে সহায়তার আশ্রয়। জেফের কৌতূহলী মনকে তিনি সব সময় সমর্থন করতেন। ছোটবেলায় জেফকে তিনি একটি মেধাবী শিক্ষার্থীদের প্রোগ্রামে ভর্তি করানোর জন্য অনেক চেষ্টা করেছিলেন। জেফের অদ্ভুত শখ পূরণে তিনি সব সময় সচেষ্ট থেকেছেন। জেফকে নিয়মিত রেডিও শ্যাকে নিয়ে যেতেন। সেখানে জেফ ইলেকট্রনিকস নিয়ে কাজ করতেন।