হোম > প্রযুক্তি

লেখা থেকেই হবে ছবি

অলকানন্দা রায়, ঢাকা

আদিম যুগে গুহাবাসী মানুষের মধ্যে যখন ভাষার আদান-প্রদান শুরু হয়নি, তখন তারা গুহার দেয়ালে ছবি এঁকে বোঝাত মনের ভাব। এঁকে রাখত শিকার করা পশুর ছবি। সেই দিন ফুরিয়েছে। এখন আমরা ভাষায় কিংবা লেখার মাধ্যমে সবকিছু বুঝিয়ে থাকি। বর্ণ আবিষ্কারের পর পেরিয়ে গেছে হাজার হাজার বছর। এখন মানুষ ঝুঁকছে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দিকে।

এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কাজে লাগিয়ে এখন লেখা থেকেই আঁকা হচ্ছে ছবি। শুনে অবাক হচ্ছেন, তাই না? অবাক হলেও বিষয়টি সত্যি—লেখা থেকেই হচ্ছে ছবি। আপনার কল্পনায় প্রায়ই ঘুরে বেড়ায় বিভিন্ন চিত্রকল্প। অথচ আপনি শিল্পী নন বলে রং-তুলির আঁচড়ে ক্যানভাসজুড়ে সেই ছবি আঁকতে পারেন না। এখন এটা কোনো সমস্যাই নয়। আপনার মনে যে চিত্রকল্প ভেসে বেড়াচ্ছে, তা শুধু লিখে প্রকাশ করুন। তাতেই ঘটে যাবে বিস্ময়কর ব্যাপার। আঁকা হয়ে যাবে আপনার কল্পনার সেই ছবি! এ কাজের যে কারিগর, তাঁর নাম ‘দাল-ই’।

শিল্পী সালভাদর দালির ‘দাল’ এবং পিক্সারের জনপ্রিয় অ্যানিমেশন ওয়াল-ই থেকে ‘ই’ নিয়ে এর নাম রাখা হয়েছে ‘দাল-ই’।

কী কী করতে পারে এই প্রযুক্তি
সোজা কথায়, এটি একটি সিস্টেম, যা ভাষার বর্ণনা থেকে বাস্তবসম্মত ছবি তৈরি করতে পারে। বিখ্যাত কারও চিত্রশিল্পের অনুপ্রেরণায় ছবি আঁকতে চাইলে ওই ছবি মূল ক্যানভাসে যা আছে তার থেকেও বিস্তৃত পরিসরে ছবি এঁকে ফেলে দাল-ই। লিখিত ক্যাপশন থেকে তৈরি হওয়া চিত্রগুলোকে বাস্তবসম্মতভাবে সম্পাদনা করতে পারে। এটি ছায়া, প্রতিফলন, টেক্সচারকে চিত্রের উপাদান বা মাধ্যমগুলোকে সংযোগ করতে এবং অপসারণও করতে পারে। এমনকি আপনার ফটো গ্যালারি থেকে ছবি নিতে পারে এবং মূল ছবির আদল ঠিক রেখেও পরবর্তী ছবিটিতে ভিন্নতা আনতে পারে।

সম্প্রতি দাল-ইর দ্বিতীয় সংস্করণ ‘দাল-ই-২’-এর মোড়ক উন্মোচন করেছে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওপেনএআই। এই প্রতিষ্ঠান ঘোষণা দিয়ে দাল-ই প্রযুক্তিটি সবার জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছে। সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার আগে থেকে দাল-ই ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল প্রায় ১৫ লাখ মানুষ। আর তারা প্রতিদিন তৈরি করত ২০ লাখেরও বেশি ছবি। 
দাল-ই সিস্টেমে ছবি এঁকে সম্প্রতি পুরস্কার জিতে নিয়েছেন জেসন অ্যালেন নামের একজন প্রোগ্রামার। তাঁর আঁকা ‘থিয়েটার ডি অপেরা স্পেশাল’ নামে ছবিটি লাসভেগাসের একটি প্রতিযোগিতায় ডিজিটাল ক্যাটাগরিতে প্রথম পুরস্কার জিতেছে।

যুক্তরাজ্যের কম্পিউটার বিজ্ঞানী এমাদ মোস্তাক মনে করেন, এই প্রযুক্তির কারণে যাঁরা বইপত্র বা ডিজিটাল ইলাস্ট্রেশন করেন, ভবিষ্যতে তাঁদের ক্যারিয়ার কিছুটা হুমকিতে পড়তে পারে। তবে দাল-ই ইতিমধ্যে ১১৮টি দেশের ৩ হাজার শিল্পী নিয়মিত ব্যবহার করছেন। এমনকি এ ধরনের মেশিন-বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে গ্রাফিক নভেলও প্রকাশিত হচ্ছে। দাল-ইতে আপাতত বেশ কিছু আপত্তিকর শব্দ ফিল্টার করার ব্যবস্থা রাখা আছে। তা ছাড়া এর মাধ্যমে চাইলেই কোনো ব্যক্তির ছবি দিয়ে কেউ ব্যঙ্গচিত্র বানাতে পারবে না।

তথ্যসূত্র: ওপেনএআই ডট কম, আরসটেকনিকা

প্রযুক্তির দখল কার হাতে

গুগলের নতুন এআই টুল

বৈদ্যুতিক জাহাজ নির্মাণশিল্পে চীনের আধিপত্য

পাসওয়ার্ডের নিরাপত্তা কতটুক: জেনে নিন বিশ্বে সর্বাধিক ব্যবহৃত পাসওয়ার্ড

ভুয়া ওয়েবসাইট চেনার উপায়

আগুনের ঝুঁকিমুক্ত ব্যাটারি বানালেন বিজ্ঞানীরা

উসকানিমূলক কনটেন্ট বন্ধে কঠোর অবস্থানে সরকার

উসকানিমূলক কনটেন্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মেটাকে বিটিআরসির চিঠি

বিবিএসের জরিপ: ইন্টারনেটের আওতার বাইরে দেশের ৪৪% পরিবার

ডিজিটাল রূপান্তর মানে শুধু অ্যাপ নয়, রাষ্ট্রের ভিত্তি পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া: ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব