সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কনটেন্ট পোস্ট করে উপার্জন এখন বিশ্বজুড়েই আয়ের মাধ্যম। ইনফ্লুয়েন্সার হিসেবে পরিচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের নিয়ে এক জরিপ গবেষণায় উঠে এসেছে চমকপ্রদ তথ্য। বছরে এক লাখ ডলারের বেশি উপার্জন করেছেন এমন ইনফ্লুয়েন্সারদের ৯৫ শতাংশেরই ১০ লাখের কম ফলোয়ার আছে। ১০ হাজারের কম ফলোয়ার নিয়েও লাখ ডলার আয় করেছেন ২৫ শতাংশ।
২ হাজার ক্রিয়েটরের ব্যবসার কৌশল পর্যবেক্ষণ করে জরিপটি করেছে কাজাবি নামে ইনফ্লুয়েন্সারদের সহায়তাকারী প্ল্যাটফর্ম। তবে এতে নিজেদের গ্রাহকদের তথ্য নিয়েছে কিনা তা জানায়নি কাজাবি। যুক্তরাষ্ট্রের এ প্রতিষ্ঠান ক্রিয়েটরদের পোস্ট করা পডকাস্ট ও কোর্স থেকে উপার্জনে সহায়তা করে।
উপার্জনের বৈচিত্র্যময় উৎস
আর্থিকভাবে সফল হওয়ার জন্য একাধিক আয়ের উৎস বের করা প্রয়োজন বলে মনে করেন জরিপের ৭৫ শতাংশ অংশগ্রহণকারী। অর্থাৎ আয়ের জন্য তারা শুধুমাত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ওপরে নির্ভর করে না।
৯৫ শতাংশ ক্রিয়েটরের ফলোয়ার ১০ লাখের কম
ফলোয়ার বেশি হলেই আয় বেশি হবে— এমন তথ্যের সত্যতা গবেষণার ফলাফলে জানা যায়নি। বরং লাখ ডলার উপার্জনকারী ৯৫ শতাংশ ক্রিয়েটরের ১০ লাখেরও কম ফলোয়ার আছে। মাত্র ৫ শতাংশ ফলোয়ারের ১০ লাখের বেশি ফলোয়ার এবং ২৫ শতাংশের ১০ হাজারের কম ফলোয়ার রয়েছে।
এসব জরিপ প্রমাণ করে, আয়ের বিভিন্ন উৎসকে ঠিক উপায়ে মনিটাইজেশন করলে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তারকা না হলেও বিপুল পরিমাণ অর্থ আয় সম্ভব।
ক্রিয়েটর ইউনিয়ন গঠন
সর্বোচ্চ উপার্জনকারী ৪৬ শতাংশ কনটেন্ট ক্রিয়েটর বিভিন্ন ইউনিয়নে যুক্ত হতে চান। কারণ ২০২৪ সালের তাদের প্রধান দুটি উদ্বেগ হল—মূল্যস্ফীতি ও বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মের অস্থিতিশীলতা।
অ্যালগরিদমিক পরিবর্তন ও হুট করে অ্যাকাউন্ট সাসপেনশন বা বন্ধ হয়ে গেলে, তা ক্রিয়েটরদের আয়ের ওপর প্রভাব ফেলবে। তাই ব্যবসায়িক মডেলগুলো টিকিয়ে রাখতে এবং ন্যায্য বেতন, প্ল্যাটফর্ম নীতি, কনটেন্টের মালিকানা অধিকার ও আরও অনেক কিছু নিয়ে প্ল্যাটফর্মগুলোর সঙ্গে আলোচনা করতে এসব ইউনিয়ন সাহায্য করতে পারে।
গবেষণাপত্রে কাজাবি বলে, লাখ ডলার আয় করা ক্রিয়েটররা কম আয়ের ক্রিয়েটরদের তুলনায় এসব ইউনিয়ন তৈরি করার প্রতি বেশি আগ্রহী। কারণ ইউনিয়নের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের মান উন্নয়ন ও সুরক্ষা নিশ্চিত করা যাবে।
এআইয়ের ব্যবহার
আর্থিকভাবে সফল ক্রিয়েটররা অন্য ক্রিয়েটরদের চাইতেও বেশি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করে। ২৯ শতাংশ ক্রিয়েটর প্রতিদিন ও ৪৩ শতাংশ ক্রিয়েটর সপ্তাহে অন্তত একবার এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে।
কনটেন্ট তৈরির ক্ষেত্রে ক্রিয়েটরদের এই প্রযুক্তি অনেক সাহায্য করে। ৭৩ শতাংশ ক্রিয়েটর মনে করেন ২০২৪ সালে প্রতি সপ্তাহে এআই তাদের ২৬ ঘণ্টা কর্মঘণ্টা বাঁচাবে। আর ৫৬ শতাংশ ক্রিয়েটর মনে করেন, এআই টুল তাদের অবসাদ দূর করতে সাহায্য করবে।
সূত্র: ম্যাশাবল