প্রযুক্তি আমাদের জীবন সহজ করেছে। কিন্তু একই সঙ্গে খুলে দিয়েছে অপরাধের নতুন দিগন্ত। ফেসবুক হ্যাকিং, অনলাইন প্রতারণা, ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস, ভুয়া আইডি থেকে হুমকি, এসব এখন নিত্যদিনের ঘটনা। অনেকেই এমন ঘটনার শিকার হলেও জানেন না কীভাবে দ্রুত পুলিশের সহায়তা পাওয়া যায়।
বাংলাদেশ পুলিশ এখন সাইবার অপরাধ প্রতিরোধে আধুনিক প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষিত জনবল ব্যবহার করছে। সঠিক উপায়ে অভিযোগ জানালে যে কেউ ঘরে বসে দ্রুত প্রতিকার পাবেন।
কোথায় অভিযোগ করবেন
সাইবার অপরাধের অভিযোগ জানাতে এখন আর থানায় যাওয়ার প্রয়োজন হয় না। পুলিশের অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোই এখন নাগরিকের প্রথম সহায়তা কেন্দ্র।
১. ‘পুলিশ সাইবার সাপোর্ট ফর সিটিজিন’ ফেসবুক পেজে সরাসরি ইনবক্সে অভিযোগ পাঠানো যায়।
২. ‘পুলিশ সাইবার সাপোর্ট ফর উইমেন’ নারীদের জন্য বিশেষ ও গোপনীয় সহায়তা প্ল্যাটফর্ম।
৩. ওয়েবসাইটের সাইবার অভিযোগ বিভাগে ফরম পূরণ করে অভিযোগ করা যায়।
৪. জরুরি প্রয়োজনে ৯৯৯-এ ফোন করে তাৎক্ষণিক সহায়তা পাওয়া সম্ভব।
অভিযোগের সঙ্গে অবশ্যই স্ক্রিনশট, সংশ্লিষ্ট লিংক, মেসেজ বা প্রমাণ যুক্ত করতে হবে। এতে তদন্তপ্রক্রিয়া দ্রুত এবং অপরাধী শনাক্ত করা সহজ হবে।
পুলিশ কীভাবে ব্যবস্থা নেয়
অভিযোগ পাওয়ার পর পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ইউনিট বিষয়টি যাচাই করে এবং প্রযুক্তিগতভাবে অপরাধীর ডিজিটাল অবস্থান শনাক্ত করে। গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়। প্রয়োজনে ফেসবুক, গুগল, ইনস্টাগ্রামসহ আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রমাণ সংরক্ষণ করা হয়। আর্থিক প্রতারণার ক্ষেত্রে পুলিশ ব্যাংক, বিকাশ, নগদ ও অন্যান্য এমএফএস প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রতারকদের লেনদেন বন্ধ করতে পারে।
দ্রুত সহায়তা পেতে করণীয়
পুলিশ যেন দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারে, এ জন্য ভুক্তভোগীর কিছু পদক্ষেপ জরুরি—
সাইবার অপরাধ ঠেকাতে পুলিশের পাশাপাশি নাগরিকেরও দায়িত্ব রয়েছে। কিছু সহজ পদক্ষেপে আপনি নিজেকে অনেক নিরাপদ রাখতে পারেন—
সাইবার অপরাধ এখন বাস্তব হুমকি। তবে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। বাংলাদেশ পুলিশের সাইবার ইউনিট দিনরাত কাজ করছে নাগরিকদের সুরক্ষায়। অনলাইন প্রতারণা বা হ্যাকিংয়ের শিকার হলে দেরি না করে পুলিশের সহায়তা নিন।
প্রকৌশলী মো. নাজমুল হুদা মাসুদ, রক্ষণাবেক্ষণ প্রকৌশলী, সাইবার সিকিউরিটি অ্যানালিস্ট, স্পেশাল ব্রাঞ্চ, বাংলাদেশ পুলিশ ও জয়েন্ট সেক্রেটারি (একাডেমিক)