বছর পনেরো আগেও অনেক ধরনের তথ্য মনে রাখতে পারতেন, আড্ডায় বিভিন্নজনের মন্তব্য, অনেক ঘটনা সাল-তারিখসহ বলতে পারতেন। আপনার স্মরণশক্তি নিয়ে মানুষজন প্রশংসা করত। সেই আপনি কি আজকাল মস্তিষ্কে দীর্ঘ মেয়াদে তথ্য ধরে রাখতে পারছেন না?
এই স্মৃতিশক্তি হারিয়ে ফেলা এখন আর বার্ধক্যের লক্ষণ নয়; বরং নবীনদের মধ্যেও এখন অতিমাত্রায় এই প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, অকালে এই স্মৃতিশক্তি হারিয়ে ফেলার পেছনে অনেকাংশে দায়ী স্মার্টফোনের প্রতি আসক্তি। তাই এই স্মৃতিনাশকে বলা হচ্ছে ‘ডিজিটাল অ্যামনেশিয়া’। ইউনিভার্সিটি অব বার্মিংহামের এক গবেষণায় বলা হচ্ছে, অনেক মানুষ তথ্য আত্মস্থ করার পরিবর্তে সেগুলো ইন্টারনেট বা সার্চ ইঞ্জিনে খোঁজে। সার্চ ইঞ্জিনে খোঁজার এই প্রবণতাকেই বলা হয় গুগল ইফেক্ট।
গুগল ইফেক্টের ফলে কী হয়
গুগল ইফেক্টের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব কতটা তা এখনো স্বীকৃত নয়। পেন ইউনিভার্সিটির এক গবেষণায় বলা হয়েছে যে ডিজিটাল অ্যামনেশিয়া এখনো বৈজ্ঞানিকভাবে স্বীকৃত নয়। তা না হলেও কগনেটিভ সায়েন্টিস্ট, অর্থাৎ যাঁরা ভাষাবিজ্ঞান, মনোবিজ্ঞান, স্নায়ুবিজ্ঞান, দর্শন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং নৃবিজ্ঞানের আলোকে মানুষের মন নিয়ে গবেষণা করেন, এমন বিজ্ঞানীরা সহমত প্রকাশ করেন যে মনে রাখার জন্য মস্তিষ্কের ওপর নির্ভরশীলতা কমলে তা মস্তিষ্কের নিউরনের কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেয়। এর ফলে মস্তিষ্কের উন্নয়ন ব্যাহত হয়। গুগল ইফেক্টের এই প্রভাবের কথা এক দশকেরও বেশি সময় ধরে চর্চিত।
গুগল ইফেক্ট কমিয়ে আনতে হলে
পুষ্টিকর খাবার, বিশেষ করে প্রয়োজনীয় প্রোটিন ও চর্বি খাদ্যতালিকায় থাকা প্রয়োজনীয়। মস্তিষ্কের সঠিক কর্মপদ্ধতির জন্য এই উপাদানগুলো প্রয়োজনীয়। ভিটামিন বি-১ ও বি-১২ স্মৃতিশক্তি তরতাজা রাখার জন্য কার্যকর।
তথ্যসূত্র: ডেইলি মেইল, দ্য গার্ডিয়ান