বিমানবন্দর থেকে শুরু করে বিমানের ককপিট—সবই চলে যাবে রোবটের হাতে। পাইলটবিহীন এয়ার ট্যাক্সি, রোবট নিয়ন্ত্রিত বিমানবন্দর এবং এয়ার শিপকে এখন বিজ্ঞান কল্পকাহিনির মতো মনে হতে পারে। কিন্তু ঘোষণা এসেছে, এ প্রযুক্তিগুলো ২০৩০ সালের মধ্যে পৃথিবীর অনেক দেশে ব্যবহৃত হতে শুরু করবে।
স্বয়ংক্রিয় বিমানবন্দর
২০৩০ সালের মধ্যে বিমানবন্দরগুলোর নকশা এমনভাবে করা হবে, যেখানে সবকিছু স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলতে পারবে। এ বিমানবন্দরে বসে অপেক্ষা করা খুবই বিরক্তিকর। এই সমস্যার নানান সমাধান থাকবে স্বয়ংক্রিয় বিমানবন্দরগুলোতে। স্বয়ংক্রিয় বিমানবন্দরের ভেতরে চেক-ইন রোবটের সঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করবেন যাত্রীরা। তাঁদের পাসপোর্টের বায়োমেট্রিক চিপ স্ক্যান করার পর স্ক্রিনে ভেসে উঠবে যাত্রীর নাম, জানানো হবে অভিবাদন।
বিমানবন্দরের নিরাপত্তা চেকপয়েন্ট দেখভাল করবে রোবট। বিমানবন্দরে আশপাশে কর্মীর সংখ্যা থাকবে খুবই কম। চেক-ইন তথ্য প্রদান থেকে শুরু করে খাবার পরিবেশন—সবই করবে রোবটরা। ২০২১ সালের একটি সমীক্ষা অনুসারে, প্রায় অর্ধেক গ্লোবাল এয়ারলাইনস এবং ৩২ শতাংশ এয়ারপোর্ট তাদের বিমানবন্দরে রোবোটিক নিয়ন্ত্রণ চালু করার কথা ভাবছে। ইতিমধ্যে দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ১২২টি স্মার্ট গেট ব্যবহার শুরু করেছে। এই গেটগুলোতে যাত্রীদের মুখ ও আইরিশ স্ক্যানিং করার মাধ্যমে পাসপোর্ট নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি চালু আছে। ২০১৮ সাল থেকে জাপানের কানসাই বিমানবন্দরে কেটি নামের একটি চেক-ইন রোবট কাজ করছে। দক্ষিণ কোরিয়ার ইনচিওন বিমানবন্দর পরিষ্কার এবং যাত্রীদের সহায়তা করছে রোবট।
হাইব্রিড এবং অল-ইলেকট্রিক প্লেন
২০৩০ সালে কম ও শূন্য কার্বন নিঃসরণের হাইব্রিড এবং অল-ইলেকট্রিক প্লেনগুলো আরও সহজলভ্য করে তোলার চেষ্টা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, হাইব্রিড এবং সম্পূর্ণ ব্যাটারিচালিত প্লেন ২০৩০ সালের দিকে স্বল্প দূরত্বের ফ্লাইট সেক্টরে আধিপত্য বিস্তার করবে। এতে ফ্লাইটের সময় কমে আসবে অনেকখানি। এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইউনাইটেড এবং এয়ার কানাডা—উভয়ই সুইডেনের হার্ট অ্যারোস্পেসে তাদের অর্থায়নে একটি হাইব্রিড-ইলেকট্রিক বিমান তৈরি করে। ২০২৮ সালের দিকে এগুলো ফ্লাইট পরিষেবা দিতে শুরু করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ওয়াশিংটনের ম্যাগনিএক্স ব্যাটারি-বৈদ্যুতিক, হাইব্রিড-বৈদ্যুতিক এবং হাইড্রোজেন-বৈদ্যুতিক বিকল্প শক্তির বিমান তৈরি করছে।
এ ছাড়া বাণিজ্যিক আকারে লাক্সারি এয়ারশিপ তৈরি করে ২০২৮ সালের মধ্যে চালুর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এর চারটি ইঞ্জিনই বৈদ্যুতিক হবে। ফলে এগুলো হবে শূন্য কার্বন নিঃসরণকারী বিমান। আকাশপথের আরও একটি বিস্ময় হবে সুপারসনিক জেট। গন্তব্যে পৌঁছে দিতে এটি হবে সবচেয়ে দ্রুতগতির আকাশ বাহন। সেখানে থাকবে জানালাবিহীন কেবিন।
পাইলটবিহীন এয়ার ট্যাক্সি
বিমানবন্দরের সুযোগ-সুবিধার মধ্যে যোগ হচ্ছে পাইলটবিহীন এয়ার ট্যাক্সি। এটি যানজট আর গরম থেকে মুক্তি তো দেবেই, সঙ্গে সময়ও বাঁচাবে। বেশ কিছু স্টার্ট-আপ এবং প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠান বিশ্বের প্রথম এয়ার ট্যাক্সি পরিষেবা চালু করার জন্য কাজ করছে।