হোম > প্রযুক্তি

স্কুলে এআই দিয়ে পড়াশোনা করছে শিক্ষার্থীরা

টি এইচ মাহির 

যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোর আলফা স্কুলে চালু হয়েছে এআইভিত্তিক পড়াশোনা। এটি এরই মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলে দিয়েছে। অনেকে এর ইতিবাচক দিকগুলো নিয়ে আলোচনা করছে। কেউ আবার সমালোচনাও করতে ছাড়ছে না। এই স্কুলে প্রাথমিক থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের এটি পড়ানো হচ্ছে।

প্রথাগত শিক্ষার বিপরীতে নতুন পদ্ধতি

আলফা স্কুলে পাঠদান হচ্ছে গতানুগতিক শিক্ষার বাইরে গিয়ে ভিন্ন এক পদ্ধতিতে। শিক্ষার্থীরা দিনে মাত্র দুই ঘণ্টা এআই টুলের মাধ্যমে গণিত, ইতিহাস ও অন্যান্য শিক্ষামূলক বিষয় শেখে। বাকি সময় হাতে-কলমে জীবনমুখী শিক্ষা, কর্মশালা ও সৃজনশীল কার্যক্রম চলে। যেমন এখানে শিক্ষার্থীরা চালকবিহীন গাড়ির প্রোগ্রামিং শেখে, ট্রাক চালানোর কার্যক্রমে অংশ নেয়, দলগত কাজ এবং সামাজিক দক্ষতা অর্জনের ক্লাসও করে।

শিক্ষকেরা এখানে মূলত ‘গাইড’ হিসেবে থাকেন। তাঁরা শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন বিষয়ে সহায়তা করেন এবং এআইয়ের মাধ্যমে শেখার প্রক্রিয়াকে গেমের মতো আকর্ষণীয় এবং উৎসাহমূলক করে তোলেন। শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার অগ্রগতি সঙ্গে সঙ্গে দেখতে পায়, ব্যাজ ও পয়েন্ট অর্জন করে। এটি ভিডিও গেম খেলার আনন্দের মতো বলে শিক্ষার্থীদের মস্তিষ্কে ডোপামিন নিঃসরণ হয়।

প্রযুক্তি ও গেমের সমন্বয়

আলফা স্কুলে শিক্ষার্থীরা পায় রিয়েল-টাইম অগ্রগতি ট্র্যাকিং, ব্যক্তিগত চ্যালেঞ্জের স্তর এবং তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া। তাদের এ ধরনের ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে তাৎক্ষণিকভাবে পুরস্কার দেওয়া হয়। প্রতিদিন শিক্ষার্থীরা দুই ঘণ্টা এআই শিক্ষকের সঙ্গে পড়াশোনা করে এবং ২৫ মিনিটের পোমোডোরো বা সময় ব্যবস্থাপনার সেশনে অংশ নেয়। বিভিন্ন শিক্ষামূলক গেমের মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয় শিক্ষার্থীরা অনুশীলন করতে পারে। স্কুলটি এই গেম ডিজাইনে ১০০ মিলিয়নের বেশি বিনিয়োগ করেছে।

ফলাফল ও দাবি

আলফা স্কুলের দাবি, তাদের শিক্ষার্থীরা অন্যান্য স্কুলের শিক্ষার্থীর তুলনায় দ্বিগুণ দ্রুত শিখতে সক্ষম। উৎসাহমূলক শিক্ষার ফলে শিক্ষার্থীরা মনোযোগী ও দক্ষ হয়েছে। জাতীয় পরীক্ষায় তারা ভালো করছে।

সমালোচনা ও প্রশ্ন

অনেকে এই উদ্যোগকে এআইয়ের প্রাথমিক প্রয়োগ হিসেবে স্বাগত জানিয়েছে। তবে কিছুসংখ্যক শিক্ষাবিদ ও অভিভাবক স্কুলের এই শিক্ষাপদ্ধতির সমালোচনা করেছেন। তাঁরা প্রশ্ন তুলেছেন, প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা কীভাবে সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা, সহযোগিতা এবং সামাজিকীকরণে পারদর্শী হবে। এ ছাড়া এআই সফটওয়্যার ব্যবহারের সময় ডেটা নিরাপত্তা এবং স্কুলের উচ্চ বার্ষিক ফি নিয়েও তাঁদের প্রশ্ন রয়েছে।

বিশেষজ্ঞ মতামত

স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনারেটিভ এআই ফর এডুকেশন হাবের পরিচালক ক্রিস অ্যাগনিউ বলেন, ‘আলফা স্কুল যে সফটওয়্যার ব্যবহার করছে, তার কিছু উপাদান বহু বছর ধরে সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষাক্ষেত্রে স্বপরিচালিত শিক্ষার মডেলে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। আইএক্সএল ও ম্যাথ একাডেমির প্রোগ্রামও এ ধরনের পদ্ধতি ব্যবহার করে।’

এআইচালিত আলফা স্কুলের উদ্ভাবনী শিক্ষাপদ্ধতি থেকে বোঝা যায়, ভবিষ্যতের স্কুল কেমন হতে পারে। পড়াশোনা শুধু বইতে আটকে থাকবে না, তা হবে সৃজনশীল, বাস্তবমুখী ও প্রযুক্তিনির্ভর। তবে সমালোচনা ও নিরাপত্তার বিষয়ে প্রশ্ন থাকলেও এ ধরনের শিক্ষাপদ্ধতি শিক্ষার্থীদের মনোযোগী, দক্ষ ও উদ্ভাবনী হওয়ার পথে এক নতুন দিক উন্মোচন করেছে।

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

প্রযুক্তির দখল কার হাতে

গুগলের নতুন এআই টুল

বৈদ্যুতিক জাহাজ নির্মাণশিল্পে চীনের আধিপত্য

পাসওয়ার্ডের নিরাপত্তা কতটুক: জেনে নিন বিশ্বে সর্বাধিক ব্যবহৃত পাসওয়ার্ড

ভুয়া ওয়েবসাইট চেনার উপায়

আগুনের ঝুঁকিমুক্ত ব্যাটারি বানালেন বিজ্ঞানীরা

উসকানিমূলক কনটেন্ট বন্ধে কঠোর অবস্থানে সরকার

উসকানিমূলক কনটেন্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মেটাকে বিটিআরসির চিঠি

বিবিএসের জরিপ: ইন্টারনেটের আওতার বাইরে দেশের ৪৪% পরিবার

ডিজিটাল রূপান্তর মানে শুধু অ্যাপ নয়, রাষ্ট্রের ভিত্তি পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া: ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব