যুক্তরাষ্ট্র সরকার ও প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর প্রতি গভীর অনাস্থার কারণে ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) ওপেন সোর্স এবং লিনাক্সের প্রতি সমর্থন দিন দিন বেড়ে চলেছে। গত কয়েক মাসে ফ্রান্সের লিয়ন শহর, জার্মানির শ্লেসভিগ-হোলস্টেইন রাজ্য এবং ডেনমার্কসহ একাধিক স্থানীয় সরকার মাইক্রোসফট উইন্ডোজ ও অফিস সফটওয়্যার থেকে সরে লিনাক্স ও ওপেন সোর্স সফটওয়্যারে ব্যবহার শুরুর উদ্যোগ নিয়েছে।
এমন সময়ে লুক্সেমবার্গভিত্তিক ইউরোপীয় ওপেন সোর্স জায়ান্ট ‘সুস’ সামনে এনেছে তাদের ‘সোভেরেইন প্রিমিয়াম সার্পোট’ নামের বিশেষ সাপোর্ট প্যাকেজ। ইউরোপীয় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও সরকারি সংস্থাগুলোর তথ্যভিত্তিক নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব বজায় রাখতে এই সেবা চালু করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
বর্তমানে ইউরোপীয় তথ্যের ৯০ শতাংশই ইউরোপের বাইরের, প্রধানত মার্কিন কোম্পানির সার্ভারে সংরক্ষিত। এতে ইউরোপীয় প্রতিষ্ঠানগুলো তথ্যের গোপনীয়তা, অর্থনৈতিক চাপে পড়ার আশঙ্কা ও বিদেশি নজরদারির ঝুঁকিতে রয়েছে।
গবেষণাপ্রতিষ্ঠান আইডিসির তথ্য বলছে, ইউরোপে ক্লাউড প্রযুক্তি ব্যবহারকারী ৮৪ শতাংশ প্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যে ‘সোভেরেইন ক্লাউড’ বা সার্বভৌম ক্লাউড সলিউশন ব্যবহার করছে বা সেটি ব্যবহারের পরিকল্পনা করছে।
প্রতিষ্ঠানটির ইউরোপীয় ক্লাউড কৌশলবিষয়ক গবেষণা পরিচালক রাহিয়েল নাসির বলেন, ‘২০২৫ সাল হবে এক মোড় পরিবর্তনের বছর। বাড়তে থাকা ভূরাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ডিজিটাল সার্বভৌমত্বকে প্রতিষ্ঠানের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে পরিণত করেছে।’
এই বাস্তবতাকেই সামনে রেখে সুস তাদের নতুন প্রিমিয়াম সাপোর্ট সেবা চালু করেছে, যা ইউরোপের অভ্যন্তরে তথ্যের গোপনতা ও প্রযুক্তি নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করবে।
সুসের প্রধান নির্বাহী ডির্ক-পিটার (ডিপি) ফান লিউয়েন বলেন, ‘অনেকের কাছে এটি নতুন বিষয় মনে হলেও সুস দীর্ঘদিন ধরেই ডিজিটাল সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করতে কাজ করছে। এই অভিজ্ঞতা থেকে আমরা বুঝেছি, তিনটি বিষয়ের সমন্বয় দরকার—তথ্য, প্রযুক্তি এবং কার্যক্রম। এর মধ্যে “অপারেশন” বা কার্যক্রমই সবচেয়ে জটিল এবং অবহেলিত ক্ষেত্র।’
নতুন সেবার বৈশিষ্ট্য
সুসের এই প্যাকেজটি মূলত এমন সব ইউরোপীয় প্রতিষ্ঠান ও সরকারি সংস্থার জন্য, যারা মূলত কঠোর তথ্য সংরক্ষণ, গোপনীয়তা ও কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করতে চায়। এই সেবার আওতায় থাকছে—
প্রাথমিকভাবে এই সেবা প্রতিরক্ষা, সরকার এবং আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার মতো উচ্চ নিরাপত্তা ও কমপ্লায়েন্স-নির্ভর সেক্টরের জন্য ডিজাইন করা হলেও, ইইউর যেকোনো প্রতিষ্ঠান এটি ব্যবহার করতে পারবে।
তথ্যসূত্র: জেডনেট