হোম > প্রযুক্তি

পাহারাদার কলম

মইনুল হাসান 

এ বছরের ৩০ জুলাই চীনের হাইনান, সাংহাই, নানচিং ও ইউনান প্রদেশের বিভিন্ন প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের হাতে বিনা মূল্যে একটি করে কলম ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। যেমন-তেমন কলম নয় এটি। সঙ্গে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং খুব ছোট্ট একটি ক্যামেরার সমন্বয়ে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির আরেকটি বিস্ময়, বলা চলে স্মার্ট পেন।

এই স্মার্ট কলম এতটাই স্মার্ট যে শুধু লেখার কাজই করবে না, শিক্ষার্থীরা ঠিকঠাক লেখাপড়া করেছে কি না, তার তদারকিও করবে এবং তাৎক্ষণিকভাবে শিক্ষককে জানিয়ে দেবে। নিজের ঘরে, অফিসে, যানবাহনে বা রেস্টুরেন্টে-যেকোনো জায়গায় বসেই শিক্ষক তাঁর কম্পিউটারের পর্দায় দেখতে পাবেন তাঁর স্মার্ট শিক্ষার্থী কখন, কতটুকু সময় পড়ালেখার কাজে ব্যয় করেছে এবং খাতায় শুদ্ধ, নাকি ভুল লিখছে, তা-ও! কলমগুলো গ্রীষ্মের ছুটির শুরুতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। যাতে এ সময়টা তারা বাড়ির কাজে অবহেলা না করে এবং নিজেদের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে পারে। দেশটির শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশেই এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ছুটি শেষে শিক্ষার্থীদের কলমগুলো ফেরত দিতে হবে।  

এমন বুদ্ধিমান কলম সাংবাদিকদের কলমকে সচল করেছে। কয়েকটি দৈনিকে সম্পাদকীয় কলামে খবরটি গুরুত্ব পেয়েছে। কিছু সংবাদপত্র এমন উন্নত প্রযুক্তিকে যুক্তি দিয়ে তারিফ করতে উচ্চকণ্ঠ হলেও, কেউ কেউ ব্যাপারটিকে ঠিক মেনে নিতে পারছে না।

নানচিং থেকে প্রকাশিত দৈনিক ‘সিঅ্যান্ডই কুয়াইবাও’ পত্রিকাটি তাদের কলামে কলমের প্রশংসায় পঞ্চমুখ না হলেও, এর ভালো দিকটি প্রকাশ করেছে। তারা বলেছে, এমন স্মার্ট কলম ছাত্র এবং শিক্ষকদের কাজকে সহজ করে দেবে। এ পত্রিকার মাধ্যমে নানচিং শিক্ষা প্রযুক্তি ও সরঞ্জাম কেন্দ্রের পরিচালক জানিয়েছেন, চীনের শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে শিক্ষকদের কড়া তাগিদ দেওয়া হয়েছে যেন সব শিক্ষার্থীর বাড়ির কাজ খুঁটিয়ে দেখা হয়, ভুল থাকলে তা যেন সংশোধন করা হয়।  

চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমের প্রদেশ সিচুয়ান থেকে প্রকাশিত দৈনিক ‘চেংডু শাংবাও’ লিখেছে, ‘পড়াশোনা তদারকি করার জন্য সব সময় পেছনে লেগে থাকা কোনো শিশুই পছন্দ করবে না।’ পিকিং থেকে প্রকাশিত দৈনিক ‘সিনজিংবাও’ এবং ‘গুয়াংমিং রিবাও’ আশঙ্কা করছে যে শিক্ষার্থীদের পেছনে এমন পাহারা লাগিয়ে দেওয়া হিতে বিপরীত হতে পারে। সতর্ক করে বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের সার্বক্ষণিক তদারকির আওতায় রাখা অনেক বেশি ‘বাড়াবাড়ি’ হবে। এমনিতেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং ভিডিও গেমের জন্য বরাদ্দ করা সময় বেশ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। তার ওপর সার্বক্ষণিক নজরদারি শিশু-কিশোর শিক্ষার্থীদের একধরনের চাপের মধ্যে রাখবে এবং মানসিক অবসাদ তাদের স্বাভাবিক বিকাশকে বিঘ্নিত করবে। ফলে তাদের দক্ষতা বাড়বে কি না, তা নিশ্চিত করে বলা না গেলেও, এটা নিশ্চিত যে তারা হাড্ডি-মাংসের রোবটে পরিণত হবে। শিক্ষকদেরও অবসর বা বিনোদনের সময় কমে যাবে। শিক্ষার্থীর বাড়ির কাজ দেখতে নিজের বাড়িতে বসেও বাড়তি কাজ করতে হবে; অর্থাৎ তাঁরাও নজরদারির আওতামুক্ত থাকতে পারছেন না।

প্রখ্যাত দৈনিক দুটিতে এমন ‘পাহারাদার কলম’কে বলা হয়েছে শিক্ষার্থীদের জন্য ‘বুদ্ধিমান হাতকড়া’।

চর্চা ‘লার্নিং থ্রো প্র্যাকটিস’ধারণাকে প্রাধান্য দেয়

মিরর ব্যাকটেরিয়া কি আধুনিক পৃথিবীর নতুন মারণাস্ত্র

অনলাইনে কেনাকাটার নিরাপদ উপায়

গুগলের নতুন ফিচার: সাধারণ হেডফোনই হবে রিয়েল–টাইম অনুবাদক

ডিজিটাল উদ্যোক্তা প্রকল্প: পাঁচ বছরে অর্ধেক কাজ, ব্যয় বাড়ল ১৭৮ কোটি

যুক্তরাষ্ট্রে মাকে হত্যার পর ছেলের আত্মহত্যা, চ্যাটজিপিটির বিরুদ্ধে অভিযোগ পরিবারের

মিসড কল মেসেজ ও ছবি থেকে অ্যানিমেশনসহ যেসব ফিচার আনল হোয়াটসঅ্যাপ

অস্ট্রেলিয়ায় ২ লাখ অ্যাকাউন্ট বন্ধ: ‘এটা কাজ করছে না ব্রো’— প্রধানমন্ত্রীকে কটাক্ষ জেন-জি’দের

সকালে ঘুম ভেঙে অস্ট্রেলিয়ার লাখো শিশু দেখবে তাদের ‘আইডি’ উধাও

ভারতে ১৭.৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে মাইক্রোসফট