দিনটা মনে রাখার মতোই হতে পারত মাহমুদুল হাসান জয়ের কাছে। ২৫তম জন্মদিনে পেতে পারেন টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি। কাছাকাছি প্রায় চলেই গিয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত সেটা হলো না। দিন শেষে ডাবল সেঞ্চুরি করতে না পারার আক্ষেপ ঝরেছে তাঁর কণ্ঠে।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ক্যারিয়ারসেরা স্কোর গতকাল দ্বিতীয় দিনে করে ফেলেছিলেন জয়। ডাবল সেঞ্চুরি করতে আজ তৃতীয় দিনে দরকার ছিল ৩১ রান। কিন্তু ২৫ বছর বয়সী এই ব্যাটার যোগ করতে পেরেছেন কেবল ২ রান। ২৮৬ বলে ১৭১ রান করে আউট হয়েছেন তিনি। তৃতীয় দিন শেষে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে সংবাদ সম্মেলনে এসে জয়ের কথায় ফুটে উঠেছে, ডাবল সেঞ্চুরি করতে না পারায় তাঁর কী যে আফসোস হচ্ছে। ২৫ বছর বয়সী এই ওপেনার বলেন, ‘২০০ করতে না পারায় অবশ্যই হতাশ। যদি চালিয়ে যেতে পারতাম, জীবনে প্রথমবার ২০০ হতো। কিন্তু খেলতে পারিনি। তাই ২০০ করার সুযোগ হারিয়েছি।
টস জিতে আগে ব্যাটিং নিয়ে আয়ারল্যান্ড ২৮৬ রানে গুটিয়ে গেছে। জবাবে বাংলাদেশ ৮ উইকেটে ৫৮৭ রানে প্রথম ইনিংসের খেলা ঘোষণা করেছে। ইনিংস সর্বোচ্চ ১৭১ রান এসেছে জয়ের ব্যাট থেকেই। দল ভালো অবস্থায় যেমন তিনি খুশি, একই সঙ্গে ডাবল সেঞ্চুরির আক্ষেপে পুড়ছেন। আজ তৃতীয় দিন শেষে সংবাদ সম্মেলনে ২৫ বছর বয়সী এই ব্যাটার বলেন, ‘সব মিলে খুশি। অনেক দিন পর দলে ফিরেছি। বড় ইনিংস খেলেছি অনেক দিন পর। ডাবল সেঞ্চুরিটা হলে আরও ভালো লাগত।’
এ বছরের এপ্রিলে সিলেটে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সবশেষ টেস্ট খেলেন জয়ের। বাংলাদেশ এরপর ক্রিকেটের রাজকীয় সংস্করণে তিন ম্যাচ খেললেও সুযোগ মেলেনি তাঁর। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিলেটেই সাড়ে ছয় মাস পর টেস্টে ফিরলেন তিনি। বাজে ফর্মের কারণে এক সময় যে দল থেকে বাদ পড়েছিলেন, সেটা এখন জয়ের কাছে অতীত। সিলেট টেস্টের তৃতীয় দিন শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘যা চলে গেছে, তা নিয়ে এখন চিন্তা করি না। সামনে যা আছে, চিন্তা করছি সেটা নিয়ে। কারণ, অতীত তো অতীত। আরও কীভাবে উন্নতি করা যায়, সেটা নিয়ে চিন্তা করছি।’
দ্বিতীয় উইকেটে মুমিনুল হক ও জয় গড়েছেন ১৭৩ রানের জুটি। আজ জয়ের আউটে ভাঙে এই জুটি। ব্যারি ম্যাকার্থির বল জয়ের ব্যাট ছুঁয়ে পৌঁছে যায় আইরিশ উইকেটরক্ষক লরকান টাকারের হাতে। যেভাবে আউট হয়েছেন, সেটা নিয়েও আফসোস জয়ের, ‘দুই ধরনের চিন্তা কাজ করছিল মাথায়। আরেকটু যদি কাভার করে খেলতাম, তাহলে হয়তোবা মিসটা (ডাবল সেঞ্চুরি) হতো না।’
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে জয় টেস্টেই শুধু নিয়মিত খেলেন। এর আগে তিনটি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেললেও সেই ম্যাচগুলো ২০২৩ সালে এশিয়ান গেমসে খেলেছিলেন তিনি। ক্যারিয়ারে এখন পর্যন্ত ১৯ টেস্টে ২৭.০২ গড়ে করেন ৯৪৬ রান। ক্রিকেটের রাজকীয় সংস্করণে করেছেন ২ সেঞ্চুরি ও ৪ ফিফটি। সিলেটে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টের আগে জাতীয় ক্রিকেট লিগের (এনসিএল) টি-টোয়েন্টি ও চার দিনের ক্রিকেটেও তিন অঙ্ক ছুঁয়েছেন।