করোনা থেকে সেরে ওঠার পর অনেকেরই ঘ্রাণশক্তি ফিরে পেতে অস্বাভাবিক দীর্ঘ সময় লাগছে। এক্ষেত্রে তাঁদেরকে ঘ্রাণের প্রশিক্ষণ নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন গবেষকরা। মস্তিষ্কের ঘ্রাণ শনাক্তকারী অংশ এবং অলফ্যাক্টরি স্নায়ুতন্ত্রকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরানোর একটি কৌশল এই প্রশিক্ষণ।
যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব ইস্ট অ্যাঞ্জেলিয়ার নরউইচ মেডিকেল স্কুলের অধ্যাপক কার্ল ফিলপটের নেতৃত্বে একদল গবেষক এ নিয়ে একটি দিকনির্দেশনা মূলক পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন।
তাদের গবেষণায় উঠে এসেছে, ঘ্রাণশক্তি ফিরিয়ে আনতে কড়া ঘ্রাণযুক্ত জিনিস নিয়মিত দিনে দু’বার করে শুঁকতে হবে। এভাবে নিয়মিত ঘ্রাণ নিলে দ্রুতই ঘ্রাণশক্তি ফিরে আসবে।
এটি এমন এক প্রক্রিয়া যে কেউ যদি মাসব্যাপী এই প্রক্রিয়া অনুসরণ করে তাহলে তাঁর মস্তিষ্ক একসময় আলাদা ঘ্রাণ শনাক্তে সক্ষম হয়ে ওঠে। এটি খুবই সুলভ এবং সহজ উপায়। সবচেয়ে বড় বিষয়– এর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই।
গবেষকরা বলছেন, খুবই পরিচিত এবং সহজে পার্থক্য করা যায় এমন জিনিসের ঘ্রাণ নিতে হবে। সাধারণভাবে কমলা, পুদিনা, আদা এবং কফির ঘ্রাণ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা। এ স্থলে লেবু, ধনিয়াপাতা, তেজপাতা, সরিষার তেল ইত্যাদি নিত্যখাদ্যবস্তুও হতে পারে।
অধ্যাপক কার্ল ফিলপটের দলের গবেষণায় দেখা গেছে, করোনা থেকে সেরে ওঠা ৯০ শতাংশ মানুষ ছয়মাস পর তাঁদের ঘ্রাণশক্তি পুরোপুরি ফিরে পেয়েছেন।
এরপরও যারা ঘ্রাণ পান না তাদের এই ঘ্রাণ নেওয়ার প্রশিক্ষণ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন গবেষকরা।
ঘ্রাণশক্তি ফিরিয়ে আনতে অনেক চিকিৎসক ‘কর্টিকোস্টেরয়েডস’ নামক স্ট্রেরয়েড গ্রহণের পরামর্শ দেন। ওষুধটি শরীরে প্রদাহ কমায়। হাঁপানি রোগীদের চিকিৎসার ক্ষেত্রেও এটি ব্যবহৃত হয়। কিন্তু এটির উচ্চ রক্তচাপ, মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়ার মতো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও রয়েছে।
অধ্যাপক কার্ল ফিলপট বলেন, আমাদের পরামর্শ হলো, করোনা থেকে সেরে ওঠার পর যারা ঘ্রাণশক্তি পাচ্ছেন না তাঁদেরকে এই ওষুধ ব্যবহার করতে দেওয়া ঠিক নয়। তাদের বরং ঘ্রাণের প্রশিক্ষণ নেওয়া উচিত।
ইন্টারন্যাশনাল ফোরাম অব অ্যালার্জি অ্যান্ড রাইনোলজি সাময়িকীতে এ গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে।