মহাকাশে আবিষ্কৃত দু’টি গ্রহে বিপুল পরিমাণ পানি রয়েছে বলে আশা করছেন বিজ্ঞানীরা। গ্রহ দুটি পৃথিবী থেকে ২১৮ আলোকবর্ষ দূরে লিরা নক্ষত্রপুঞ্জে অবস্থিত। এক আলোকবর্ষ বলতে বোঝায়, এক বছরে আলো যে দূরত্ব অতিক্রম করে। যেখানে আলোর গতি সেকেন্ডে ১ লাখ ৮৬ হাজার মাইল!
গত ১৫ ডিসেম্বর বিজ্ঞান সাময়িকী নেচার অ্যাস্ট্রোনমিতে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রযুক্তি বিষয়ক সংবাদমাধ্যম সি-নেটের প্রতিবেদন অনুযায়ী, নাসার হাবল এবং অবসরে পাঠানো স্পিৎজার স্পেস টেলিস্কোপ ব্যবহার করে গ্রহ দু’টি আবিষ্কার করা হয়েছে। গ্রহ দুটির নাম দেওয়া হয়েছে—কেপলার-১৩৮সি এবং কেপলার-১৩৮ ডি। একটি লাল বামন নক্ষত্রকে গ্রহ দু’টি প্রদক্ষিণ করছে। গ্রহ দুটি আয়তনে পৃথিবীর প্রায় দেড়গুণ এবং ভর দ্বিগুণের বেশি।
মন্ট্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বিয়ন বেনেক এবং গবেষণাপত্রের সহ-লেখক এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমরা আগে ভেবেছিলাম, যেসব গ্রহ পৃথিবীর চেয়ে একটু বড় সেগুলো মূলত ধাতু এবং শিলা দিয়ে ভর্তি। এ কারণেই আমরা সেগুলোকে সুপার-আর্থ বলেছিলাম।’ নাসার অনলাইন এক্সোপ্ল্যানেট ক্যাটালগ অবশ্য এখনো কেপলার ডি–কে শিলার গ্রহ হিসেবেই ধারণা করছে।
বিয়ন বেনেক আরও বলেন, ‘আমরা এখন দেখিয়েছি যে, কেপলার-১৩৮সি এবং কেপলার-১৩৮ডি প্রকৃতিতে বেশ ভিন্ন। এগুলোর সমগ্র আয়তনের একটি বড় অংশ সম্ভবত পানি। এই প্রথমবার বেশ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে এই দুটি গ্রহকে পানি ভর্তি গ্রহ হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে।’
তবে এই তথাকথিত জলজগতে মহাসাগর থাকবে বলে আশা করা যায় না। কারণ হিসেবে গবেষণা দলের প্রধান মন্ট্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডির ছাত্রী ক্যারোলিন পিয়ালেট বলেন, ‘কেপলার-১৩৮ সি এবং কেপলার-১৩৮ ডি–এর বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা সম্ভবত পানির স্ফুটনাঙ্কের ওপরে। আমরা আশা করছি, এই গ্রহগুলোতে বাষ্প দিয়ে তৈরি একটি ঘন বায়ুমণ্ডল রয়েছে। তবে সেই বাষ্পীয় বায়ুমণ্ডলে উচ্চ চাপে তৈরি হওয়া তরল পানিও থাকতে পারে।’