বিদেশে বিএনপির লবিস্ট নিয়োগের অভিযোগকে নাকচ করে দিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘আমি স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, আমরা যা কিছু করি দেশকে রক্ষার জন্য করি। দুর্বৃত্তদের হাত থেকে দেশকে রক্ষার জন্য করি। তার মানে এই না যে, আমরা লবিস্ট নিয়োগ করেছি।’
আজ মঙ্গলবার বিকেলে গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে ফখরুল এ কথা বলেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য কি মিথ্যা, এমন প্রশ্ন করা হলে জবাবে তিনি বলেন, ‘কি মনে হয়? সব মিথ্যা।’
এদিন সকালে রাজধানীর আগারগাঁও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে এক অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের কাছে যথেষ্ট তথ্য আছে, বিএনপি অনেকগুলো লবিস্ট নিয়োগ করেছে। বিএনপি যে কয়টা লবিস্ট নিয়োগ করেছে সেটা কিন্তু খুবই অন্যায়। এর মূল উদ্দেশ্যটা দেশের ক্ষতি।’
সোমবার রাতে দলের স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভার সিদ্ধান্ত জানাতে এই সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়। ১০ জানুয়ারি সস্ত্রীক করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর উত্তরার বাসায় আইসোলেশনে থাকার পর করোনামুক্ত হয়ে এই প্রথম গণমাধ্যমের মুখোমুখি হলেন বিএনপি মহাসচিব।
সভার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে নির্বাচন কমিশন আইন প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, এই সংসদ জনগণের বৈধ ভোটে নির্বাচিত নয়। এ কারণে বিএনপি মনে করে এই ধরনের আইন করার নৈতিক অধিকার এই সংসদের নাই। গোপনীয়তার সঙ্গে তাড়াহুড়ো করে এই আইন প্রণয়নের চেষ্টা আওয়ামী লীগের জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে ক্ষমতায় টিকে থাকার নীলনকশামাত্র। বিএনপি মনে করে দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে কোনো নির্বাচন কমিশনেই অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে না, যদি না নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার থাকে। বর্তমান সরকারের পদত্যাগ এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। এটাই একমাত্র পথ, এর কোনো বিকল্প নেই। এই লক্ষ্যে সব রাজনৈতিক দল, সংগঠন, ব্যক্তি ও জনগণের ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে ১২টি শীর্ষ মানবাধিকার সংগঠন জাতিসংঘ মিশনে র্যাবের প্রতি নিষেধাজ্ঞার দাবি জানিয়ে যে চিঠি দিয়েছে, বিএনপি বিষয়টি পর্যালোচনা করে জাতিসংঘ খতিয়ে দেখবে এই মন্তব্যে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে। নেতারা মনে করে আওয়ামী লীগ সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য হত্যা, খুন, গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের জন্য র্যাবসহ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যবহার করে বাংলাদেশকে ভয়াবহ ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে এবং এর সুদূরপ্রসারী প্রভাব বাংলাদেশের নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা, অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করে। এর দায় সরকারকেই নিতে হবে।