জনগণকে জিম্মি করে কতিপয় রাজনৈতিক দল পানি ঘোলা করার চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। এ বিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশের মানুষকে জিম্মি করে কতিপয় রাজনৈতিক দল তারা আজকে ফয়দা লোটার চেষ্টা করছে, পানি ঘোলা করে তারপরে মাছ শিকার করার চেষ্টা করছে। এদিকে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে।’
আজ শনিবার রাজধানীর গোপীবাগে এক কর্মিসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরা উপলক্ষে এই সভার আয়োজন করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি।
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘একাত্তরে স্বাধীনতার অর্জন আর চব্বিশে কথা বলার অধিকার এই দেশের জনগণ রক্ত দিয়ে আদায় করেছে। সে অধিকার আজকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।’
দেশ অস্থিতিশীল করতে সাজানো ছকে হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে—এমন অভিযোগ তুলে আব্বাস বলেন, ‘অস্থিতিশীল করার মতো ঘটনা আমরা ঢাকা শহরে হতে দেব না। যারা করতে আসবে তাদের আমরা প্রতিহত করব।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের নেতা তারেক রহমান সাহেব যখন বাংলাদেশে আসবেন... ঘোষণার পরে একটা হত্যাকাণ্ড হলো তারপর পরপর কয়েকটা ধারাবাহিক ঘটনা ঘটল। এটার মানে হলো এটা একটা সাজানো একটি ছক।’
একটি মহল দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারকে হরণ করতে চায় অভিযোগ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘যেটা আমরা একাত্তর সালে অর্জন করেছি, সেই গণতান্ত্রিক অধিকারকে হরণ করতে দেওয়া যাবে না। আমরা আমাদের ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করবই। নির্বাচন বানচালের যেকোনো ষড়যন্ত্র করার চেষ্টা করবে, তাদের বিরুদ্ধে আমরা নির্বাচনের মাধ্যমে জমা দেব। এই দেশে নির্বাচন হবে, নির্বাচন হতে হবে।’
তারেক রহমানের দেশে আসার প্রস্তুতির কথা জানিয়ে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আমাদের নেতা দেশে আসছেন। মানে হলো গণতন্ত্র দেশে ফেরত আসছে। এই কথাটা মাথায় রাখতে হবে। উনি গণতন্ত্র নিয়ে আসছেন, উনি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবেন। বহু লোক বহু কথা বলছেন, কোনো কথায় বিভ্রান্ত হবেন না।’
একটি দলের দিকে ইঙ্গিত করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘দেশের যারা ভালো চায় না, দেশকে ভালোবাসে না—তারা দেখতে মানুষের মতো কিন্তু মানুষরূপী শয়তান। এরা ’৪৭ সালে পাকিস্তানের বিরোধিতা করেছে, ’৭১ সালে বাংলাদেশের বিরোধিতা করেছিল। তারা দেশের শান্তি চায় না। তারা কিছুদিন চুপ থাকলেও আবার তাদের নখ ও বিষদাঁত বিকশিত হচ্ছে। তাদের কার্যক্রম খুবই ধারাবাহিক।’
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘গণতন্ত্রের সামনে অগণতান্ত্রিক শক্তি টিকে থাকতে পারবে না। যাঁরা ষড়যন্ত্র করছেন, সাবধান হয়ে যান। এ দেশের মানুষ আপনাদের সম্পর্কে জানে। আজকে কতগুলো পত্রিকা অফিস জ্বালিয়ে দিলেন, কতগুলো প্রতিষ্ঠান পুড়িয়ে দিলেন—এরা কারা? ওরা কি দেশকে ভালোবাসে। এরা জাতির শত্রু, এরা দেশের শত্রু। এদের থামাতে হবে।’
সরকারের ভূমিকার সমালোচনা করে বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ‘আমি সরকারকে বলতে চাই আপনাদের দুর্বলতাটা কোথায়? আমরা যখন এই সরকারপ্রধানের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছি...বারবার বলেছি আপনাদের জন্য আমরা সহযোগিতার হাত প্রসারিত করেছি। কিন্তু আপনারা সেই সহযোগিতার হাত গ্রহণ করেন নাই। আপনারা দেশবিরোধী চক্রের সঙ্গে তাদের সঙ্গে থেকে দেশকে ধ্বংস করার জন্য আছেন বলে আমি মনে করছি। এত ঘটনা ঘটছে কোথায়? কোথায় গ্রেপ্তার? কোথায় এই আইন প্রয়োগকারী সংস্থা? কাউকে মাঠে দেখা যাচ্ছে না।’
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্যসচিব তানভীর আহমেদ রবিনের সভাপতিত্বে সভায় ঢাকা-৫ আসনের প্রার্থী নবী উল্লাহ নবী, ৬ আসনের প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন, ৭ আসনের প্রার্থী হামিদুর রহমান হামিদ, ৯ আসনের প্রার্থী হাবিবুর রশিদ হাবিব, ঢাকা-১০ আসনের প্রার্থী শেখ রবিউল আলমসহ আরও অনেকে বক্তব্য দেন।