শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের অধীনে বিএনপি নির্বাচনে যাবে না জানিয়ে দলটির নেতারা বলছেন, এই সরকারকে সরাতে চায় বিএনপি। সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে সরকারকে বিদায় করতে ইশতেহার তৈরি করা হচ্ছে। আজ শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এমন পরিকল্পনার কথা জানান দলটির নেতারা।
যশোর জেলা যুবদলের সিনিয়র সহসভাপতি বদিউজ্জামান ধনি হত্যার প্রতিবাদে ঢাকা মহানগর (উত্তর ও দক্ষিণ) যুবদল এই সমাবেশের আয়োজন করে।
সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতিতে ওবায়দুল কাদের কোনো সাবজেক্ট না, হাছান মাহমুদও কোনো বিষয়বস্তু না। বিষয়বস্তু হলো একজন, তাঁর নাম শেখ হাসিনা।’ তিনি বলেন, ‘বিএনপি একটা ইশতেহার তৈরি করছে শেখ হাসিনাকে কীভাবে বিদায় দেওয়া যায়, কীভাবে তাঁকে ক্ষমতা থেকে নামানো যায়।’
গয়েশ্বর বলেন, ‘অনেকে বলছেন, বাংলাদেশের অবস্থা নাকি শ্রীলঙ্কার মতো হবে, কিন্তু আমি বিশ্বাস করি না। এমন তো হতে পারে বাংলাদেশে যে ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে তখন শ্রীলঙ্কার ঘটনা মানুষ ভুলে যাবে। আর কোনো রিঅ্যাকশন নয়, এখন থেকে অ্যাকশন। অধিকার আদায়ে কথা বললে জেলখানায় নেবেন, নিতে পারেন কিন্তু আপনারাও (সরকার) সেই জেলখানায় যেতে পারেন কি না, একটু ভাবেন। লোকে বলে আপনারা নাকি আন্তর্জাতিক আদালতে হাজিরা দিতে চান, সেখানে হাজিরা দিলে মানুষ বলে কি না কি হয়, আমি তা জানি না। শেখ হাসিনার শেষ ঠিকানা মালদ্বীপ। সেখানে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে অপেক্ষা করছেন।’
ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট নিয়ে আপত্তি জানিয়ে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘যে ইভিএম দিয়ে ভোট করে তা প্রত্যাখ্যাত হয়েছে, সেই ইভিএম দিয়ে আপনারা (সরকার) ভোট করতে চান। আমরা ইভিএম চিনি না। আমাদের চৌদ্দ পুরুষ যেভাবে ভোট দিয়েছে, সেভাবেই আমরা ভোট দিতে চাই।’
সরকারকে উদ্দেশ করে আব্বাস বলেন, ‘যদি এত উন্নয়ন করে থাকেন, তাহলে ছেড়ে দেন ক্ষমতা, পদত্যাগ করুন। জনগণ খুশি হলে আপনাদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবে, আমরাও মেনে নেব। বেশি কিছু তো চাচ্ছি না-আমরা শুধু একটি বিষয় চাচ্ছি, সেটি হলো নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন।’
পদ্মা সেতুতে প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর পরিবারের সেলফি তোলার সমালোচনা করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ও ব্যক্তি শেখ হাসিনা এক নয়, এটা বুঝতে হবে। আমার কথা হলো, নির্দেশনা দিয়ে নির্দেশনা ভঙ্গের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হয় পুরস্কার নতুবা তিরস্কার পাওয়া উচিত।’
বদিউজ্জামান ধনির হত্যার বিচার দাবি করে সমাবেশে আব্বাস বলেন, ‘এসব হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে বিএনপির কর্মীদের ভয় দেখানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। বিএনপির কর্মীরা ভয় পায় না। এই হত্যার বিচার আশা করছি। যদি বিচার না হয়, বিএনপি এই হত্যার বিচার করবে।’
প্রতিবাদ সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আবদুস সালাম, দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মামুন হাসান, সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোনায়েমসহ আরও অনেকে বক্তব্য দেন।