জনগণের আন্দোলনকে দমাতে সরকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ‘প্রাইভেট লাঠিয়াল’ বাহিনী হিসেবে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ সোমবার এক বিবৃতিতে তিনি এই অভিযোগ করেন। গতকাল রোববার রাজধানীর শাহবাগে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলোর বিক্ষোভ সমাবেশে পুলিশি হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি এই বিবৃতি দেন। বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল বলেছেন, ‘জ্বালানি তেলের মূল্য কমানোর যৌক্তিক দাবি নিয়ে জনগণ যখন রাস্তায় নেমে
আসতে শুরু করেছে, তখন সেটিকে দমন করার জন্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে ‘প্রাইভেট লাঠিয়াল’ বাহিনী হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগের গণভিত্তি ধসে যাওয়ায় তারা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে জনগণের ওপর হামলা চালিয়ে প্রতিনিয়ত রক্ত ঝরাচ্ছে। নিজেদের লুটপাট, হরিলুট ও দুর্নীতিসহ সকল অপকর্ম ঢাকার জন্যই গণতন্ত্রকে সমাধিস্থ করে বাংলাদেশকে পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত করেছে।’
বিএনপির এই নেতা অভিযোগ করে আরও বলেন, ‘ভোলায় ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের দুজন নেতার প্রাণ কেড়ে নেওয়ার পর জনদৃষ্টিকে বিভ্রান্ত করতেই জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি করে জনরোষ থেকে বাঁচতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে জনগণের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেওয়া হয়েছে।’ তাঁর ভাষায়, ‘এই সরকার আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও নিজেদের পেটোয়া ছাত্রলীগ-যুবলীগ দিয়ে গোটা দেশকে ‘‘ডেঞ্জার জোনে’’ পরিণত করেছে।’
শাহবাগের সমাবেশে পুলিশি হামলার নিন্দা জানিয়ে বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘শাহবাগে বাম ছাত্র সংগঠনের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে পুলিশের হামলা জনগণের বিরুদ্ধে সরকারের জুলুমের আরেকটি নগ্ন বহিঃপ্রকাশ। গণ-আন্দোলনের ভয়ে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ায় সরকারের জুলুমের বৈচিত্র্যময় বিন্যাস দেখা যাচ্ছে। এই ঘটনায় আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে দেশবাসী শঙ্কিত। এরা যে আগামী নির্বাচন, ভোট, একতরফা করার জন্য জনগণের ওপর পূর্ণমাত্রায় আগ্রাসন চালাবে—এই পুলিশি হামলায় তারই নমুনা ফুটে উঠেছে।’
সরকারকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমি দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলতে চাই, দুঃশাসনের পরিকাঠামো নির্মাণ করে কেউ বেশি দিন মসনদে বসে থাকতে পারেনি। এ দেশের জনগণ কর্তৃত্ববাদী দুঃশাসনের অবসান ঘটিয়ে বাংলাদেশকে গণতন্ত্রের একটি নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ স্থান হিসেবে গড়ে তুলতে বদ্ধপরিকর।’