হোম > মতামত

হাসপাতালের মাংস চুরি

সম্পাদকীয়

দুর্নীতি আর অন্যায়ের সঙ্গে যে আমরা মিতালি পাতিয়েছি, তার ভূরি ভূরি প্রমাণ আছে। হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালের বর্তমান অবস্থা সে কথাকেই দৃঢ় ভিত্তির ওপর আবারও দাঁড় করিয়ে দেয়। খুবই সাদামাটা ছোট একটি খবর প্রকাশিত হয়েছে আজকের পত্রিকায়। দুদক এ হাসপাতালে অভিযান চালিয়েছিল গত মঙ্গলবার। আর তাতেই স্পষ্ট হয়, কীভাবে রোগীদের জন্য বরাদ্দ মাংসের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে হাসপাতালের দায়িত্বশীল লোকজনই।

সরকারি সেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর সেবার নমুনা নিয়ে কথা বলতে গেলে কত কথাই না বলতে হয়। বেশি উদাহরণ দিতে হবে না, ভূমি অফিস, সাবরেজিস্ট্রারের অফিসে সেবা পাওয়ার জন্য যাঁরা যান, দৈবচয়ন ভিত্তিতে তাঁদের যে কারও সঙ্গে কথা বলে দেখুন, কীভাবে সেই সেবা তাঁরা পান, তা বিস্তারিতভাবে আপনার সামনে প্রকাশ পাবে। সরকারি অফিসের পিয়ন, চাপরাশি, মন্ত্রী বা উপদেষ্টার এপিএসদের দাপটের কথা শুনেছি অনেক। হবিগঞ্জ হাসপাতালের খাবারের টাকা চুরি সে তুলনায় মামুলি ব্যাপার। কিন্তু এই একটি ব্যাপার নিয়ে কথা বললেই সরকারি কাজের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যগুলো ফুটে উঠবে।

হাসপাতালটিতে একজন রোগীর দুবেলা খাবারের জন্য ১৭০ গ্রাম মুরগির মাংস বরাদ্দ আছে। ব্রয়লার মুরগির মাংস কেনা হয় ২৯৭ টাকা কেজি দরে। রোগীর ভাগ্যে দিনে ১৭০ গ্রাম মুরগির মাংস জুটলে তা শরীরে প্রোটিনের চাহিদা অনেকাংশে লাঘব করে। কিন্তু রোগীর কি সে ভাগ্য আছে? যাঁরা এই কেনাকাটা-রাঁধন-বাড়নের সঙ্গে যুক্ত, তাঁরা কি রোগীকে গিয়ে বলবেন, ‘এই যে, আমরা আপনারই সেবায় নিয়োজিত। আপনার জন্য বরাদ্দ মাংস আপনাকেই দেওয়া হচ্ছে। খান।’ এ রকম সংলাপ সিনেমায় থাকতে পারে, রোগীরা আদৌ এ ধরনের অবস্থার সঙ্গে পরিচিত হননি। বরং খাওয়ার সময় তাঁরা ট্রেতে যে মাংস দেখেন, তা তাঁদের জন্য বরাদ্দ মাংসের অর্ধেকের কম। একজন রোগীকে দুবেলা যেখানে ১৭০ গ্রাম মাংস দেওয়ার কথা, সেখানে রোগী পান বড়জোর ৭৫ গ্রাম মাংস। বাকিটা কী হয়? প্রশ্নটা সহজ এবং উত্তরও সবার জানা।

বুঝলাম, দুদকের অভিযানে বেরিয়ে এসেছে এই তথ্য। কিন্তু এই ঘটনা তো এভাবেই দিনের পর দিন, বছরের পর বছর ঘটে চলেছে। রোগীর প্রাপ্য খাদ্য লোপাট করছে স্বার্থান্বেষী মহল। তারা কি কারও অচেনা? হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কি তাদের চিহ্নিত করতে পারেনি কখনো, কখনো তাদের মনে প্রশ্ন জাগেনি যে চুরি হচ্ছে কোথাও, কোনো এক বিভাগে? যাঁরা চুরি করছেন, তাঁরা হাসপাতালেরই লোক?

যাঁদের সঙ্গে যোগসাজশে হচ্ছে এই চুরি, তাঁরাও অচেনা কেউ নয়?

আসলে চোরেরা এতটাই শক্তিশালী যে তাঁদের নিয়ে কেউ কথা বলতে সাহস পায় না। তার চেয়ে চোরদের সঙ্গে ভিড়ে যাওয়া অথবা চুরি সম্পর্কে নীরব থাকাই শ্রেয় বলে মনে

করে ছা-পোষা মানুষ। এ কারণেই হয়তোবা দিনের পর দিন চোরের সংখ্যা বাড়তে থাকে। আর জাতীয় পরিসরে যখন চুরির কথা ভাবা

হয়? আমরা নিশ্চিত, তাহলে বুকের রক্ত হিম হয়ে আসবে!

একটি প্রত্যাবর্তন, বহু প্রত্যাশা

গণতন্ত্রের সন্ধিক্ষণ: তারেক রহমানের দেশে ফেরা

কেন পুড়িয়ে মারার মধ্যযুগীয় বর্বরতা

রাজনৈতিক ভবিষ্যতের এক মাহেন্দ্রক্ষণ

বড়দিনের শুভেচ্ছা

বিশ্বজুড়েই কেন গণমাধ্যম আক্রান্ত

সাইবার যুদ্ধ ও নজরদারি প্রযুক্তি: বৈশ্বিক নিরাপত্তা কোন পথে

মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনীতিতে তুরস্কের নয়া ভূমিকা

শিক্ষকের ক্ষমতা

রাষ্ট্রের মালিকানা এল না জনগণের হাতে