চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার খোঁজ নিতে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে গেছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। রোববার (২৮ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১১টার পরে হাসপাতালে যান তিনি। পরে সেখানে আধঘণ্টারও বেশি সময় অবস্থান করে রাত ১২টা ৮ মিনিটে বেরিয়ে যান। বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এই তথ্য জানিয়েছেন।
এর আগে শনিবার মধ্যরাতে বিএনপি চেয়ারপারসনের অবস্থা অত্যন্ত জটিল বলে জানিয়েছিলেন তাঁর চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্য ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। খালেদা জিয়া সংকটময় মুহূর্ত অতিক্রম করছেন বলেও উল্লেখ করেন ডা. জাহিদ।
চিকিৎসারত খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের সর্বশেষ কী অবস্থা, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে এই চিকিৎসক বলেন, ‘স্বাভাবিকভাবেই ওনার (খালেদা জিয়া) অবস্থার উন্নতি হয়েছে, এ কথা বলা যাবে না।...ওনার অবস্থা অত্যন্ত জটিল এবং উনি একটা সংকটময় মুহূর্ত পার করছেন।’
শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে কোনো ধরনের পূর্বঘোষণা ছাড়াই রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে এই ব্রিফ করা হয়।
ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘সত্যিকার অর্থে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ২৩ নভেম্বর এখানে (এভারকেয়ার হাসপাতাল) ভর্তি হয়েছেন; ভর্তি হওয়ার পরবর্তীতে ওনার (খালেদা জিয়া) শারীরিক অবস্থার বেশ অবনতি হয়েছিল।’
স্বাস্থ্যের ক্রমাগত অবনতির কারণেই খালেদা জিয়াকে কেবিন থেকে সিসিইউ এবং সেখানে থেকে পরবর্তীতে আইসিইউতে নেওয়া হয় বলেও জানান তিনি।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের এই সদস্য জানান, দেশি-বিদেশি চিকিৎসকেরা বিএনপি চেয়ারপারসনকে চিকিৎসা দিচ্ছেন, তাঁর পুত্রবধূ ডা. জুবাইদা রহমান তাতে যুক্ত রয়েছেন।
১৭ বছর পর গত বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে ফেরার পর মাকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন তারেক রহমান। শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) দিনভর নানা কর্মসূচি শেষে আবারও মাকে দেখতে যান তিনি। দুই ঘণ্টার বেশি সময় সেখানে অবস্থান করে রাত ১১টা ৫৮ মিনিটে তিনি হাসপাতাল ছাড়েন।
গত ২৩ নভেম্বর থেকে খালেদা জিয়া রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের অধীন খালেদা জিয়ার চিকিৎসা কার্যক্রম চলছে।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নানা শারীরিক জটিলতার মধ্যে ডায়াবেটিস, কিডনি, হৃদ্যন্ত্র ও ফুসফুসের সমস্যা ওঠানামা করছে। নিয়মিত চিকিৎসার অংশ হিসেবে তাঁর কিছু শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা নিয়মিত করা হচ্ছে।
খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের এমন পরিস্থিতিতে তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার কথা বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হলেও শেষ পর্যন্ত তা সম্ভব হয়নি। বিএনপি চেয়ারপারসনের শারীরিক অবস্থা আকাশযাত্রার উপযোগী না হওয়ায় দেশেই তাঁর চিকিৎসা চলমান।