বাংলাদেশ বড় ধরনের ভূমিকম্প ঝুঁকিতে রয়েছে। এখনই সিদ্ধান্ত না নিলে ভবিষ্যতে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় দেখা দিতে পারে। সময়মতো প্রস্তুতি, নিয়ম মেনে ভবন নির্মাণ ও জনসচেতনতা জোরদার করা গেলে বড় ধরনের ভূমিকম্পেও ক্ষতি ও প্রাণহানি উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো সম্ভব। এমন মত দিয়েছেন দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞরা।
রাজধানীর গুলশানে হোটেল ওয়েস্টিনে আজ শনিবার জেসিএক্স ডেভেলপমেন্টস লিমিটেড আয়োজিত ‘ভূমিকম্প সচেতনতা, নিরাপত্তা নিয়মাবলি ও জরুরি প্রস্তুতি’ শীর্ষক সেমিনারে তাঁরা এ মতামত দেন।
সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন জেসিএক্স ডেভেলপমেন্টস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ইকবাল হোসেন চৌধুরী।
মো. ইকবাল হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘সম্প্রতি ঢাকায় অনুভূত একাধিক ভূমিকম্প দেশের ঝুঁকি স্মরণ করিয়ে দিয়েছে। দ্রুত নগরায়ণ, জনসংখ্যার ঘনত্ব এবং দুর্বল ভবনকাঠামোর কারণে বড় ধরনের ভূমিকম্প ঘটলে ভয়াবহ বিপর্যয় হতে পারে। তাই সচেতনতা, প্রস্তুতি ও সক্ষমতা বৃদ্ধি এখন সময়ের দাবি। রাষ্ট্র, আবাসন খাত ও জনগণ—এই তিনটি স্তম্ভ শক্তিশালী হলেই আমরা ভূমিকম্পের ঝুঁকি মোকাবিলা করতে পারব। ভূমিকম্প-সহনশীল স্থাপত্য নির্মাণে জেসিএক্স স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে।’
সেমিনারে বক্তারা জাপানের উদাহরণ তুলে ধরে বলেন, জাপান নিয়ম মেনে কাজ করে ভূমিকম্প-সহনশীল শহর গড়তে পেরেছে। বাংলাদেশ চাইলে তাদের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে মাটি পরীক্ষা, মানসম্পন্ন উপকরণ ব্যবহার এবং রিয়েল এস্টেট খাতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে ক্ষতি ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কমাতে পারে। ভারত, মিয়ানমার ও ইউরেশীয়—এই তিন সক্রিয় টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থিত বাংলাদেশ। সিলেটের ডাউকি ফল্ট, চট্টগ্রাম-টেকনাফের চিটাগং-আরাকান ফল্ট ও মিয়ানমারের সাগাইং ফল্টের কারণে দেশটি অত্যন্ত উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। দ্রুত নগরায়ণ, ঘনবসতি, বিল্ডিং কোড উপেক্ষা এবং সংকীর্ণ সড়ক পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলেছে।
এতে আরও বক্তব্য দেন প্রকৌশলী অধ্যাপক ড. এম শামীম জেড বসুনিয়া, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ড. সৈয়দ ফখরুল আমিন প্রমুখ।