হোম > জাতীয়

একই দিনে নির্বাচন ও গণভোট

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎

ফাইল ছবি

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও গণভোট নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো সমঝোতায় পৌঁছাতে না পারায় শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত দিল অন্তর্বর্তী সরকার। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়ে দিয়েছেন, আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং ওই নির্বাচনের দিনই হবে গণভোট। প্রধান উপদেষ্টার ভাষণের পর রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ-২০২৫ জারি করেন।

২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত ছাত্র-জনতার সফল অভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রকাশিত জনগণের সার্বভৌম ক্ষমতা ও অভিপ্রায়ের ভিত্তিতে এবং অন্তর্বর্তী সরকারের পরামর্শক্রমে রাষ্ট্রপতি এই আদেশ জারি করেন। আদেশে জুলাই জাতীয় সনদে অন্তর্ভুক্ত সংবিধান সংস্কার বিষয়ে গণভোট অনুষ্ঠান, গণভোটের সময় ও ব্যালটে উপস্থাপনীয় প্রশ্ন এবং গণভোট অনুষ্ঠানের জন্য আইন প্রণয়নের বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়।

আদেশের ৪ অনুচ্ছেদে জুলাই জাতীয় সনদে লিপিবদ্ধ সংবিধান সংস্কারসম্পর্কিত চারটি প্রস্তাবের ওপর এক প্রশ্নে ‘হ্যাঁ বা না’ ভোটের কথা বলা হয়। আর ৫ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা হয়, ‘এই আদেশ জারির অব্যবহিত পর অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন এই আদেশ অনুসারে গণভোট অনুষ্ঠান করা হইবে।’ এ ছাড়া গণভোট অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্দেশ্যে যথোপযুক্ত আইন প্রণয়ন করবে বলে আদেশের ৬ অনুচ্ছেদে বলা হয়।

গণভোট প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা তাঁর ভাষণে বলেন, ‘আমরা সকল বিষয় বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনই গণভোটের আয়োজন করা হবে। অর্থাৎ জাতীয় নির্বাচনের মতো গণভোটও ফেব্রুয়ারির প্রথমার্থে একই দিনে অনুষ্ঠিত হবে। এতে সংস্কারের লক্ষ্য কোনোভাবে বাধাগ্রস্ত হবে না। নির্বাচন আরও উৎসবমুখর ও সাশ্রয়ী হবে। গণভোট অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে উপযুক্ত সময়ে প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন করা হবে।’ তিনি এ সময় জুলাই সনদের আলোকে গণভোটের ব্যালটে উপস্থাপনীয় প্রশ্নের চারটি বিষয়ও পড়ে শোনান। গণভোটের দিন এই চারটি বিষয়ের ওপর একটিমাত্র প্রশ্নে ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ ভোট দিয়ে মতামত দেওয়ার জন্য ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানান।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, গণভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট ‘হ্যাঁ’ সূচক হলে আগামী সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত প্রতিনিধি নিয়ে একটি সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠিত হবে। এই প্রতিনিধিরা একই সঙ্গে জাতীয় সংসদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। পরিষদ তার প্রথম অধিবেশন শুরুর তারিখ থেকে ১৮০ কার্যদিবসের মধ্যে সংবিধান সংস্কার করবে। সংবিধান সংস্কার সম্পন্ন হওয়ার পর ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে সংসদ নির্বাচনে প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যানুপাতে উচ্চকক্ষ গঠন করা হবে। এর মেয়াদ হবে নিম্নকক্ষের শেষ কার্যদিবস পর্যন্ত।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপে সংবিধান-সংক্রান্ত ৪৮টি প্রস্তাবের সমাধান হয়েছে। যার মধ্যে ৩০টি বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়েছে, বাকি ১৮টি প্রস্তাবের দলগুলোর আপত্তি (নোট অব ডিসেন্ট) ছিল। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশে গণভোটের আপত্তি বাদ দেওয়া হয়েছিল। গতকাল জারি হওয়া আদেশে কিছুটা সংশোধন করা হয়। যেখানে সাতটি প্রস্তাবে আপত্তি রাখা হয়নি। সেগুলো হলো সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্বের (পিআর) ভিত্তিতে উচ্চকক্ষের গঠন; সংবিধান সংশোধন (সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে উচ্চকক্ষ), তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা; ন্যায়পাল নিয়োগ; সরকারি কর্ম কমিশনে নিয়োগ; মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক নিয়োগ; দুর্নীতি দমন কমিশনে নিয়োগ। এসব প্রস্তাবে বিএনপিসহ সমমনা কয়েকটি দলের আপত্তি ছিল।

মূলনীতিগুলো: প্রধানমন্ত্রীর একাধিক পদে থাকার বিধান; জাতীয় সংসদে দলের বিরুদ্ধে ভোটদান; আন্তর্জাতিক চুক্তি আইনসভায় অনুমোদনে দেওয়া দলগুলোর আপত্তির বিষয়টি গণভোটে রাখা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে গণভোটের ফলাফল ইতিবাচক হলে ক্ষমতাসীন দল প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পারবে। মূলনীতি ছাড়া বাকি তিনটিতে বিএনপির আপত্তি রয়েছে।

১৮০ দিন দ্বৈত ভূমিকা পালন করবে সংসদ

গণভোটের ফলাফল ইতিবাচক হলে আগামী সংসদের নির্বাচিত প্রতিনিধি নিয়ে একটি সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠিত হবে বলে জানান প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, তারা একই সঙ্গে জাতীয় সংসদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে। পরিষদ তার প্রথম অধিবেশন শুরুর তারিখ থেকে ১৮০ কার্যদিবসের মধ্যে সংবিধান সংস্কার করবে। সংবিধান সংস্কার শেষ হওয়ার ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে সংসদ নির্বাচনে প্রাপ্ত ভোটের পিআরের ভিত্তিতে উচ্চকক্ষ গঠন করা হবে। এর মেয়াদ হবে নিম্নকক্ষের শেষ কার্যদিবস পর্যন্ত।

রাজনৈতিক দলগুলোকে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দলীয় স্বার্থ অতিক্রম করে, সম্মিলিত আকাঙ্ক্ষা ও জাতীয় চাওয়াকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরার আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘আমাদের এ সিদ্ধান্ত জাতির বৃহত্তর স্বার্থে রাজনৈতিক দলগুলো মেনে নেবে। একটি উৎসবমুখর জাতীয় নির্বাচনের দিকে জাতি এগিয়ে যাবে। এর মাধ্যমে আমরা নতুন বাংলাদেশে প্রবেশ করব। আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়ার দ্বারপ্রান্তে এসে পৌঁছালাম।’

জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ প্রধান উপদেষ্টার মাধ্যমে জারি করার দাবি জানিয়ে আসছিল জামায়াত ও এনসিপি। অন্যদিকে বিএনপি আদেশ নয়, প্রজ্ঞাপনের কথা বলেছিল। কিন্তু গতকাল উপদেষ্টা পরিষদে আদেশ চূড়ান্ত করার পর সই করার জন্য রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের কাছে পাঠানো হয়। দুপুরে আদেশে স্বাক্ষর করেন তিনি। প্রধান উপদেষ্টার ভাষণের পরে রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে আদেশ জারি করা হয়।

রাষ্ট্রপতির কাছে অব্যাহতিপত্র দিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান

তামাক নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ অনুমোদনে অন্তর্বর্তী সরকারকে স্বাগত জানাল বিএনটিটিপি

প্রধান বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীর শপথ কাল

সুষ্ঠু ভোটের ব্যাপারে সরকার সিরিয়াস: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন সোমবার, ঢাকার ৬ জেলায় এ পর্যন্ত সংগ্রহ ৫০৯টি

তারেক রহমান ও জাইমার ভোটার নিবন্ধন সম্পন্ন, রোববার উঠবে কমিশনে

নিষিদ্ধ দলের নেতারা আটকে যেতে পারেন তফসিলের শর্তে

সরকারের কোনো না কোনো অংশ এই হামলা ঘটতে দিয়েছে: নূরুল কবীর

তারেক রহমান-জাইমার ভোটার হওয়া নিয়ে কমিশনের সিদ্ধান্ত রোববার: আখতার আহমেদ

কক্সবাজার-হাতিয়ায় সমুদ্রে মিসাইল ফায়ারিং পরিচালনা, নৌযান চলাচলে সতর্কতা আইএসপিআরের