প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘একমাত্র আওয়ামী লীগই পারে অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে। সেটা আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে পারি। মানুষের ভোটের অধিকার সংরক্ষণ করা, মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জন করা, সেটাই আমাদের লক্ষ্য। সেই কাজটাই আমরা করে যাচ্ছি। সেটাই করে যাব।’
আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের আমলে নির্বাচন হবে না যাঁরা বলেন, তাঁদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মাত্র সিটি করপোরেশন নির্বাচন হলো—বরিশাল, রাজশাহী, সিলেট, খুলনা ও গাজীপুর। এর মধ্যে গাজীপুরে আমরা হেরেছি। আর বাকি চারটায় জিতেছি। এই নির্বাচন নিয়ে কেউ একটি প্রশ্ন তুলতে পেরেছে? আমরা সেখানে ভোট চুরি করি নাই তো। এত শান্তিপূর্ণ নির্বাচন বাংলাদেশে আগে কখনো হয়েছে? ঢাকায় সিটি নির্বাচন হয়েছিল ১৯৯৩ সালে। মোহাম্মদ হানিফ জিতেছিল। এরপর লালবাগে বিএনপি গুলি করে আওয়ামী লীগের ছয় নেতা-কর্মীকে হত্যা করেছিল। সেই কথা আমাদের ভুলে গেলে চলবে না। প্রতিটা নির্বাচনে তো এ রকম সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করেছে।’
আওয়ামী লীগের আমলে হওয়া সব উপনির্বাচনই অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণ বারবার অনেক বাধা অতিক্রম করেও আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে। তার সুফল দেশের জনগণই পাচ্ছে।
বিদেশিদের নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘অনেকে আছেন আমাদের ছবক দেন। মানবাধিকার শেখান। সারা বিশ্বে তো বহু জায়গায়, বহু মানুষ খুন হচ্ছে। এমনকি আমেরিকায় তো প্রতিদিন গুলি করে করে শিশুদের হত্যা করছে। স্কুলে, শপিং মলে, রাস্তায় হত্যা হচ্ছে। প্রতিদিনই তো তাদের প্রতিটি স্টেটে গুলি করে করে হত্যা, ঘরের মধ্যে গিয়ে পরিবারসহ হত্যার ঘটনা ঘটছে। নিজের দেশের মানুষের মানবাধিকার রক্ষা আগে করা উচিত তাদের। তারা নিজের দেশের মানুষকে বাঁচাবে কী করে, সেই চিন্তা আগে করুক। সেটাই তাদের করা উচিত।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইউক্রেনে যুদ্ধটা বাধিয়ে দিয়ে আজকে সেখানে হাজার হাজার নারী-পুরুষ রিফুজি, কষ্ট পাচ্ছে। সিরিয়ায় কীভাবে গোলাগুলি, প্যালেস্টাইনেও একের পর এক বোমা হামলা, এয়ার হামলাও করছে। সেটা নিয়ে কারও কোনো কথা নেই কেন? সেখানে কী মানবাধিকার ক্ষুণ্ন হচ্ছে না?’
শেষ হলো বাজেট অধিবেশন
চলতি একাদশ সংসদের সর্বশেষ বাজেট ২৩তম অধিবেশন আজ বৃহস্পতিবার শেষ হয়েছে। ২২ কার্যদিবসের এই অধিবেশনে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট পাস ছাড়াও ১৪টি বিল পাস হয়েছে। বাজেটের ওপর ১৮৭ জন সদস্য ৩২ ঘণ্টা তিন মিনিট বক্তব্য দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর জন্য ৯৭টি প্রশ্ন জমা পড়লেও তিনি উত্তর দিয়েছেন ৫৬টির এবং মন্ত্রীদের জন্য ১ হাজার ৮৮৯টি প্রশ্ন জমা পড়লেও উত্তর দিয়েছেন ১ হাজার ৩৩৮টির।
জুলাইয়ে ইতালি ও নভেম্বরে থাইল্যান্ড যাবেন প্রধানমন্ত্রী
জাতিসংঘের খাদ্য ব্যবস্থাবিষয়ক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ২৩ জুলাই ইতালির রোমে যাওয়ার কথা রয়েছে। জাতিসংঘ খাদ্য ও কৃষি সংস্থার আয়োজনে ২৪ থেকে ২৬ জুলাই এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া আঞ্চলিক জোট বিমসটেকের শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী নভেম্বরে থাইল্যান্ড যাবেন। দুই দেশের কয়েকটি কূটনৈতিক সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।