হোম > জাতীয়

সাহিনুদ্দীনকে খুনের মদতদাতা আউয়াল, সুমনের স্বীকারোক্তি

বিশেষ প্রতিনিধি

ঢাকা: সহযোগীদের নিয়ে আমার নেতৃত্বে পল্লবীর ব্যবসায়ী সাহিনুদ্দীনকে কুপিয়ে খুন করি। আর এই খুনের মদতদাতা সাবেক এমপি এম এ আউয়াল। সাহিনুদ্দীন হত্যা মামলার আসামি সুমন বেপারী আদালতে জবানবন্দিতে এসব কথা বলেছেন।

আজ সোমবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে সুমন বেপারী স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। সকালেই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পরিদর্শক সৈয়দ ইফতেখার হোসেন সুমন বেপারীকে আদালতে হাজির করেন। প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন আসামি সুমন বেপারী জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেন তিনি সাহিনুদ্দীন হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী। তিনি আদালতেও স্বেচ্ছায় দোষ স্বীকার করতে চান। পরে মহানগর হাকিম দেবদাস চন্দ্র অধিকারী ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় সুমনের জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করেন। জবানবন্দির পরে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এই নিয়ে মোট তিনজন আদালতে জবানবন্দি দিলেন। আগের দিন রবিবার রকি তালুকদার ও মো. মুরাদ জবানবন্দি দিয়েছেন।

সুমন আদালতে স্বীকার করেন স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতা হওয়ায় তিনি এলাকার প্রভাবশালী। তার নেতৃত্বে এলাকায় টাকার বিনিময়ে প্রভাবশালীদের জমি, বাড়ি দখল করে দেন। সাবেক সংসদ সদস্য এম এ আউয়াল হ্যাভেলি প্রোপার্টিজ ডেভেলপার লিমিটেডের মালিক। তাঁর হয়ে অনেক জায়গা জমি এর আগেও তাঁরা দখল করে দিয়েছেন। বিনিময়ে তাদের মোটা অঙ্কের টাকা দিতেন। পল্লবীর বুড়িরটেকের আলী নগর আবাসিক এলাকায় সাহিনদের কয়েক একর সম্পত্তি আছে। আউয়াল সাহেব ওই জমি দখল করে ডেভেলপ করতে চেয়েছিলেন। এ জন্য সুমনের সহযোগিতা চান তিনি।

সুমন জবানবন্দিতে বলেন, সাহিনউদ্দীন তাদের জমি দিতে রাজি না হওয়ায় আউয়াল সাহেব তাঁকে শেষ করার পরিকল্পনা নেন। ঘটনার কয়েক দিন আগে কলাবাগানের অফিসে সুমন, মানিক ও মনিরকে ডাকেন। সেখানে বলেন সাহিনুদ্দিন রাজি না হলে তাঁকে শেষ করে দিতে হবে। বিনিময়ে অনেক টাকা দেওয়া হবে। তাঁরা সাহিনুদ্দীনের সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু জমি দেওয়ার ব্যাপারে সাহিনুদ্দীনকে বাগে আনা যায়নি। কলাবাগানে পরপর কয়েক দিন বৈঠক হয়। গত ১৫ মে আবারও কলাবাগানে আউয়াল সাহেবের সঙ্গে শেষ বৈঠক হয়। তখন ৩০ লাখ টাকার বিনিময়ে সাহিনুদ্দীনকে খুনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়। আর এই খুন কীভাবে করতে হবে তার পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব দেওয়া হয় সুমনকে।

সুমন আদালতকে আরও বলেন, ঘটনার দিন অর্থাৎ গত ১৬ মে সুমন নিজে, রকি তালুকদার, মুরাদ, মনির, মানিকসহ হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়া ১৫- ২০ জন সবাই পল্লবীতে এক মিটিংয়ে সাহিনুদ্দীনকে হত্যার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হয়। সুমন নিজেই হত্যাকাণ্ডের নেতৃত্ব দেবেন বলেও সিদ্ধান্ত হয়। তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত ১৬ মে বিকাল ৪টার দিকে সুমন ও টিটু শাহিন উদ্দিনকে ফোন দেন। শাহিন উদ্দিনকে বলা হয় আউয়াল সাহেবের সঙ্গে যে বিরোধ আছে তা মিটিয়ে দেওয়া হবে। শাহিন উদ্দিন আসতে রাজি হননি। কিন্তু সুমন ও টিটু বলেন, তাঁরা স্থানীয়। বিষয়টা শাহিনের জন্য ভালো হবে বলে তাঁরা এগিয়ে এসেছে। মীমাংসা হলে শাহিনের লাভ হবে বলে তাঁরা আশ্বস্ত করে। পরে সাহিন রাজি হয়। তাঁকে পল্লবীর ডি ব্লকে ৩১ নম্বর সড়কে আসতে বলা হয়। সাহিন একটি মোটরসাইকেলে তাঁর ছয় বছরের ছেলে মাশরাফিকে নিয়ে আসেন। শাহিন ৪০ নম্বর বাড়ির সামনে এলেই তাঁকে সেখানে নামানো হয়। ছেলের সামনেই শাহিনকে টেনে হিঁচড়ে বাড়ির মধ্যে গ্যারেজের মধ্যে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আগে থেকেই চাপাতি, রাম দা, চাইনিজ কুড়াল রাখা ছিল।

সুমন আদালতকে বলেন, সাহিন তাঁর ছেলেকে নিয়ে আসায় ছেলেকে সুমনই ধরে বাড়ির বাইরে রাখেন। সাহিন ছেলেকে ছাড়তে চাচ্ছিলেন না। সুমনই জোর করে তাঁকে রাস্তার ওপর দাঁড় করিয়ে রাখেন। সাহিনকে গ্যারেজের মধ্যেই নিয়ে তাঁর সঙ্গীরা চাপাতি দিয়ে কোপাতে থাকে। রকি, মুরাদ, মানিক, টিটু, বাবু ও অন্যরাও কোপাতে থাকে। এক পর্যায়ে সাহিনকে টেনে বাইরে আনা হয়। সেখানে মনির আবারও কুপিয়ে শাহিনের মৃত্যু নিশ্চিত করেন। সাহিনকে ফেলে রেখে তাঁর ছেলেকেও ছেড়ে দেওয়া হয়। তাঁরা পালিয়ে যায়। ঘটনার পরই সুমন আউয়াল সাহেবকে ফোন দিয়ে জানান, কাজ শেষ। আউয়াল সাহেবও তাদের ঘটনাস্থল থেকে সরে যেতে বলেন।

উল্লেখ্য, গত ১৬ মে প্রকাশ্যে সাহিনুদ্দীনকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় সাহিনের মা আকলিমা বেগম ১৭ মে পল্লবী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর সাবেক সাংসদ আউয়াল গ্রেপ্তার হয়েছেন। তিনি চার দিনের রিমান্ডে আছেন। গত শুক্রবার তাঁকে এবং নুর মোহাম্মদ হাসান ও জহিরুল ইসলাম ওরফে বাইট্টা বাবু এই তিনজনকে রিমান্ডে নেওয়া হয়। এর আগের দিন সুমন বেপারী ও রকি তালুকদারকে রিমান্ডে নেওয়া হয়। তার আগের দিন মুরাদকে রিমান্ডে নেওয়া হয়। গত শনিবার গ্রেপ্তার মো. টিটু, ইকবাল নুর ও মো. শরীফকে রিমান্ডে নেওয়া হয়।

বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে জামায়াতের দুই ছাত্রনেতা আশরাফ ও মুঈনুদ্দীনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল ট্রাইব্যুনাল

হাদিকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হবে: প্রেস উইং

পদায়নের জন্য রাজনৈতিক পদলেহন করবেন না—বিদায়ী ভাষণে বিচারকদের প্রধান বিচারপতি

চোরাগোপ্তা হামলার শঙ্কা থাকলেও ভোট নিয়ে শঙ্কা দেখছে না ইসি

হাদির ছবি আঁকা হেলমেট পরে স্কাই ডাইভিং করবেন আশিক চৌধুরী

রাজনৈতিক দলের জন্য নিরাপত্তা প্রটোকল দেবে পুলিশ

ভারতীয় হাইকমিশনারকে তলব করে হাদির ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের অনুরোধ

ভারতীয় হাইকমিশনারকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব

গুমের মামলায় হাসিনা ও সেনা কর্মকর্তাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ ২১ ডিসেম্বর

বিকেলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বৈঠকে বসবে ইসি