দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পদ্মা ব্যাংক লিমিটেডের সাবেক চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফত, তাঁর স্ত্রী আঞ্জুমান আরা শহিদ, ছেলে চৌধুরী রাহিব সাফওয়ান সরাফাতের ২১টি ফ্ল্যাট, দুটি বাড়ি, দেশের বিভিন্ন স্থানে থাকা প্লট ও জমি দেখভালের জন্য তত্ত্বাবধায়ক (রিসিভার) নিয়োগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঢাকার মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. সাব্বির ফয়েজ আজ বৃহস্পতিবার এ নির্দেশ দেন বলে নিশ্চিত করেছেন দুদকের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) তানজির আহমেদ।
নাফিজ সরাফাতের নামে থাকা স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে—গুলশানে ২০তলার একটি বাড়ি, নিকুঞ্জে একটি বাড়ি, গুলশানে একটি, ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট বাজারে চারটি, নিকুঞ্জ উত্তর আবাসিক এলাকায় তিনটি ও বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় একটি ফ্ল্যাটের ৫০ শতাংশ, নিকুঞ্জে একটি প্লট, বাড্ডার কাঁঠালদিয়ায় আড়াই কাঠা, গাজীপুরের কালিয়াকৈরে ১০ কাঠা করে ২০ কাঠা জমি, গাজীপুর সদরে ৮ দশমিক ২৫ শতাংশ জমি, নিকুঞ্জরের জোয়ার সাহারায় ৪ দশমিক ৯৫ শতাংশ জমি, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের রাজউক পূর্বাচল প্লটে সাড়ে সাত কাঠা জমি।
এ ছাড়া আঞ্জুমান আরা শহিদের নামে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় সাড়ে সাত কাঠা জমির ওপর চারতলা বাড়িসহ জমি, পান্থপথে একটি, গুলশানে দুটি, মিরপুর ডিওএইচএসে একটি, শাহজাদপুরে একটি ও বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় একটি ফ্ল্যাটের ৫০ শতাংশ, নিকুঞ্জে তিন কাঠা জমি, বাড্ডার কাঁঠালদিয়া আড়াই কাঠা নাল জমি ও গাজীপুর সদরে ৮ দশমিক ২৫ শতাংশ চালা জমি রয়েছে।
আর রাহিব সাফওয়ান সরাফাতের নামে বনানীতে তিনটি ও বারিধারায় চারটি ফ্ল্যাট রয়েছে।
দুদকের উপপরিচালক আফরোজা হক আজ এসব স্থাবর সম্পদের রিসিভার নিয়োগের আবেদন করেন।
আবেদনে বলা হয়, নাফিজ সরাফত ও অন্যদের বিরুদ্ধে ঘুষ, দুর্নীতি, জালিয়াতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণা ও নিজেদের মাধ্যমে একে অপরের যোগসাজশে প্রায় ৮৮৭ কোটি টাকা আত্মসাৎসহ বিভিন্ন অভিযোগের অনুসন্ধান চলমান। এ অবস্থায় অভিযোগ-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিষয়ে সংগৃহীত তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, নাফিজ সরাফত, আঞ্জুমান আরা শহিদ ও চৌধুরী রাহিব সাফওয়ান সরাফতের নামে দেশের বিভিন্ন স্থানে স্থাবর সম্পত্তির তথ্য পাওয়া গেছে। তাঁরা সবাই পলাতক। এ কারণে এসব সম্পদ ক্রোকের আবেদন করলে গত ২০ মে আদালত ক্রোকের নির্দেশ দেন। দুদক এসব সম্পদ ক্রোকের কাজ সম্পন্ন করেছে। এখন দেখভালের জন্য রিসিভার নিয়োগ করা প্রয়োজন।
শুনানি শেষে যেসব জেলায় নাফিস শারাফাত ও তাঁর পরিবারের সম্পদ রয়েছে, সেসব জেলার প্রশাসককে রিসিভার নিয়োগের নির্দেশ দেন আদালত।