‘ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্কের মাঝে শুধু একটা সীমান্তরেখা রয়েছে। কিন্তু আমাদের পরস্পরের হৃদয়ের কোনো সীমা নেই। ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক চির অটুট থাকবে সব সময়।’—এমনটা মনে করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।
আজ বুধবার দুপুরে জাতীয় শিল্পকলা একাডেমিতে আয়োজিত ‘বাংলাদেশকে ভারতের স্বীকৃতির ৫২ বছর’ পূর্তি উপলক্ষে এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে এসব কথা বলেন তিনি।
বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে প্রথম স্বীকৃতি দেওয়া দেশ হলেও ৫২ বছরে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বাংলাদেশি হত্যা থামছে না কেন—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘সীমান্তে হত্যা অনেকাংশে কমে এসেছে। এটা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকেও দফায় দফায় বৈঠক চলছে।’
গত সোমবার ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার ডাবরী সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে বাংলাদেশি দুই যুবক নিহত হন।
এ ছাড়া বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার রত্নাই সীমান্ত এলাকায় বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি আরেক যুবক আহত হন বলে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়।
নির্বাচনে অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহারের আরেক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচনকে অস্থিতিশীল করার জন্য সব সময়ই একটি পক্ষ সচেষ্ট থাকে। সেসব যেন না হয়, এ জন্যই নির্বাচন কমিশন থেকে বিভিন্ন নির্দেশনা দেওয়া হয়।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনের সময় উৎসবমুখর পরিবেশে সৃষ্টি হয়। এর অন্তরালে অনেক সময় বিপত্তি ঘটানোর, অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি কিংবা নির্বাচনকে প্রভাবিত করার জন্য একটি পক্ষ অনেক পন্থা অবলম্বন করে। সে ধরনের কোনো ঘটনা যাতে কেউ না করতে পারে এ জন্য নির্বাচন কমিশন থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী যারা আছেন তারা অত্যন্ত দক্ষ।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিনিয়তই শীর্ষ সন্ত্রাসীদের নিরাপত্তা বাহিনী দ্বারা আটক করা হচ্ছে। আমরা সবসময়ই তাদের চিহ্নিত করে আসছি, এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। তাদের বেশির ভাগই এখন জেলখানায়, না হয় দেশত্যাগ করেছে। বিদেশে যারা আত্মগোপন করেছে, তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করছি। ইতিমধ্যে কয়েকজনকে আনাও হয়েছে।’
সীমান্তে অস্থিরতা নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সীমান্ত হত্যার সংখ্যা ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে। এ নিয়ে মন্ত্রী পর্যায়েও মিটিং হচ্ছে। আমরা চেষ্টা করছি, সীমান্তে নন লিগ্যাল অস্ত্র ব্যবহার করার।
অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার শ্রী প্রণয় কুমার ভার্মা৷ সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. খন্দকার বজলুল হক।