হোম > জাতীয়

কাসেমের ফোনের অপেক্ষায় ছিলেন সোহাগী

আশিকুর রিমেল


ঢাকা: মগবাজারের জ্যামে আছি, পরে ফোন দিই, স্ত্রীকে জানিয়েছিলেন কাসেম। কিন্তু এই ‘পরে’ যে আর শেষ হবে না জানতেন না স্ত্রী সোহাগী বেগম।
৭ বছরের মেয়ে মীম ও স্ত্রী সোহাগীসহ আবুল কাশেম মোল্লা থাকতেন গাজীপুরে। সারা দিনের কাজ শেষে বাড়ি ফিরবে তার স্বামী এই অপেক্ষায় থাকেন স্ত্রী সোহাগী বেগম। প্রতিদিন দু–একবার মুঠোফোনে কথা হয় তাদের। দুর্ঘটনার কিছুক্ষণ আগেও কথা হয়েছে তাদের। কিছুক্ষণ পর টিভিতে দুর্ঘটনার সংবাদ দেখে আঁতকে ওঠেন সোহাগী। মুঠোফোনে কল দিলে সেটি বন্ধ। তিনি বলেন, ‘টিভিতে গাড়ি দেইখা চিনছি। গাড়ি পুইরা শেষ। তাইলে আমার স্বামীর কিছু হইছে।’

গত রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে রাজধানীর মগবাজারের শরমা হাউজে বিস্ফোরণে যাত্রীবাহী যে কয়টা বাস ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ‘আজমেরী গ্লোরী’ তার মধ্যে একটি। নিজের কেনা এই বাসটি চালাচ্ছিলেন আবুল কাসেম (৪৫)। সেই দুর্ঘটনায় মারা যান আবুল কাসেম।

যুবক বয়স থেকেই বাস চালাতেন আবুল কাসেম মোল্লা। স্বপ্ন ছিল একদিন নিজের একটা বাস হবে, সেই বাস চালাবেন তিনি নিজেই। পরিবারের অভাব অনটন থাকবে না। সচ্ছলতায় জীবন কাটাবেন স্ত্রী সন্তান নিয়ে। দেড় বছর আগে ঋণ করে কিনেও ফেলেছিলেন তিনি। অকস্মাৎ বিস্ফোরণ শেষ করে দিল সব।

অনেকগুলো মানুষকে শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে তথ্য পেয়ে ছুটে যান সেখানে। হাসপাতালের সবগুলো ওয়ার্ড ঘুরে কোথাও খুঁজে পেলেন না স্বামীকে। কিন্তু সেখানকার মর্গে যে ব্যক্তি আছেন তার বর্ণনা শুনে সেদিনই রাত ১০ টার দিকে নিশ্চিত হন তার স্বামী আর বেঁচে নেই।

আজ সোমবার দুপুর পর্যন্ত শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে কাসেমের মরদেহ নেওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলেন সোহাগী। নিয়ে যাবেন শ্বশুরবাড়ি কুমিল্লায়। সেখানে কবর হবে তাঁর।

এরপর কি হবে, কীভাবে কাটবে দিন! একদিকে স্বামী হারানোর শোক অপরদিকে ঋণের বোঝা।

সোহাগী বলেন, ‘এখন আমি নিঃস্ব। এখন থেকে কেমনে সংসার চালামু! আমার মাইয়াটার কী হইব! ১২ লাখ টাকা ঋণ নিয়া গাড়িটা কিনছিল। বাস্তু শিক্ষা, ডিএসটে ও সেতু নামের ৩টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে এখনো আট লাখ টাকা ঋণ আছে। লকডাউন না থাকলে ঋণ শোধ হইয়া যাইতো। লকডাউনের মধ্যে কিস্তি দিতে পারি নাই। তাইলে এই দুর্দশায় পরতে হইতো না।

পরিবারের একমাত্র আয় করা স্বামীর মৃত্যুর পর সোহাগী তাকিয়ে আছেন রাষ্ট্রের দিকে। তিনি বলেন, ‘এখন মন্ত্রী মহোদয় যদি কিছু করে আমাদের জন্য! নাইলে আমাদের রাস্তায় রাস্তায় ঘুরতে হইবো।’

শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন রোগীদের পরিদর্শন করেন ঢাকা জেলা প্রশাসক মো. শহিদুল ইসলাম। এ সময় তিনি নিহতের স্বজনদের হাতে দাফনের জন্য ২০ হাজার টাকা ও আহতদের চিকিৎসার জন্য ১০ হাজার টাকা তুলে দেন। সেখানে তিনি বলেন, বার্ন ইনস্টিটিউট ও ঢাকা মেডিকেলে ৩৮জন চিকিৎসা নিয়েছেন। আহতদের অনেকেই অন্যান্য হাসপাতালে সেবা নিয়ে চলে গেছেন। হাসপাতাল থেকে চলে যাওয়ার কারণে অনেকের সঙ্গেই যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। এই মুহূর্তে খুঁজে পাওয়াও যাচ্ছে না। তবে তাদেরও খুঁজে বের করে এই সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হবে।

৮১ আসনে বিএনপির একাধিক নেতা প্রার্থী

দুই মাসের চুক্তিতে স্বাস্থ্যের ডিজি ও সচিব নিয়োগ

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন ২৫৮২ জন

৪৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ: পি কে হালদারসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট

হাদি হত্যা মামলার তদন্ত-বিচারকাজে আইনি পরামর্শক হলেন সমাজী

এখন র‍্যাপিড পাস রিচার্জ করা যাবে মোবাইল অ্যাপে

রেলপথ, ইঞ্জিনসহ সম্পদের ক্ষতিসাধন থেকে বিরত থাকার আহ্বান

৪ আইন কর্মকর্তার নিয়োগ বাতিল

মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় বাড়ছে না: ইসি সচিব

পোস্টাল ভোটের নিবন্ধন সাড়ে ৯ লাখ ছাড়াল