বিচারপতিকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করার অভিযোগে আদালত অবমাননার মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিবকে পাঁচ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে তাঁকে দুই হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছে।
আজ বুধবার হাবিবকে হাজির করার পর শুনানি শেষে বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহর বেঞ্চ এ দণ্ড দেন।
এর আগে শেরেবাংলা নগর থানা-পুলিশ তাঁকে হাইকোর্টে হাজির করে। একপর্যায়ে আদালতে হাবিবের বক্তব্যের ভিডিও শোনানো হয় সবাইকে। পরে আদালত জানতে চান, এই বক্তব্য তাঁর কি না? হাবিব বক্তব্যটি তাঁর নিজের বলে স্বীকার করেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘আমি অসুস্থ থাকাবস্থায় আমার মমতাময়ী মা বেগম খালেদা জিয়া আমাকে সহযোগিতা করেছেন। তাঁর জন্য আমার লিভার, কিডনি, এমনকি জীবন দিতেও প্রস্তুত আছি। আমার ১০০ বছরের সাজা হলেও আমি ভয় পাই না।’
রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কে এম মাসুদ রুমী। আর হাবিবের পক্ষে ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন ও ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল উপস্থিত ছিলেন।
তলবের পরও হাজির না হওয়ায় ৮ নভেম্বর হাবিবুর রহমান হাবিবকে খুঁজে বের করে হাজিরের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। পুলিশের মহাপরিদর্শককে নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বলা হয়। পরে গতকাল মঙ্গলবার মিরপুরের ডিওএইচএস এলাকা থেকে হাবিবকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানায় র্যাব।
আদালত অবমাননার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে হাবিবকে ৬ নভেম্বর হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। তবে হাবিব বা তাঁর পক্ষে কোনো প্রতিনিধি আদালতে হাজির হননি। পরে আদালত তাঁর অবস্থান জানতে চান। সে অনুযায়ী ৮ নভেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ থেকে প্রতিবেদন দেওয়া হয়। এরপরই আদালত তাঁকে হাজির করার নির্দেশ দেন।
এর আগে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামান সম্পর্কে হাবিবের দেওয়া বক্তব্য ইউটিউব ও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি প্রধান বিচারপতি বরাবর উপস্থাপন করা হলে তিনি এই বেঞ্চে পাঠান। শুনানি শেষে বিচারপতিকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করায় হাবিবকে গত ১৫ অক্টোবর তলব করেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে তাঁর বিরুদ্ধে কেন আদালত অবমাননার দায়ে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ আদালতের বিচারক হিসেবে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের সাজা দিয়েছিলেন মো. আখতারুজ্জামান। পরে তিনি ২০১৯ সালের ২০ অক্টোবর হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। আর ২০২১ সালের ১৮ অক্টোবর স্থায়ী হন তিনি।