আগামী বছরের হজযাত্রীদের আর বিমান টিকিট কেনার সময় অতিরিক্ত আবগারি শুল্ক গুনতে হবে না। হজের উদ্দেশে সৌদি আরবে গমনকারী যাত্রীদের টিকিটে আরোপিত আবগারি শুল্ক সম্পূর্ণ মওকুফ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
আজ মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) এ-সংক্রান্ত আদেশ জারি করে সংস্থাটি জানিয়েছে, সিদ্ধান্তটি অবিলম্বে কার্যকর হবে এবং আগামী বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।
বর্তমানে সৌদি আরবগামী প্রতিটি বিমান টিকিটে পাঁচ হাজার টাকা আবগারি শুল্ক দিতে হয়। হজযাত্রীদের সহায়তার অংশ হিসেবে এ খরচ তুলে নেওয়া হয়েছে। হজযাত্রীদের টিকিটে এই করছাড় প্রথম নয়, এর আগে একাধিকবার দিয়েছে এনবিআর। করোনাভাইরাস মহামারি ও পরবর্তী সময়ে বিমান ভাড়ার ঊর্ধ্বগতির সময়ও সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় শুল্ক ছাড় দেওয়া হয়েছিল।
এনবিআর জানায়, সাধারণ যাত্রীদের ক্ষেত্রে টিকিট বিক্রির সময়ই ট্রাভেল ট্যাক্স ও আবগারি শুল্ক সংগ্রহ করে সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হয়। তবে ধর্মীয় যাত্রীদের জন্য এই শুল্ক ছাড় দেওয়া সরকারের পূর্ববর্তী নীতিরই ধারাবাহিকতা।
এনবিআরের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, হজযাত্রীদের যাত্রা যেন ব্যয়বহুল না হয়, সে বিবেচনায় শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়েছে। এটি রাজস্ব প্রবাহে খুব বড় প্রভাব ফেলবে না। কিন্তু লাখো মানুষের ধর্মীয় পালন সহজ হবে।
তিনি বলেন, বিমান সংস্থাগুলোকেও নির্দেশ দেওয়া হবে যেন শুল্ক প্রত্যাহারের সুবিধাটি পরিষ্কারভাবে টিকিটের ইনভয়েসে প্রতিফলিত হয়। অনেক সময় এজেন্সিগুলো যাত্রীদের ঠিকভাবে তথ্য দেয় না।
তথ্য বলছে, ২০২৬ সালে বাংলাদেশ থেকে মোট ৭৮ হাজার ৫০০ জন হজ পালন করতে পারবেন। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী বছরের ২৬ মে পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি উভয় ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রীদের নিবন্ধন প্রক্রিয়া এরই মধ্যে শুরু হয়েছে।
সাবেক আমলা ও জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ ফিরোজ মিয়া বলেন, বিমান ভাড়া এখনো তুলনামূলক বেশি। তার ওপর আবগারি শুল্ক যুক্ত থাকলে হজযাত্রার খরচ আরও বাড়ত। সরকার ছাড় দেওয়ায় হজযাত্রীদের ব্যয় কিছুটা হলেও কমবে, যা অনেক পরিবারকে হজ পালনের সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করবে। তবে দীর্ঘ মেয়াদে এ ধরনের করনীতিকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে স্থির করা দরকার।