৫ আগস্টের পর সরকার পরিবর্তন হয়েছে ঠিকই; কিন্তু চিন্তার কোনো পরিবর্তন হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া।
আজ রোববার বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্র আয়োজিত সেমিনারে জ্যোতির্ময় বড়ুয়া এই মন্তব্য করেন।
সেমিনারে বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্রের লিখিত ধারণাপত্রে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের গত দুই বছরের ধর্ষণের তথ্য তুলে ধরা হয়। ২০২৪ সালে সারা দেশে ৪০১টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। আর চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ৪৪১টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে।
এ প্রসঙ্গে জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, ‘ধর্ষণের প্রকৃত ঘটনা আরও বেশি হবে। ধর্ষণ মামলায় আসামিদের মৃত্যুদণ্ড না দিয়ে বেশি কারাদণ্ডের বিধান রাখলে ভালো হতো।’
সেমিনারে জুলাই অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থী সুলতানা বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণ করে ছাত্রলীগের রোষানলে পড়ি। আমার একটি স্লোগান নিয়ে অনেক হয়রানির শিকার হতে হয়েছে। আমাকে প্রস্টিটিউট পর্যন্ত বলা হয়েছে।’
১৯৯৫ সালের ২৪ আগস্ট দিনাজপুরে ১৪ বছরের কিশোরী ইয়াসমিনকে একদল পুলিশ সদস্য দলবদ্ধ ধর্ষণের পর নির্মমভাবে খুন করেন। ওই ঘটনার পর থানার সামনে হাজার হাজার লোক জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন। বিক্ষোভ দমাকে পুলিশ গুলি চালায়। এতে সাতজন নিহত হন।
ইয়াসমিন হত্যাকাণ্ডের পর ২৪ আগস্টকে নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এরই অংশ হিসেবে আজ বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্র সেমিনারের আয়োজন করে।
সেমিনারের বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সামিনা লুৎফা নিত্রা, আইনজীবী আবেদা গুলরুখ, স্থপতি ফারহানা শারমিন ইমু, মিরনজিল্লা হরিজন কলোনি ভূমি রক্ষা কমিটির সদস্য পূজা রানী দাস, অটোচালক সাহিদা আক্তার ও গৃহিণী শিরিনা বেগম।
সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্রের সভাপতি সীমা দত্ত।
সেমিনারে লিখিত ধারণাপত্রে বলা হয়, রাজনীতিতে নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে নারীবান্ধব রাজনৈতিক পরিবেশ নির্মাণে দলগুলোর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। গণতান্ত্রিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক দেশ গড়তে নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের পথে সব বাধা দূর করতে হবে। আগামী সংসদ নির্বাচনে নারীদের ১০০ আসনে সরাসরি নির্বাচনের মধ্য দিয়ে এই যাত্রা শুরু করতে হবে।